Kali temple: দেবী যেন জ্যান্ত! প্রতিমার পায়ে কাঁটা ফুটিয়ে রক্ত বের করে এনেছিলেন এই কালীসাধক

Kali temple: তাঁর কালীভক্তি, অলৌকিক সাধনলীলা বিখ্যাত করেছে এই কালীমন্দিরকে। জানুন এই সাধকের জীবনের অলৌকিক ঘটনাবলি। কীভাবে তিনি পেয়েছিলেন দেবীর কৃপা!

Kali temple: তাঁর কালীভক্তি, অলৌকিক সাধনলীলা বিখ্যাত করেছে এই কালীমন্দিরকে। জানুন এই সাধকের জীবনের অলৌকিক ঘটনাবলি। কীভাবে তিনি পেয়েছিলেন দেবীর কৃপা!

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Kamalakanta Kali temple

Kamalakanta Kali temple: বাংলায় কালী সাধনার প্রসার ঘটিয়েছিলেন এই সাধক!

Kali temple: বাংলার শাক্ত সাধন ধারায় তিনি এক অনন্য নাম। তাঁর নাম শুনলেই মনে পড়ে এক অদ্ভুত মিশ্রণ—ভক্তি, কাব্য, অলৌকিকতা আর ঈশ্বরপ্রেমের উন্মাদনা। কবি, সাহিত্যিক, সঙ্গীতকার—যে পরিচয়েই তাঁকে দেখা হোক, তাঁর আসল পরিচয় এক কালীভক্ত সাধক হিসেবেই।

Advertisment

তিনি কে?

তিনি আর কেউ নন, সাধকপ্রবর কমলাকান্ত ভট্টাচার্য। কমলাকান্তের জন্ম বর্ধমান অঞ্চলে, এক সাধারণ ব্রাহ্মণ পরিবারে। কিন্তু জীবনের শুরু থেকেই তাঁর মধ্যে ছিল ঈশ্বরচেতনার গভীর অনুরাগ। কৈশোরেই তিনি শক্তিসাধনায় মন দেন এবং পরিণত বয়সে হয়ে ওঠেন এক সিদ্ধ সাধক। তাঁর রচিত শাক্ত পদাবলীতে বারবার উঠে এসেছে দেবী কালীর প্রতি তাঁর প্রেম, ভয়, করুণা আর আত্মসমর্পণের অনুভব। যেখানে লেখা আছে, 'যা যা করি মাগো তোরি তরে করি, তুই যে মোর প্রাণের প্রিয় মা।'

আরও পড়ুন- কালী যেখানে ধন্বন্তরী! 'রোগহারিণী কালী'র কাহিনি জানেন?

আজকের যে মন্দিরটি ‘কমলাকান্তের কালীবাড়ি’ নামে পরিচিত, সেইখানেই ঘটেছিল এক আশ্চর্য ঘটনা। কথিত আছে, একদিন প্রতিমার পায়ে বেলকাঁটা লাগতেই বেরিয়ে আসে টাটকা রক্ত। ভক্তরা হতবাক হয়ে যান। কেউ বলেন, সেটি দেবীর জীবন্ত রূপের প্রমাণ। কেউ বলেন, সেটি কমলাকান্তের গভীর তপস্যার ফল। সেই ঘটনার পর থেকেই এই মন্দিরের মাহাত্ম্য চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

Advertisment

আরও পড়ুন- অ্যান্টনিই কি কলকাতার ফিরিঙ্গি কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা?

আরও এক বিস্ময়কর কাহিনি জড়িয়ে আছে তাঁর সঙ্গে। এক অমাবস্যার রাতে তিনি বর্ধমানের মহারাজাকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখিয়েছিলেন! ভক্তদের মতে, এটি তাঁর সিদ্ধিলাভের প্রমাণ—যেখানে প্রকৃতির নিয়মও নতি স্বীকার করেছিল তাঁর ভক্তির কাছে। মৃত্যুর সময় কমলাকান্ত গঙ্গার কাছে যেতে চাননি। তিনি বলেছিলেন, 'মা আছেন এখানেই, গঙ্গাও আসবেন।' অলৌকিকভাবে ঠিক তাই ঘটেছিল। মন্দিরের ভেতরে মাটি ফুঁড়ে উঠে এসেছিল জল। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, সেটিই গঙ্গা জল। আজও সেই জল পবিত্র বলে মন্দিরের পুজোর ভোগ রান্নায় ব্যবহার করা হয়। ভক্তরা একে বলেন 'কমলাকান্তের গঙ্গা'—যেন মা নিজেই এসে ছুঁয়েছিলেন তাঁর প্রিয় সন্তানকে।

আরও পড়ুন- জাগ্রত দেবী! মন্দির নির্মাণে জড়িয়ে এই বেদনাময় কাহিনি

তাঁর কালীসাধনার কথা শুনে বর্ধমানের মহারাজ তেজচন্দ্র মহাতাব তাঁকে রাজসভায় নিয়ে যান। মন্দিরের পূজা-পাঠের দায়িত্ব দেন এবং তাঁকে রাজসভায় সভাকবি পদে নিযুক্ত করেন। রাজা নিজেও কমলাকান্তের ভক্তি ও অলৌকিক সাধনশক্তিতে মুগ্ধ ছিলেন। কমলাকান্ত মৃত্যুর পর মন্দিরেই সমাধিস্থ হন। তাঁর সমাধির ওপরেই রয়েছে দেবীর বেদী। প্রথম দিকে দেবীমূর্তি ছিল মাটির, পরে পাথরের। বর্তমানের কষ্টিপাথরের মূর্তি শিল্পী ভাস্কর ঘোষ একটিমাত্র পাথর থেকে নির্মাণ করেছিলেন। কালীপুজোর সময় এখানে তিন দিনব্যাপী উৎসব চলে—তান্ত্রিক আচার, কীর্তন, ভোগ ও আরাধনায় মুখরিত থাকে মন্দির প্রাঙ্গণ।

আরও পড়ুন- হইচই হচ্ছে, কিন্তু এগুলো জানলে ধনতেরাস সম্পর্কে নতুন করে ভাববেন!

ভক্তদের বিশ্বাস, মা কালীর সৌন্দর্য ও মহিমা কেবল বাহ্যিক চোখে দেখা যায় না—মনের চোখেও দেখতে হয়। যে অন্তর থেকে দেবীকে ভালোবাসতে জানে, সে-ই বুঝতে পারে কমলাকান্তের কালীভক্তির আসল অর্থ। আর সেটা হল, 'মা আছেন সর্বত্র, ভক্তির মধ্যেই।'

Kali Temple