/indian-express-bangla/media/media_files/2025/05/17/W3BDPtJqRYTTOxGhOzrP.jpg)
Gym Lifestyle: জিমে ওয়ার্কআউট করা এক তরুণ। (প্রতীকী ছবি)
Gym Lifestyle In India: ফিটনেস এখনকার তরুণদের লাইফস্টাইলের একটি বড় অংশ। সুগঠিত শরীর, তাড়াতাড়ি রেজাল্ট— এসবের পিছনে দিনের পর দিন ঘাম ঝরাচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু এই স্বাস্থ্য গড়ার নেশা যখন শর্টকাটে লক্ষ্যে পৌঁছতে চায়, তখন সেটাই হয়ে উঠছে এক চূড়ান্ত ক্ষতির কারণ।
সম্প্রতি ‘দিল্লি হিপ ৩৬০’ সম্মেলনে দেশের শীর্ষ অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞরা এক গুরুতর সতর্কতা জারি করেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ২০-৩০ বছর বয়সি জিমে যাওয়া তরুণদের মধ্যে অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস (AVN) রোগ আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে— যা সাধারণত বয়স্কদের রোগ হিসেবেই পরিচিত।
আরও পড়ুন- চুল পড়া কোনওভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না? সব জায়গায় দৌড়েও লাভ হয়নি? এই টোটকায় কাজ হবে ম্যাজিকের মত
অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস (AVN) কী?
AVN বা অ্যাভাসকুলার নেক্রোসিস হল, এমন একটি অবস্থা, যেখানে হাড়ের রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। এর ফলে হাড়ের কোষ মরে যায়, যার জেরে হিপ জয়েন্ট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন- লিপস্টিক আর লিপ বাম কিনবেন না! বিটরুট দিয়ে ঘরেই তৈরি করুন প্রাকৃতিক ঠোঁটের রং
স্টেরয়েড এবং প্রোটিন পাউডারের ভূমিকা
ডা. এল তোমর (চেয়ারম্যান, দিল্লি হিপ ৩৬০ সম্মেলন) বলেন, 'আমার চেম্বারে এখন প্রতি সপ্তাহে ৩০ বছরের কম বয়সি ২–৩ জন AVN রোগী আসছেন। ৭০% কেসেই স্টেরয়েড বা অনিয়ন্ত্রিত প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের ইতিহাস থাকছে।' বেশ কিছু ফিটনেস পাউডার এবং সাপ্লিমেন্টে মেশানো থাকে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিকারী স্টেরয়েড, যা রক্ত প্রবাহকে প্রভাবিত করে কোমরের হাড়ের ধ্বংস ডেকে আনে। মহারাষ্ট্র FDA ইতিমধ্যে এমন কিছু ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও শুরু করেছে।
আরও পড়ুন- রাতারাতি খুশকি দূর করতে দই-ই যথেষ্ট! ঘরে থাকা ৫টি উপাদানেই মিলবে আয়ুর্বেদিক সমাধান
কেন এই সমস্যা বাড়ছে?
ডা. শরদ আগরওয়াল বলেন, 'ফিটনেস ইন্ডাস্ট্রি তরুণদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও, তাঁদের পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। তাঁরা সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছেন না। তাঁরা শুধুমাত্র বাহ্যিক রূপান্তরের দিকে ঝুঁকছেন। আর সেই দৌড়ে শরীরের ভিতরের ক্ষতির দিকে নজরই দিচ্ছেন না কেউ।' বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেমোরাল হেড (hip joint-এর মূল হাড়) রক্ত সরবরাহে খুবই সংবেদনশীল। স্টেরয়েড বা ভুল সাপ্লিমেন্ট এই রক্ত সরবরাহ ব্যাহত করে AVN-এর সূচনা করছে।
আরও পড়ুন- পার্লারে গিয়ে সময় নষ্ট নয়! বাড়িতেই করুন সুন্দর নখের যত্ন এই ৫ ঘরোয়া টিপসে
কী করণীয়?
১) স্টেরয়েড বা পাউডার ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ২) সঠিক ব্র্যান্ড ও সাপ্লিমেন্টের অনুমোদন যাচাই করুন। ৩) জিমে গিয়ে দ্রুত রেজাল্ট না চেয়ে ধীরে উন্নতি করুন। ৪) হিপ বা কোমরে ব্যথা থাকলে দ্রুত অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ দেখান।
আরও পড়ুন- ডায়াবেটিস রোগীরা কি প্রতিদিন আম খেতে পারবেন? কী পরিমাণ খাওয়া নিরাপদ হবে, জেনে নিন চিকিৎসকের মতামত
শরীর গঠন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গুরুত্বপূর্ণ শরীরের ভিতরটা ঠিক রাখা। দ্রুত রেজাল্টের চেষ্টায় যদি ভবিষ্যতের হাঁটা-চলার ক্ষমতাই চলে যায়, তবে সেই সুগঠিত শরীরও মূল্যহীন হয়ে পড়ে। তাই সতর্ক হোন, সচেতন হোন— আর প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে কখনও দেরি করবেন না।