/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/25/neil-armstrong-2025-08-25-02-24-11.jpg)
Neil Armstrong: চাঁদে প্রথম মানুষ নীল আর্মস্ট্রং।
Neil Armstrong's Space Mission: আজ ২৫ আগস্ট, নীল আর্মস্ট্রং-এর মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১২ সালে ৮২ বছর বয়সে তিনি মারা গিয়েছেন। তবে তাঁর নাম ইতিহাসে অমর হয়ে আছে কারণ তিনি ছিলেন চাঁদে প্রথম পা রাখা মানুষ।
কৈশোরে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন
১৯৩০ সালের ৫ আগস্ট, যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের ওয়াপাকোনেটায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন নীল অ্যালডেন আর্মস্ট্রং। ছোটবেলা থেকেই তিনি বিমান আর মহাকাশের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। কৈশোরে উড়োজাহাজ চালানোর প্রশিক্ষণ নেন এবং মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্স পান।
আরও পড়ুন- দুর্দান্ত কাজের! এই ভেষজগুলোই নিরাপদ রাখবে আপনার লিভার
১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি মার্কিন নৌবাহিনীতে একজন নৌ-বিমানচালক (Naval Aviator) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোরিয়ান যুদ্ধে তিনি F9F-2 জেট ফাইটারে চেপে ৭৮টি যুদ্ধাভিযান করেছিলেন। সাহসিকতার জন্য তিনি মার্কিন বিমানবাহিনীর থেকে দুটি গোল্ডেন স্টার পুরস্কার পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- অনুষ্ঠান বাড়ির মত দুধ চিংড়ি বানান, খেলেই মন ভরবে সকলের!
যুদ্ধ শেষে তিনি পড়াশোনা চালিয়ে যান এবং ১৯৫৫ সালে পারডু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক হন। পরবর্তীতে সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও মহাকাশ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পান। ১৯৫৫ সালে তিনি জাতীয় বিমানচালক কমিটি (NACA)-তে যোগ দেন, যা পরে NASA হয়ে ওঠে। প্রথমে লুইস ফ্লাইট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে কাজ করেন এবং তারপর ক্যালিফোর্নিয়ার এডওয়ার্ডস হাই-স্পিড ফ্লাইট স্টেশনে কাজে যোগ দেন।
আরও পড়ুন- ২৬ নাকি ২৭, কবে এবারের গণেশ চতুর্থী, জানুন সঠিক সময়
সেখানে তিনি বিখ্যাত X-15 হাইপারসনিক রকেট প্লেন প্রকল্পে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। তিনি রকেট বিমান ৭ বার চালিয়েছিলেন এবং সর্বোচ্চ ২,০৭,৫০০ ফুট উচ্চতায় বিমান নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এ সময় তিনি F-100, F-101, F-104, X-1B, X-5 সহ নানা পরীক্ষামূলক বিমানও চালিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- এই ৪ রাশির ওপর সর্বদা থাকে গণেশের কৃপা, আপনি কি সেই দলে?
১৯৬২ সালে নাসা তাকে দ্বিতীয় দফার মহাকাশচারী দলে অন্তর্ভুক্ত করে। প্রথম মহাকাশ মিশন ছিল Gemini 8, যেখানে তিনি সহকর্মী ডেভিড স্কটের সঙ্গে ইতিহাসের প্রথম কক্ষপথ ডকিং সফল করেন। ১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই মানব ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচিত হয়। নীল আর্মস্ট্রং ছিলেন Apollo 11 মিশনের কমান্ডার। তাঁর নেতৃত্বে লুনার মডিউল 'Eagle' চাঁদের মাটিতে নামে। চাঁদের মাটিতে নামার পর তিনি বলেছিলেন, 'এটা মানুষের জন্য ছোট একটি পদক্ষেপ। আর, মানবজাতির জন্য এক বিশাল লাফ।'
তিনি প্রায় ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিট চাঁদের মাটিতে হেঁটেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এডুইন বাজ অলড্রিন, আর মাইকেল কলিন্স। তাঁরা কমান্ড মডিউলে চাঁদের কক্ষপথে অবস্থান করছিলেন। ১৯৭১ সালে নাসা ছাড়ার পর তিনি ওহাইও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হন এবং শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন শিল্প এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বোর্ডে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। নীল আর্মস্ট্রং ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী মানুষ। কখনও খ্যাতির আলোয় নিজেকে মেলে ধরেননি। বরং গবেষণা, শিক্ষা ও প্রযুক্তি উন্নয়নেই নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
নীল আর্মস্ট্রং জীবদ্দশায় অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মান পেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ১৯৬৯ সালে Presidential Medal of Freedom, ১৯৭৮ সালে Congressional Space Medal of Honor, Collier Trophy এবং Goddard Memorial Trophy, ১৭টি দেশ থেকে বিশেষ সম্মান পেয়েছিলেন।
২০১২ সালের ২৫ আগস্ট হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের জটিলতায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর নাসার ড্রাইডেন ফ্লাইট রিসার্চ সেন্টারের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়েছে, Neil A. Armstrong Flight Research Center। মৃত্যুর পরে আজও তিনি মানবজাতির সাহস, বিজ্ঞান ও স্বপ্নের প্রতীক হয়ে আছেন।