এনআরএসকাণ্ডে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল পুলিশ। ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা (৩০৭) যোগ করল কলকাতা পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ধারা যোগ করতে চেয়ে শিয়ালদা আদালতে আর্জি জানায় পুলিশ। কলকাতা পুলিশের সেই আর্জিতে সিলমোহর দেয় আদালত। শিয়ালদহ আদালতের অনুমতি মেলার পরই বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্ত ৫ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা যোগ করে পুলিশ। উল্লেখ্য, নীলরতন সরকার হাসপাতালে দুই জুনিয়র চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ধারা যোগ করার দাবি করে আসছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অবশেষে সেই দাবি পূরণ হল।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৩০৭ ধারা যোগ হওয়ায় অভিযুক্তদের ফের গ্রেফতার করা হতে পারে। এ প্রসঙ্গে এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিক মঙ্গলবার বলেন, ‘‘আইন অনুযায়ী কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করার ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ রয়েছে। সেকারণেই আমরা আর্জি জানিয়েছিলাম’’। এনআরএসের জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়কে মারধরের ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান ইতিমধ্যেই রেকর্ড করেছে পুলিশ। তারপরই আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার ধারা যোগ করার আবেদন করে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন: এনআরএসকাণ্ডে জামিন পাঁচ অভিযুক্তের
এ প্রসঙ্গে এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘অনেক আগে এটা করতে পারত। পরিবহ তাঁর জীবনের জন্য লড়াই করেছে। এই ধারা যোগ করতে কেন এত সময় লাগল? যাই হোক, আশা করছি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে’’।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুলাই এনআরএসকাণ্ডে ধৃত মহম্মদ শেহনওয়াজ, আদিল হাদুন, আদিল শেখ, মহম্মদ ইউসুফ ও মহম্মদ বাদলের জামিন মঞ্জুর করে শিয়ালদা আদালত। ২ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করা হয়। অভিযুক্তদের জামিন মেলার খবরে ফের ক্ষোভ ছড়ায় জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে। এনআরএস আন্দোলন মিটমাট করার সময় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জুনিয়র ডাক্তারদের আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অভিযুক্তদের জামিন মেলায় এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তারপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। উল্লেখ্য, ধৃত ৫ জনের বিরুদ্ধে আগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩২৬ ও ৩২৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এনআরএসকাণ্ড; ১৫দিন সময় বেঁধে দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের বার্তা জুনিয়র ডাক্তারদের
কী হয়েছিল এনআরএসে?
গত ১০ জুন রাতে এনআরএসে মৃত্যু হয় ৭৪ বছর বয়সী মহম্মদ সঈদের। চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর চড়াও হন নিহতের পরিজনরা। মারধরে গুরুতর জখম হন জুনিয়র ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও যশ টেকওয়ানি। ডাক্তার নিগ্রহের অভিযোগ ১১ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল পাঁচজনকে। ডাক্তার নিগ্রহের প্রতিবাদে এক সপ্তাহ আন্দোলন চলার পর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেড় ঘণ্টার বৈঠকে বসেন ধর্মঘটী ডাক্তাররা। যে বৈঠকে জুনিয়ার ডাক্তারদের তরফে একাধিকবার তুলে ধরা হয়েছে নিরাপত্তার আবেদন। তারপর উঠে আসে এক এক করে ১২ দফার দাবি, যেখানে অভিযুক্তদের যথাযথ শাস্তি ও তদন্ত চেয়েছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সেদিন সব ব্যাপারেই বরাভয় দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Read the full story in English