Bhut Chaturdashi 2025: ভূত চতুর্দশীতে আমিষ খাওয়া শাস্ত্রে কি বারণ, সত্যিটা কী?

Bhut Chaturdashi 2025: ভূত চতুর্দশীর দিন শাস্ত্রমতে আমিষ নাকি নিরামিষ কোনটা খাওয়া উচিত? ভূত চতুর্দশীতে আপনারাও অনেকে এই প্রথা রীতি মেনে পালন করেন, কেন করেন তা কী জানেন?

Bhut Chaturdashi 2025: ভূত চতুর্দশীর দিন শাস্ত্রমতে আমিষ নাকি নিরামিষ কোনটা খাওয়া উচিত? ভূত চতুর্দশীতে আপনারাও অনেকে এই প্রথা রীতি মেনে পালন করেন, কেন করেন তা কী জানেন?

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Bhut Chaturdashi 2025: ভূত চতুর্দশী ২০২৫।

Bhut Chaturdashi 2025: ভূত চতুর্দশী ২০২৫।

Bhut Chaturdashi 2025: কালীপুজোর আগের দিনের তিথিটি বাঙালি হিন্দু সমাজে পরিচিত ভূত চতুর্দশী নামে। এই দিনেই ঘরে জ্বলে চোদ্দ প্রদীপ, আর রান্না হয় চোদ্দ শাক। প্রথাগতভাবে এই দিনটি অশুভ শক্তি দূর করার এবং পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ আহ্বান করার দিন। এই দিনের মূল উদ্দেশ্য হল ঘর ও শরীর উভয়কেই শুদ্ধ করা। শরীর শুদ্ধির জন্য যেমন চোদ্দ শাক খাওয়া হয়, তেমনি মন ও আত্মা শুদ্ধ করার জন্য প্রদীপ জ্বালানো হয়।

Advertisment

ভূত চতুর্দশীর অন্যতম প্রথা হল চোদ্দ রকম শাক খাওয়া। মনে করা হয়, এই শাকগুলির প্রতিটিতে বিশেষ ঔষধি গুণ রয়েছে যা শরীরকে ঋতু পরিবর্তনের সময় রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। সাধারণত যেসব শাক খাওয়া হয়, সেগুলো হল- লাল শাক, পুঁই, পালং, কলমি, মেথি, মুলা শাক, শিম, কচু শাক, লাউ শাক, ধনে পাতা, নটে, শোলাপাতা, সজনে পাতা, ও মিষ্টি কুমড়োর পাতা।

আরও পড়ুন- ভূত চতুর্দশীতে কেন খাবেন ১৪ শাক, কেন জ্বালবেন বাতি?

ভূত চতুর্দশীতে কি নিরামিষ খাবার খেতে হয়?

এগুলো শরীরের ভেতর থেকে টক্সিন দূর করে, হজমে সাহায্য করে এবং শীত আসার আগে ইমিউনিটি শক্তিশালী করে। এই দিন অবশ্যই নিরামিষ খাবার খাওয়া উচিত। ভূত চতুর্দশী হল কালীপুজোর আগের দিন এবং অত্যন্ত শুভ দিন। তাই এই দিনে নিরামিষ আহার গ্রহণ করাই প্রথাগত ও পবিত্র বলে ধরা হয়। শুধু চোদ্দ শাকই নয়, এই তিথিতে মাছ-মাংস, ডিম, রসুন-পেঁয়াজ খাওয়া হয় না। অনেক পরিবারে এই তিথিতে দেবী কালী বা হনুমানজির পুজো করা হয়, তাই নিরামিষ ভোজনের মধ্যেই থাকে পবিত্রতার প্রতীক।

Advertisment

আরও পড়ুন- দেবী যেন জ্যান্ত! প্রতিমার পায়ে কাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বের করে এনেছিলেন এই সাধক

এই তিথিতে বাড়ির প্রতিটি কোণে চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানো হয়। দরজার পাশে প্রদীপ জ্বালানোর রীতি রয়েছে। এটা পূর্বপুরুষদের স্মরণে করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, এই আলোতে অশুভ আত্মা দূরে সরে যায় এবং পূর্বপুরুষদের আত্মা শান্তি পায়। চোদ্দ প্রদীপ জ্বালানোর সময় যদি নিরামিষ আহার গ্রহণ করে মন শান্ত রাখা যায়, তাহলে দেবতা ও পিতৃপুরুষের আশীর্বাদ লাভ হয়।

আরও পড়ুন- সহজেই দূর করুন আজকের দুর্ভাগ্য, কাজে লাগান এই টিপস

ভূত চতুর্দশীর দিনে শুধু চোদ্দ শাক খাওয়াই নয়, আরও কিছু শুভ রীতি মানলে ঘরে শান্তি ও সৌভাগ্য আসে। যেমন- বাড়ির সদর দরজার ওপরে ঘোড়ার নাল লাগালে অশুভ শক্তি দূর হয়। দরজার দু’পাশে তুলসী গাছ ও গাঁদা গাছ লাগানো শুভ বলে মনে করা হয়। এই তিথিতে হনুমানজির পূজা করলে দুষ্ট শক্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বাড়ির দরজায় স্বস্তিক আঁকলেই শুভ শক্তির সঞ্চার হয়। চন্দন ও গঙ্গাজল ছিটিয়ে ঘর পরিষ্কার করলে পরিবেশ পবিত্র হয় ও নেতিবাচক শক্তি দূর হয়।

আরও পড়ুন- দীপাবলিতে এই ভাবে ঘর সাজান, পাবেন সুখ্যাতি!

এই দিনটি শুধু শাক খাওয়া বা প্রদীপ জ্বালানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ভূত চতুর্দশী হল পূর্বপুরুষদের স্মরণ করার দিন। অনেকেই এই দিনে পিণ্ডদান বা তিল-জল অর্পণ করেন। মনে করা হয়, এই নিয়মগুলি পালনে পিতৃপুরুষের আশীর্বাদে পরিবারের কল্যাণ ঘটে। ভূত চতুর্দশী শুধু একটি রীতি নয়, এটি বাঙালির আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের অংশ। চোদ্দ শাক খাওয়া, নিরামিষ আহার, প্রদীপ জ্বালানো— সবই জীবনের অশুভ শক্তিকে দূরে রেখে শুভ শক্তির আহ্বান জানানোর প্রতীক। এই তিথি পালন করলে শরীর-মন দুই-ই হয় শুদ্ধ, আর ঘরে আসে শান্তি এবং ঐশ্বর্য।

Bhut Chaturdashi 2025