US-Canada Merger: ' আমেরিকার ৫১ তম অঙ্গরাজ্য হোক কানাডা’, ট্রুডোর পদত্যাগের মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বড় বার্তা দিলেন আমেরিকার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার আগেই হবু মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ট্রাম্প বলেন, 'কানাডা যদি আমেরিকার সঙ্গে যুক্ত হয় তাহলে তাদের কোনও বাণিজ্য শুল্ক দিতে হবে না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্প লিখেছেন, 'যদি কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিশে যায়, সেখানে কোনো শুল্ক থাকবে না, কর অনেকটাই কমে যাবে এবং কানাডাকে ঘিরে থাকা রাশিয়ান ও চিনা জাহাজের হুঁশিয়ারি থেকে মিলবে মার্কিন সুরক্ষা। একসাথে, আমরা একটি মহান জাতি হয়ে উঠতে পারব!!!'
জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পরই বড়সড় বার্তা দিলেন আমেরিকার নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, যে কানাডার অধিকাংশ মানুষ চান আমেরিকার ৫১ অঙ্গরাজ্য হয়ে উঠুক কানাডা। বিরাট বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যে কানাডাকে টিকে থাকার জন্য প্রয়োজন মার্কিন সাহায্য। কানাডা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডাকে পুরোপুরি নিরাপত্তা দেবে। কমবে বাণিজ্য ঘাটতিও।
সোমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা করেন। ট্রুডোর পদত্যাগে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, কানাডার অনেক মানুষ চান কানাডা আমেরিকার ৫১তন অঙ্গরাজ্যে পরিণত হোক।
এর আগে গত নভেম্বর মাসে কানাডাকে একই প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ট্রুডোর সঙ্গে সাক্ষাতের পর সোশাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, কানাডা চাইলে আমেরিকার অঙ্গরাজ্য হতে পারে। যদিও ট্রুডো সে প্রস্তাব খারিজ করেছিলেন। কিছুদিন আগে 'নিউইয়ার বার্তা'য় ট্রুডো লিখেছিলেন 'কানাডা শক্তিশালী ও স্বাধীন'। নিশানা করেছিলেন ট্রাম্পকেই।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প তার 'মিশনে' বড় সাফল্য পেয়েছেন। জাস্টিন ট্রুডো ট্রাম্পের চাপের মুখে 'ব্যর্থ' প্রমাণিত হয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ট্রুডোর পদত্যাগের ঘোষণার পর ট্রাম্প তার 'বৃহত্তর আমেরিকা মিশনে'র পরবর্তী ধাপ শুরু করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার ছেলে এবং তার বিশেষ উপদেষ্টা ট্রাম্প জুনিয়রকে গ্রিনল্যান্ডে পাঠাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের বৃহত্তর আমেরিকার স্বপ্ন পূরণ হলে বিশ্ব কতটা বদলে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অসন্তোষের মুখে নির্বাচনের আগেই পদত্যাগ, বিশ্বকে কাঁপিয়ে বিরাট ঘোষণা জাস্টিন ট্রুডোর
আমেরিকার বর্তমান আয়তন ৯.৮ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। কানাডার আয়তন ৯.৯৮ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার এবং এটি বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। গ্রীনল্যান্ড হল বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ যার আয়তন ২.১৬ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার, যা ডেনমার্কের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। এই তিনটি দেশ একত্রিত হলে বৃহত্তর আমেরিকার আয়তন হবে ২১.৯৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার। যেটি হবে রাশিয়ার থেকে অনেক বড়।
২০২৩ সালে আমেরিকার জনসংখ্যা ৩৩১ মিলিয়ন, কানাডার জনসংখ্যা ৪০ মিলিয়ন এবং গ্রিনল্যান্ডের জনসংখ্যা হবে মাত্র ৫৬,০০০। এর মানে এই যে তিনটি দেশ একত্র হলে বৃহত্তর আমেরিকার জনসংখ্যা হবে ৩৭১ মিলিয়ন অর্থাৎ ৩৭ কোটির কিছু বেশি।
HMPV আতঙ্ক ! ফের ভারতে লক ডাউন? সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে #lockdown, কী জানালো ICMR?
কানাডা বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেলের ভান্ডার। মজুদ রয়েছে ১৬৮ বিলিয়ন ব্যারেল। এ ছাড়া ইউরেনিয়াম উৎপাদনে শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে কানাডা। কানাডাতেও প্রচুর জলসম্পদ, কাঠ এবং বিভিন্ন খনিজ রয়েছে। গ্রিনল্যান্ডের কথা বললে, সেখানে বিরল খনিজ পদার্থের মজুদ রয়েছে। তেল এবং গ্যাসও পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। ফলে বিশাল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদও ট্রাম্পের লক্ষ্য।
পানামা খালও ট্রাম্পের টার্গেট। প্রতি বছর প্রায় ১৩০০০ জাহাজ এই অঞ্চল দিয়ে যাতায়াত করে। যা বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৫ শতাংশ। পানামা খাল থেকে বার্ষিক আয় ৩ বিলিয়ন ডলার। ফলে বৃহত্তর আমেরিকার অর্থনৈতিক শক্তি বাড়বে।
আমেরিকার বর্তমান জিডিপি ২৯.০১ ট্রিলিয়ন ডলার, যেখানে কানাডার জিডিপি ২.১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। গ্রিনল্যান্ডের জিডিপি ৩.৩ বিলিয়ন ডলার। তিনটির দেশের একীকরণের ফলে,বৃহত্তর আমেরিকা হবে বিশ্বের বৃহত্তম 'অর্থনৈতিক ব্লক', ৩৪.৪৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক শক্তি থাকবে ট্রাম্পের হাতে। ২০২৩ সালে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বাজেট ছিল ৮৮৬ বিলিয়ন ডলার। নতুন এলাকা সংযোজনের ফলে প্রতিরক্ষা বাজেট ১০-১৫ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে পদত্যাগে ট্রুডোর রাজনৈতিক ভবিষ্যত আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মধ্যে, কানাডা কি সত্যিই আমেরিকার ৫১ তম অঙ্গ রাজ্য হয়ে উঠতে পারে? ট্রুডোর পদত্যাগের ফলে কানাডায় এ বছর নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়েছে। এর আগে ট্রুডো পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেছিলেন। কিন্তু দল তাকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেয়। পদত্যাগ না করলে তাকে পদ থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
ট্রুডোর পদত্যাগের পর, লিবারেল পার্টি এখন প্রধানমন্ত্রীর পদে অন্তর্বর্তীকালীন নেতা নির্বাচন করবে। এর পাশাপাশি দল একটি বিশেষ সম্মেলনেরও আয়োজন করবে, তবে এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত অনেক সময় লাগে। তার আগে নির্বাচন হলে দলকে এমন একজন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করতে হবে যিনি দলীয় সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন না। যা কানাডার ইতিহাসে আগে কখনও হয়নি।