Hundreds of Eyes Animals: আমরা প্রায়ই ধরে নিই, আমাদের দুটি চোখ আছে। তাহলে, সবারই হয়তো দুটি চোখই থাকবে। কিন্তু, বাস্তবটা একেবারেই আলাদা। পৃথিবীর বহু প্রাণীর দৃষ্টিশক্তি আমাদের চেনা সীমার বাইরে। তারা একবারে একাধিক কোণ থেকে দেখে। আলো-ছায়া চিনে ফেলে সহজে। এমনকী, এমন কিছু প্রাণীও রয়েছে, যাদের সারা শরীরেই ছড়িয়ে রয়েছে চোখ!
টিকটিকির মাথায় তৃতীয় চোখ!
সরীসৃপদের মধ্যে টিকটিকি, ব্যাঙ ও হাঙরের মত কিছু প্রাণীর মাথার ওপরে একটি 'প্যারিয়েটাল চোখ' থাকে। এটি দেখতে সাধারণ চোখের মত নয়, বরং একটি আলো সংবেদনশীল অঙ্গ বলা যায়। নিউজিল্যান্ডের টুয়াটারা টিকটিকি এই বিষয়ে অনন্য। বাচ্চা অবস্থায় এদের মাথার ওপর ছোট্ট একটি তৃতীয় চোখ দেখা যায়, যেটি বড় হতে হতে চামড়ার নীচে ঢেকে যায়। অবশ্য এই চোখ ছবি দেখতে পারে না, কিন্তু দিন-রাত্রির পার্থক্য, ঋতু পরিবর্তন এবং শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন- লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য এড়িয়ে চলুন এই ৩ খাবার, নাম শুনলে অবাক হয়ে যাবেন!
আট চোখবিশিষ্ট মাকড়সা
মাকড়সা পৃথিবীর অন্যতম বিস্ময়কর দৃষ্টিশক্তির অধিকারী প্রাণী। এই প্রাণীর বেশিরভাগ প্রজাতির আটটি চোখ থাকে। এর সবগুলো চোখের কাজ এক নয়। কিছু চোখ চলাফেরা করতে সাহায্য করে, কিছু গভীরতা বুঝতে পারে, আবার কিছু রাতে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। লাফানো মাকড়সাগুলি আশ্চর্যজনকভাবে শিকার লক্ষ্য করে লাফ দিয়ে শিকার ধরে, কারণ তাদের চোখ এতটাই সূক্ষ্মভাবে কাজ করে যে তারা শিকারের ক্ষুদ্রতম নড়াচড়াও ধরতে পারে।
আরও পড়ুন- রান্নাঘরের ভেষজ, তা দিয়েই ঘাড়ের কালো দাগ দূর করুন চিরতরে!
হর্সশু কাঁকড়া: লেজ থেকে চোখ!
হর্সশু কাঁকড়া নামটি শুনলে মনে হবে কোনও সাধারণ জলজ প্রাণী, কিন্তু এই প্রাগৈতিহাসিক প্রজাতির শরীরে থাকে ১০টি চোখ। এগুলি কেবল মাথার ওপর নয়, পিঠ এবং লেজে পর্যন্ত ছড়িয়ে থাকে। এদের চোখ আলো ও ছায়া বোঝে, এই কাঁকড়াকে গভীর সমুদ্রের অন্ধকারে চলতে সহায়তা করে এমনকী, সঙ্গী খুঁজে পেতেও সাহায্য করে।
আরও পড়ুন- যদি আপনার ঘরে এই জিনিসগুলো থাকে, ঘর ভরবে সুবাসে!
বক্স জেলিফিশ: চোখ দিয়ে ভরা শরীর
বক্স জেলিফিশ 'সামুদ্রিক বিপদ' হিসেবে পরিচিত। এই প্রাণীর শরীরে ২৪টি চোখ থাকে! এদের চোখের গুচ্ছ রয়েছে। কিছু চোখে আসলেই, এরা সেসব দেখতে পায়। বক্স জেলিফিশ এমনভাবে চোখটাকে সাজিয়ে রাখে যেখানে সাঁতার কাটতে কাটতে নিজের শরীরের দিকটাও দেখতে পায়। এদের একটি অংশ স্থির থাকে, কিন্তু, চোখ সচল থাকে। যেন শরীরই হয়ে ওঠে একটি ভাসমান ক্যামেরা।
আরও পড়ুন- শুধু এই ১টি কায়দা, একমুহূর্তে আপনার পাকা চুল, দাড়ি হয়ে যাবে কালো!
চিটন: খোলসজুড়ে শত শত চোখ!
চিটন নামে সামুদ্রিক মোলাস্কের খোলসের মধ্যে লুকিয়ে থাকে শত শত চোখ! এদের চোখ অত্যন্ত ক্ষুদ্র, কিন্তু অসাধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন। যদিও এরা স্পষ্ট ছবি তৈরি করতে পারে না, তবে আলো ও ছায়ার পার্থক্য বুঝে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে পারে। এটি প্রমাণ করে, জটিল মস্তিষ্ক না থাকলেও চোখ যথেষ্ট বুদ্ধিমান হওয়ার ক্ষমতা রাখে।
ট্রাইপস: চোখের ডাইনোসর
‘ডাইনোসর চিংড়ি’ নামে পরিচিত এই ক্ষুদ্র ক্রাস্টেসিয়ানের রয়েছে দুটি বড় চোখ এবং একটি অতিরিক্ত তৃতীয় চোখ। এই তৃতীয় চোখটি আলো-ছায়ার পার্থক্য বুঝে দেহের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে।
ম্যান্টিস চিংড়ি
ম্যান্টিস চিংড়ির চোখে থাকে ১২ থেকে ১৬টি আলাদা রং শনাক্তকারী রিসেপ্টর, যেখানে আমাদের চোখে থাকে মাত্র তিনটি। তারা অতিবেগুনি রশ্মি, মেরুকৃত আলো এমনকী একই বস্তু তিনটি আলাদা কোণ থেকে একই সঙ্গে দেখতে পায়। এদের প্রতিটি চোখে তিনটি সেকশন থাকে, ফলে এক একটি চোখই তিনটি আলাদা চোখের কাজ করে!