দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের তালিকা প্রকাশের পরই বিজেপিতে বিড়ম্বনার শেষ নেই। খোদ কলকাতার দুই কেন্দ্রের প্রার্থী নিজেই জানিয়েছেন তাঁরা পদ্ম পতাকার হয়ে ভোট লড়বেন না। এমনকী বিজেপির সঙ্গে তাঁদের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও জানিয়েছেন। অন্যদিকে দেলা থেকে হেস্টিংস কার্যালয় প্রার্থী ঘিরে কর্মী-সমর্থকদের অসন্তোষ প্রকট হয়েছে। সামনে চলে এসেছে গলের আদি-নব্য নেতৃত্বের বিবাদ। যা সামলাতে রীতিমত হিমশিম অবস্থা গেরুয়া নেতাদের। এই অবস্থায় বিজেপির ভিতরকার সেই দ্বন্দ্বকেই আরেকটু উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আদি বিজেপি কর্মীদের অবস্থা তুলে ধরে সংবেদনা জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন মমমতা?
হুইলচেয়ারে বসেই পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা, পটাশপুর ও মেচেদায় দলীর প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার সারেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সভায় বিজেপিকে তুলোধনা করেন তিনি। বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় এসে রাজ্যের করুন অবস্থা হবে বলেও দাবি করেন মমতা। পূর্ব মেদিনীপুর মানে অধিকারী গড়। তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যেই বিজেপিতে। নন্দীগ্রামে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী হয়ে মমতাকে চ্য়ালঞ্জ জানাচ্ছেন তিনি। সম্পর্কে তাঁর বাবা শিশিরবাবুও ২৪ মার্চ মোদীর সভায় হাজির থাকবেন। ওই সভাতেই তাঁর পদ্ম পতাকা হাতে নেওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এই পরিস্থিতিতে দলত্যাগীদের নিসানা করেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁদের এদিনও 'মীরজাফর-গদ্দার'বলে তোপ দাগেন। তারপর কিছুটা আবেগ তাড়িত হয়ে বলেন, 'অনেক অন্ধ ভালোবাসা দিয়েছি ওদের। তার বিনিময়ে ওঁরা যা আমায় দিয়েছেন, তাতে বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। গদ্দারির বিষয়টা তখন বুঝতে পারিনি। এই বেইমানির আর জায়গা নেই।'
আরও পড়ুন- গদ্দাররা সব বিজেপি প্রার্থী-ঘরের শত্রুকে বুঝতে পারিনি: মমতা
পদ্ম বাহিনীকে আক্রমণ শানাতে গিয়ে প্রচারের এক ফাঁকে মমতা বলেন, 'সিপিএমের পুরনো হার্মাদ-আর তৃণমূলের থেকে কিছু চিটিংবাজ ওই দলে গিয়ে প্রার্থী। আর বিজেপির পুরনো কর্মীরা ঘরে বসে কাঁদছে।'
মমতা বলেন, 'বিজেপিতে আসলে কেউ থাকতে পারবেন না। কপালে একটা তিলক কেঠে, মুখে পানবাহার চিবোতে চিবোতে বলছে উসকো মারেঙ্গে। বাংলা বাংলাই থাকবে। লুঠ-দাঙ্গা-মানুষ খুন, বিজেপির তিনটি গুণ। নরেন্দ্র মোদীর মুখ দর্শন করতে চাই না।'
আরও পড়ুন- বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে থাকুক রাজ্য পুলিশও, কমিশনে দাবি তৃণমূলের
এদিন যেমন আদি গেরুয়া কর্মীদের আসন্তোষ উস্কে দিয়ে বিজেপিতে ভাঙনের চেষ্টা করেছেন মমতা, তেমনই দিন কয়েক আগে বিজেপি বিরোধী বাংপন্থী কর্মী-সমর্থকদেরও তৃণমূলকে ভোট দেওয়া আহ্বান জানান তিনি। বলেছিলেন, 'যেসব বামপন্থীরা বিজেপিকে ভোট নয় বলছেন তাঁদের অভিনন্দন জানিয়ে বলবো বামেরা ক্ষমতা দখল করতে পারবে না তাই তৃণমূলকে ভোটটা দিন।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন