Back Pain Relief: আজকের ব্যস্ত জীবনযাপনে পিঠ বা কোমরের ব্যথা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অফিসে দীর্ঘ সময় কমপিউটারের সামনে বসা, মোবাইল ব্যবহার, কিংবা এক জায়গায় দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকা— সব মিলিয়ে আমাদের মেরুদণ্ড এবং পিঠের পেশীতে অতিরিক্ত চাপ পড়ে। একসময় এই ব্যথা শুধু বয়স্কদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু, এখন ১৮–২৫ বছর বয়সিদের মধ্যেও পিঠে ব্যথার সমস্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
পিঠে ব্যথার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ভুলভাবে বসা বা দাঁড়ানো, দীর্ঘ সময় একই ভঙ্গিতে থাকা, শারীরিক ব্যায়ামের অভাব, ভারী ওজন তোলা, হঠাৎ ঝুঁকে কাজ করা। তবে সুখবর হল, কিছু সহজ অভ্যাস পরিবর্তন এবং সচেতনতার মাধ্যমে এই সমস্যাকে অনেকটাই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন- এই সেই ৫টি সেরা বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে পড়লেই চাকরি নিশ্চিত
১. সঠিক বসার ভঙ্গি বজায় রাখা
পিঠে ব্যথা প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হল সঠিকভাবে বসতে শেখা। অনেকেই চেয়ারে বসার সময় মেরুদণ্ড বাঁকিয়ে বসেন। যা পিঠের পেশী এবং হাড়ের ওপর চাপ ফেলে। সবসময় চেয়ারে আরাম করে বসুন এবং নিতম্ব পুরো সিটের সঙ্গে লাগিয়ে রাখুন। মেরুদণ্ড সোজা রাখতে পিঠের নিচে একটি ছোট বালিশ ব্যবহার করতে পারেন। পা সম্পূর্ণভাবে মেঝেতে রাখুন এবং হাঁটু ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকানো রাখুন।
আরও পড়ুন- উৎসবের মাস, এই কায়দায় তৈরি করুন মালপোয়া, লেগে থাকবে মুখে!
২. মেঝেতে বসার অভ্যাস গড়ে তোলা
মেঝেতে বসা আমাদের শরীরের জন্য ভালো। মেঝেতে বসে খাওয়া বা বই পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। বসার সময় একটি পাতলা চাদর নীচে রাখলে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ কমবে। এই ভঙ্গিতে বসলে পিঠের পেশী স্বাভাবিকভাবে প্রসারিত হবে। যা ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন- বাড়িতে কি ইঁদুরের ভয়ংকর উৎপাত? না মেরে এই কায়দায় তাড়ান, ধারে-কাছে ঘেঁষবে না!
৩. নিয়মিত মেরুদণ্ডের ব্যায়াম করা
পিঠের পেশীকে শক্তিশালী এবং নমনীয় রাখতে ব্যায়াম অপরিহার্য। প্রতিদিন অন্তত ১০–১৫ মিনিট মেরুদণ্ডের ব্যায়াম করুন। ক্যাট-কাউ স্ট্রেচ (Cat-Cow Stretch) মেরুদণ্ডের নমনীয়তা বাড়ায়। চাইল্ড'স পোজ (Child’s Pose) পিঠের পেশী শিথিল করে। ব্রিজ এক্সারসাইজ (Bridge Exercise) কোমরের পেশী শক্তিশালী করে।
আরও পড়ুন- থাইরয়েড রোগ নিয়ন্ত্রণে এই ৪ খাবার খেলে মিলবে দারুণ ফল, জানেন না ৯০% মানুষ
৪. ভারী ওজন তোলার সময় সতর্কতা
ভারী কিছু তুলতে হলে পিঠ বাঁকাবেন না। সবসময় হাঁটু ভেঙে ভারী কিছু তুলুন। ভারী জিনিসটি শরীরের কাছে রাখুন যাতে পিঠে চাপ না পড়ে।
৫. চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া
যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খুব তীব্র হয়, তা উপেক্ষা করবেন না। একজন অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।প্রয়োজনে এমআরআই স্ক্যান করিয়ে সঠিক কারণ নির্ণয় করুন। ডাক্তারের নির্দেশিত থেরাপি বা চিকিৎসা অবশ্যই মেনে চলুন।
পিঠ ব্যথা প্রতিরোধে করণীয়
দীর্ঘ সময় এক জায়গায় বসে থাকা এড়িয়ে চলুন। প্রতি ৩০ মিনিট পরপর দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ হাঁটুন। মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার করার সময় চোখ এবং স্ক্রিনের উচ্চতা সমান রাখুন। পর্যাপ্ত জলপান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খান। পিঠ ব্যথা শুধু শারীরিক অস্বস্তি নয়, এটি আপনার দৈনন্দিন জীবন এবং কর্মক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। কিন্তু কিছু সচেতনতা, সঠিক অভ্যাস এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি সহজেই একটি সুস্থ এবং ব্যথামুক্ত জীবনযাপন করতে পারেন।