Ambubachi Tithi 2025: অম্বুবাচী, এই শব্দটার সঙ্গে হিন্দুরা ছোট থেকেই পরিচিত। এই সময়টাকে হিন্দুধর্মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মানা হয়। যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে পৌরাণিক কাহিনি। জড়িয়ে রয়েছে ধর্মীয় উপাচারও।
অম্বুবাচী ২০২৫: ধর্ম, সংস্কৃতি ও কৃষির মেলবন্ধনে এক অনন্য উৎসব
২২ জুন, ২০২৫। বাংলা ক্যালেন্ডারে ৭ আষাঢ়। এই দিন থেকে শুরু হচ্ছে হিন্দু ধর্মের এক বিশেষ বার্ষিক উৎসব— অম্বুবাচী। একে শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে ভুল হবে। এর পিছনে আছে প্রাচীন কৃষিভিত্তিক সংস্কৃতি, নারীর ঋতুচক্রের সঙ্গে ধরিত্রী মাতার মিল এবং গা ছমছমে পৌরাণিক কাহিনী।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন একটি করে কলা খেলে কী হয়? জানলে এখনই খাওয়া শুরু করবেন!
অম্বুবাচী কী এবং কেন পালন করা হয়?
সংস্কৃত শব্দ 'অম্বুবাচী' অর্থাৎ 'জলবতী', অর্থাৎ যার দেহে সিক্ততা এসেছে। হিন্দু শাস্ত্রে পৃথিবীকে মা রূপে কল্পনা করা হয়, এবং এই তিনদিন ধরিত্রী মায়ের ঋতুকাল বলে গণ্য করা হয়। যেমন নারীরা রজঃস্বলা অবস্থায় নির্দিষ্ট কিছু আচার পালন করেন না, ঠিক তেমনই এই সময় পৃথিবীকেও ‘অশুচি’ বলে মানা হয়।
আরও পড়ুন- মেকআপ রিমুভার কিনে খালি করবেন না পকেট! ঘরে বানানোর সহজ টিপস দেখে নিন
কামাখ্যা মন্দির এবং অম্বুবাচীর যোগসূত্র
অসমের গুয়াহাটি শহরের কামাখ্যা মন্দির হল অম্বুবাচী উৎসবের মূল কেন্দ্র। পৌরাণিক কাহিনী অনুযায়ী সতীর যোনি এখানে পতিত হয়েছিল, তাই এখানে দেবী ‘শক্তি’ রূপে পূজা পান। এই তিন দিন কামাখ্যা মন্দিরের দরজা বন্ধ রাখা হয় এবং চতুর্থ দিনে হয় অম্বুবাচী নিবৃত্তি—দেবীর স্নান, পূজা ও দর্শনের দিন।
আরও পড়ুন- দিনে ক’বার গ্রিন টি পান করলে দ্রুত ঝরবে মেদ, পুষ্টিবিদ কী বলছেন জেনে নিন
কীভাবে পালন করা হয় অম্বুবাচী?
এই সময়ে—
-
মন্দিরে ঢোকা নিষিদ্ধ
-
কোনও মাঙ্গলিক কাজ (বিয়ে, গৃহপ্রবেশ) হয় না
-
রান্না করা নিষেধ, আগেই খাবার তৈরি করে রাখতে হয়
-
সাধু, সন্ন্যাসী, বিধবা নারীরা নিরামিষ আহার গ্রহণ করেন
-
চাষাবাদ বন্ধ থাকে, জমিকে বিশ্রাম দেওয়া হয়
এই রীতির পিছনে কৃষিজ কারণও আছে। বর্ষার সূচনায় যখন মাটি ভিজে ওঠে, তখন তাকে উর্বরতা ফেরানোর সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই সময়ে কোনও রকম মাটির কাজ বা বীজ বপন করা হয় না।
আরও পড়ুন- এক চা চামচ তেলের সঙ্গে এই দুই জিনিস মেশালেই মশা উধাও, রইল ঘরোয়া টোটকা
অম্বুবাচী রক্তবস্ত্র: এক অলৌকিক বিশ্বাস
মন্দিরের গর্ভগৃহ থেকে তিনদিন ধরে একপ্রকার লাল তরল বের হয়। ভক্তরা বিশ্বাস করেন সেটি দেবীর রজঃস্রাব। এই তরলে ভেজানো কাপড় ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় যাকে বলা হয় রক্তবস্ত্র। ভক্তরা এটি গলায় বা হাতে ধারণ করে মনে করেন এটি মনোকামনা পূর্ণ করবে।
আরও পড়ুন- দিনে ক’বার গ্রিন টি পান করলে দ্রুত ঝরবে মেদ, পুষ্টিবিদ কী বলছেন জেনে নিন
শুধুই কি বাঙালি সংস্কৃতি?
না। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য—অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার-সহ অনেক জায়গায় অম্বুবাচী পালিত হয়। কিছু জায়গায় একে রজোৎসব বা অমাবতি বলেও ডাকা হয়।
আরও পড়ুন- এক চা চামচ তেলের সঙ্গে এই দুই জিনিস মেশালেই মশা উধাও, রইল ঘরোয়া টোটকা
অম্বুবাচী ২০২৫ দিনক্ষণ
-
অম্বুবাচী প্রবৃত্তি: ২২ জুন, রবিবার, দুপুর ২:৫৬ মিনিট
-
অম্বুবাচী নিবৃত্তি: ২৫ জুন, বুধবার, রাত ৩:১৯ মিনিট
এই বিশেষ উৎসব কেবলমাত্র একটি ধর্মীয় রীতি নয়, এটি নারীর সম্মান, প্রকৃতির উর্বরতা ও কৃষি চক্রের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের একটি সামাজিক বার্তা।