/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/26/chhath-puja-pg-1-2025-10-26-21-04-25.jpg)
Chhath Puja 2025: পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে ছট পুজোয় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়েছে।
Chhath Puja 2025: ছট পুজো উত্তর ভারতের অন্যতম প্রাচীন এবং আধ্যাত্মিক উৎসব। এটি সূর্যদেব ও তাঁর সহধর্মিণী ঊষা (ছটি মাই)-এর পূজা হিসেবে পরিচিত। এই পুজো মূলত বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে ব্যাপকভাবে পালিত হয়। সূর্যদেবকে শক্তি ও জীবনের উৎস বলে মনে করা হয়, তাই তাঁকে ধন্যবাদ জানাতে এই চারদিনব্যাপী উপাসনা অনুষ্ঠিত হয়। এবছর এই পুজো হচ্ছে ২৫ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
ছট পুজোর ইতিহাস
ছট পুজোর উল্লেখ পাওয়া যায় রামায়ণ ও মহাভারত-এও। কথিত আছে, অযোধ্যায় রাম ও সীতা লঙ্কা জয় করে ফিরে আসার পর সীতা দেবী কার্তিক শুক্ল ষষ্ঠীতে সূর্যদেবের আরাধনা করেন। অন্যদিকে, দ্রৌপদীও পাণ্ডবদের মঙ্গল কামনায় এই পুজো করেছিলেন। তাই এই পূজা কেবল ধর্মীয় নয়, বরং ঐতিহাসিক এবং আধ্যাত্মিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন রুই খেয়ে আর রুচছে না? এভাবে খান, মুখে লেগে থাকবে!
ছট পুজোর চারদিনের ধাপ
১. নহায় খায় (প্রথম দিন): পুজোর সূচনা হয় নহায় খায় দিয়ে। এই দিনে ভক্তরা নদীতে স্নান করেন এবং নিরামিষ ভোজন গ্রহণ করেন। শরীর-মন শুদ্ধ রাখাই মূল উদ্দেশ্য। ২. খরনা (দ্বিতীয় দিন): এই দিনে উপবাসীরা সারাদিন উপবাস থেকে সন্ধ্যায় গুড়-চালের পায়েস ও ফল খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন। এরপর পরের দুই দিন সম্পূর্ণ উপবাসে থাকেন। ৩. সন্ধ্যা অর্ঘ্য (তৃতীয় দিন): এই দিন সূর্যাস্তের সময় ভক্তরা নদী, পুকুর বা গঙ্গার ঘাটে গিয়ে সূর্যদেবকে অর্ঘ্য দেন। নারী-পুরুষ উভয়েই হাতে ফল, নারকেল, কলা থাকে। থালাভরে তা দিয়ে তাঁরা সূর্য প্রণাম করেন। ৪. প্রাতঃ অর্ঘ্য (চতুর্থ দিন): শেষ দিনে সূর্যোদয়ের সময় ভোরে সূর্যদেবকে দ্বিতীয়বার অর্ঘ্য দেওয়া হয়। এরপর পুজো সমাপ্ত হয়, এবং পরিবার-পরিজন একসঙ্গে প্রসাদ ভাগ করে নেন।
আরও পড়ুন- ডায়রিয়া বেড়ে যাচ্ছে ইচ্ছেমত ORS খেয়েই! কী বলছেন চিকিৎসকরা?
ছট পুজোর তাৎপর্য
ছট পুজো কেবল সূর্য উপাসনা নয়। এটি আত্মশুদ্ধি, সংযম ও কৃতজ্ঞতার প্রতীক। সূর্যকে ধন্যবাদ জানানো হয় জীবনের আলো ও শক্তি দেওয়ার জন্য। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই পুজো করলে জীবনে শান্তি, সমৃদ্ধি ও রোগমুক্তি আসে।
আরও পড়ুন- মহম্মদ বিন তুঘলক, সুলতানি সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লি থেকে এখানে স্থানান্তরিত করেছিলেন!
ছট পুজোর প্রসাদ ও অর্ঘ্য
ছট পুজোয় ব্যবহৃত অর্ঘ্যের মধ্যে থাকে— নারকেল, কলা, আপেল, পেয়ারা, চিঁড়া, গুড়, চাল, থালায় বাঁশের তৈরি সুপ বা ডালা, প্রদীপ, ফুল এবং গঙ্গাজল। সব কিছুই সম্পূর্ণ নিরামিষ ও শুদ্ধভাবে প্রস্তুত করা হয়।
আরও পড়ুন- অশীতিপর অপর্ণা! 'মিস ক্যালকাটা' যেন আজও সুইট ১৬
পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক দিক
ছট পুজোর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল— এটি সম্পূর্ণ প্রকৃতিনির্ভর উৎসব। এখানে মূর্তি বা মন্দিরের প্রয়োজন হয় না। সূর্য, জল এবং ভূমি—এই তিনটি প্রাকৃতিক উপাদানই উপাসনার কেন্দ্রবিন্দু। এটাই একে অন্য সব উৎসব থেকে আলাদা করে তুলেছে। মূল বিষয়টি হল, ছট পুজো (Chhath Puja 2025) শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ, কৃতজ্ঞতা ও প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হওয়ার প্রতীক। এই পুজো আমাদের শেখায়, সূর্যের আলোই জীবনের প্রাণ। আর প্রকৃতির প্রতি শ্রদ্ধাই হল প্রকৃত পুজো।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us