Diabetes Risk Treatment: আজকের দিনে ডায়াবেটিস কেবল একটি রোগ নয়, এটি একটি জীবনধারার প্রতিফলন। অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, শরীরচর্চার অভাব, মানসিক চাপ—এসবই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের বড় কারণ। কিন্তু আপনি যদি জানেন, আপনার বাবা বা মা– অথবা উভয়েরই ডায়াবেটিস রয়েছে, তাহলে এটি নিছক জীবনধারার বিষয় নয়, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা কিন্তু জেনেটিকও।
পারিবারিক ইতিহাসের প্রভাব
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি কারও বাবা-মায়ের উভয়েরই টাইপ ২ ডায়াবেটিস থাকে, তাহলে সন্তানের মধ্যে এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৫০% বা তারও বেশি। এটি হয় জেনেটিক ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, বা শরীরের বিটা সেলের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার কারণে। এই প্রসঙ্গে ডা. হিরণ এস রেড্ডি বলেছেন, যদি শিশুকালে কোনও উপসর্গ দেখা না-ও দেখা যায়, সময়ের সঙ্গে গ্লুকোজের সহনশীলতা কমতে পারে এবং প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে।'
আরও পড়ুন- লেবেল পড়ে খাবারের প্যাকেট কিনছেন তো? না পড়লে কিন্তু আপনি চরম ঠকতে পারেন!
তাহলে কি ডায়াবেটিস নিশ্চিত?
না, একেবারেই না। আপনার পারিবারিক ইতিহাস থাকতে পারে, কিন্তু আপনার জীবনযাত্রার পছন্দই নির্ধারণ করবে আপনি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন কি না। এই প্রসঙ্গে ডা. রাজীব কোভিল বলেন, 'টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধযোগ্য। সঠিক জীবনযাত্রা, সুষম খাদ্য, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম এর ঝুঁকি অনেকটা কমিয়ে দেয়।'
আরও পড়ুন- রক্তচাপ আদৌ ঠিকঠাক মাপছেন তো? জানেন কি, এই ১০টি সাধারণ ভুলেই বদলে যেতে পারে রিপোর্ট!
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে যা করবেন
১. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন
আপনার ওজন যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তবে ওজন মাত্র ৫-৭% কমালেই ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে।
আরও পড়ুন- মুখের কালো দাগ দূর করতে কাজে লাগান ৭টি ঘরোয়া উপায়, দেখে নিন কীভাবে সবাইকে চমকে দেবেন!
২. সুষম খাদ্য নির্বাচন করুন
খাবারে রাখুন—
-
বেশি ফাইবার (শাকসবজি, গোটা শস্য)
-
চর্বিহীন প্রোটিন (ডাল, মুরগি, মাছ)
-
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (অলিভ অয়েল, বাদাম)
এড়িয়ে চলুন—
৩. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন
সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি শারীরিক কার্যকলাপ—যেমন হাঁটা, সাইক্লিং বা জগিং করুন।
আরও পড়ুন- ২টি সিঙ্গারা ও ১টি জিলেবি খাওয়ার পর কতটা ব্যায়াম শরীরের জন্য ভালো? জানুন, শরীরচর্চার ঠিকুজি-কুষ্ঠি!
৪. স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ করুন
মন ও শরীরের সঙ্গে যুক্ত ধ্যান, যোগব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম। এগুলো মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। যাতে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ে।
৫. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান
বিশেষ করে যদি—
-
আপনার বয়স ২৫ বছরের বেশি হয়
-
আপনার ওজন যদি বেশি হয়
-
বসে বসে থাকার প্রবণতা যদি বেশি হয়
-
পরিবারে যদি ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে
তাহলে বছরে অন্তত একবার ব্লাড সুগার পরীক্ষা করুন।
আপনার ভবিষ্যত আপনার হাতে
জেনেটিক্স পরিবর্তন করা যায় না, তারপরও আপনি চাইলে ভবিষ্যৎ বদলাতে পারেন। আজ থেকেই ছোট ছোট স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শুরু করুন। মনে রাখবেন, ডায়াবেটিসের ঝুঁকি মানেই ডায়াবেটিস নয়—আপনার নিয়মিত সচেতনতা এবং জীবনধারা ডায়াবেটিস থেকে আপনাকে অনেক দূরে সরিয়ে রাখতে পারে। মনে রাখবেন, আপনার বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস আছে মানেই আপনি অসুস্থ হবেন, এমনটা কিন্তু নয়। তাই সচেতন থাকুন, নিয়ম মেনে চলুন, স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ুন।