দিল্লিকে টপকে যাচ্ছে কলকাতা, কোথা থেকে আসছে এই দূষণ?

"কলকাতার বাতাসে এখন ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম-১০) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম-২.৫) মাত্রা অনেক বেশি। কালীপুজো, দীপাবলি, ছটে যে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে, তার রেশও বাতাসে রয়ে গেছে।"

"কলকাতার বাতাসে এখন ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম-১০) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম-২.৫) মাত্রা অনেক বেশি। কালীপুজো, দীপাবলি, ছটে যে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে, তার রেশও বাতাসে রয়ে গেছে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ধুলিকণায় ভরা বাতাস

দূষণ দানব গ্রাস করছে শহর কলকাতাকে। যা অজান্তেই আপনার ফুসফুসের অন্দরমহলে সাম্রাজ্য বিস্তার করছে। কারা এই দূষণ দানবকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? কোথা থেকে আমদানি হয়েছে এত ধোঁয়াশার? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আঙুল তুলল শহর জুড়ে আবাসন সহ বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দিকে। পাশাপাশি একইভাবে দায়ী পুরোনো গাড়ি, কাঠ কয়লা পোড়ানোর ধোঁয়া, ও গাছহীন শহর। সম্প্রতি জানা যাচ্ছে, কলকাতার বায়ুদূষণের গুণমান সূচক হারিয়ে দিয়েছে দিল্লিকে।

Advertisment

আরও পড়ুন: ভারতে ৫ বছরের নীচে প্রায় ৯৮ শতাংশ শিশুই বায়ু দূষণের শিকার: WHO-এর রিপোর্ট

কিন্তু কেন এমন বেহাল অবস্থা বাতাসের? সে প্রশ্নে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রধান অনিরুদ্ধ মুখোপাধ্যায় বলেন, "শহর জুড়ে নির্মাণ কাজ চলছে, যত দিন যাচ্ছে এই ভাঙা গড়ার খেলা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এর থেকে অতিমাত্রীয় ধূলিকণার সৃষ্টি হয়। এই ভাসমান ধুলিকণা ভরপুর বাতাসে। এদিকে এই সময় যেহেতু তাপমাত্রা কম থাকে, তাই বাতাসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। পাশাপাশি মেঘাচ্ছন্ন আকাশ ও বায়ুর গতি কম থাকায় ধোঁয়াশার প্রকোপ বেড়ে যায়''।

Advertisment

অনিরুদ্ধবাবু আরও বলেন, ''কলকাতার বাতাসে এখন ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম-১০) ও অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণার (পিএম-২.৫) মাত্রা অনেক বেশি। কালীপুজো, দীপাবলি, ছটে যে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে, তার রেশও বাতাসে রয়ে গেছে। রাজ্য সরকারের উচিত এই ধূলিকণার মান শহরের বাতাস থেকে কমিয়ে ফেলার জন্য যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া। শহরে নির্মাণ কাজ যদি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়, তাহলে অনেকটা প্রতিকার করা যাবে। পাশাপাশি শহরে পুরোনো গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া উচিত। চওড়া পাতার গাছ লাগানো উচিত।"

আরও পড়ুন: খলনায়ক সেই বায়ু দূষণ, ভারতীয়দের গড় আয়ু কমছে ২.৬ বছর

পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, "শহরে গাড়ি আস্তে চলে, কারণ রাস্তার পরিমাপ অনেক কম। যার ফলে গাড়ি থেকে বেরোনো ধোঁয়ার মাত্রাও থাকে বেশি। পুরোনো গাড়ি শহরে ঢুকলে তা সাত দিনের বেশি শহরে থাকতে দেওয়া উচিত নয়। এই ব্যাপারে বাস্তবে নজরদারি করার কোনও পরিকাঠামোই নেই। শহর জুড়ে যে মেট্রো রেলের কাজ হচ্ছে, তা থেকে বিপুল পরিমাণে ভাসমান পিএম-১০ ও পিএম-২.৫ বেড়েছে। এছাড়া আবাসন নির্মাণের কাজ তো রয়েছেই। অন্যদিকে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বাতাস ভারী হতে শুরু করে, এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবও রয়েছে। সব মিলিয়ে দিল্লিকে টপকে গেছে কলকাতার দূষণ।"