/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/22/bankuras-service-kali-2025-10-22-03-13-08.jpg)
Bankura’s Service Kali: বাঁকুড়ার সার্ভিস কালী।
Bankura’s Service Kali: বেকারত্বের অন্ধকারে যখন দেশের বহু তরুণ দিশেহারা, তখনও বাঁকুড়ার সোনামুখীতে এক অলৌকিক বিশ্বাস বেঁচে আছে আজও। সেখানে মানুষ বিশ্বাস করেন— 'সার্ভিস কালী'র কাছে মানত করলে চাকরি পাওয়া যায়! তাই প্রতিবছর দীপান্বিতা অমাবস্যায় এই দেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে বাঁকুড়াবাসী ও বাইরের রাজ্যের বহু ভক্ত।
সার্ভিস কালী পুজোর সূচনা
প্রায় ৮৪ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। সেই সময় সোনামুখী পুরসভার ধর্মতলায় কয়েকজন পরিবহণ ব্যবসায়ী বাস সার্ভিস চালু করতে পারছিলেন না। বারবার আবেদন করেও রুট পারমিট পাচ্ছিলেন না তাঁরা। অবশেষে দেবী কালীর কাছে এক টাকা বা ষোলো আনা মানত করেন তাঁরা। অদ্ভুতভাবে মানতের পরই মেলে পারমিট, আর ব্যবসা শুরু হয় নির্বিঘ্নে। এর পর থেকেই এই দেবী পরিচিত হন 'সার্ভিস কালী' নামে। আবার কেউ কেউ বলেন, এই দেবীকে আগে বলা হত ষোলো আনার কালী। কর্মসংস্থানের জন্য দেবীর কাছে ষোলো আনা মানত করতে হত।
আরও পড়ুন- পঞ্জিকায় ২২ না ২৩ অক্টোবর, ভাইফোঁটা কবে? ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময়ই বা কখন?
যুগের পর যুগ ধরে চলছে এই বিশ্বাস যে, মা সার্ভিস কালী মানত রাখলে চাকরি দেন। শুধু বাঁকুড়া নয়, মুম্বই, দিল্লি, এমনকী দক্ষিণ ভারতের রাজ্য থেকেও ভক্তরা আসেন মানত করতে। কেউ সরকারি চাকরি চেয়ে, কেউ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আশা নিয়ে মায়ের দ্বারে আসেন। যথারীতি মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। কারও হাতে থাকে ফুল, কেউ আবার মায়ের পায়ে রাখেন নতুন রেজুমে বা নিয়োগপত্রের কপি। ভক্তরা বলেন, 'মা কারও আশা ভঙ্গ করেন না।' সোনামুখীর এই মন্দিরে দেবী কালী চতুর্ভুজা রূপে বিরাজমান। দেবীর বর্ণ কালো, পদতলে শিব বিরাজ করেন। দেবীর সঙ্গে ডাকিনী, যোগিনীও উপস্থিত। আগে দেবী তেমন গয়না পরতেন না, কিন্তু এখন ভক্তদের দেওয়া গয়নাতে পরিপূর্ণ থাকে দেবীর রূপ।
আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় ভাইয়ের পাতে কী দেবেন? দেখুন কলকাতার এই বিশেষ খাবার
প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে সোনামুখীতে তিনদিনব্যাপী উৎসব হয়। কালীপুজো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলো ও বাজির ঝলকে মুখরিত হয়ে ওঠে সোনামুখী শহর। শেষ দিনে হয় বিগ্রহের ভাসান। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশ নেয় শত শত মণ্ডপের প্রতিমা। আলো, ফুলঝুরি, বাজি ও ভক্তির মেলবন্ধনে এই ভাসান পর্ব ঘিরে তৈরি হয় এক অনন্য দৃশ্য।
আরও পড়ুন- বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তের কাছে শক্তিপীঠ, দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা ছুটে যান কল্যাণেশ্বরীর আশ্রয়ে
আজকের চাকরির সংকটে যখন তরুণ সমাজ হতাশ, তখন 'সার্ভিস কালী' হয়ে উঠেছেন এক আশার প্রতীক। এখানে কেবল ভক্তি নয়, মানুষের আশা, কর্মস্পৃহা এবং আত্মবিশ্বাস এক নতুন রূপ পায়। সোনামুখীর মন্দিরে আজও কেউ নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে দেবীর কাছে ধন্যবাদ জানাতে আসেন। মুখে স্বীকারও করে নেন, 'দেবীর আশীর্বাদেই চাকরি মিলেছে।'
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us