/indian-express-bangla/media/media_files/2025/11/02/shirshendu-mukhopadhyay-2025-11-02-09-55-21.jpg)
Happy Birthday Shirshendu Mukhopadhyay: সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন।
Happy Birthday Shirshendu Mukhopadhyay: বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় আজ ৮৯ বছরে পা রাখলেন। ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর, তৎকালীন পূর্ববঙ্গের ময়মনসিংহ জেলায় জন্ম নেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই তাঁর জীবনে ছিল ভ্রমণ, অভাব আর শিক্ষার প্রতি গভীর টান। দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে পরিবার-সহ কলকাতায় চলে আসেন শীর্ষেন্দু। বাবার চাকরির সুবাদে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তাঁর শৈশব কেটেছে— কোচবিহার, মালদা, হাওড়া, কলকাতা— সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে তাঁর বেড়ে ওঠার গল্প।
শিক্ষা ও প্রাথমিক জীবন
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় কোচবিহারের বোর্ডিং স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। মাধ্যমিক পাশ করেন কোচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে। এরপর কলকাতা কলেজ থেকে বিএ এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ করেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন বইপাগল। তাঁর শৈশবের সঙ্গী ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, মানিক, তারাশংকরের মত মহান লেখকরা। এই পড়ার অভ্যাসই তাঁর লেখক হয়ে ওঠার ভিত তৈরি করে।
আরও পড়ুন- একদিনেই দেখে ফেলুন নদিয়ার নবদ্বীপের সেরা দর্শনীয় স্থানগুলি
১৯৫৯ সালে দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম গল্প ‘জলতরঙ্গ’। এরপর ১৯৬৬ সালে একই পত্রিকায় প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস ‘ঘুণপোকা’— যা তাঁকে পরিচিতি এনে দেয় পাঠকমহলে। তারপর থেকে একে একে প্রকাশিত হয়েছে দুই শতাধিক উপন্যাস এবং গল্পগ্রন্থ। তাঁর লেখার বিষয়বস্তু কখনও সমাজবাস্তবতা, কখনও মানুষের মনস্তত্ত্ব, আবার কখনও রহস্য বা কল্পনার জগৎ।
আরও পড়ুন- দিনে কতটুকু মদ খেলে শরীর থাকবে চাঙ্গা! আপনি কি জানেন?
শীর্ষেন্দুর জনপ্রিয় উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে— ‘মানবজমিন’, ‘দূরবীন’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘পার্থিব’, ‘যাও পাখি’, ‘পারাপার’, ‘বিবর’, ‘আলো-অন্ধকার’ প্রভৃতি। তাঁর সৃষ্ট অদ্ভুতুরে সিরিজ ও শাবর দাশগুপ্ত সিরিজ তরুণ পাঠকদের ভীষণ প্রিয়। ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’, ‘ভুতুড়ে ঘড়ি’, ‘হেতমগড়ের গুপ্তধন’, ‘নন্দীবাড়ির শাঁখ’ ইত্যাদি গল্প আজও পাঠককে টানে রহস্যের জগতে।
আরও পড়ুন- প্রেম মানেই সব রঙিন নয়! এই ৫ ভুলের যে কোনও একটি করলেই হারাবেন কাছের মানুষটিকে
তাঁর বহু উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে— যেমন ‘গয়নার বাক্স’, ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’, ‘মানবজমিন’ প্রভৃতি। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বাংলাদেশেও তাঁর গল্পের ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ‘যাও পাখি’ এবং ‘মানবজমিন’ অবলম্বনে বাংলাদেশে ধারাবাহিক নাটক তৈরি হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে অবদানের জন্য শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বহু সম্মান পেয়েছেন। ১৯৭৩ ও ১৯৯০ সালে পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। ১৯৮৫ সালে, শিশু-কিশোর সাহিত্য ‘মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি’ এর জন্য পেয়েছেন বিদ্যাসাগর পুরস্কার। ১৯৮৮ সালে ‘মানবজমিন’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান।
আরও পড়ুন- রেস্তোরাঁ নয়! কলকাতার এই ৫ জায়গায় প্রথম দেখা হলে প্রেম পাকা নিশ্চিত!
শীর্ষেন্দুর লেখায় প্রতিফলিত হয় জীবনের সূক্ষ্মতম আবেগ, সামাজিক টানাপোড়েন এবং নৈতিক দ্বন্দ্ব। তিনি যেমন রোমান্টিক প্রেমের গল্প লেখেন, তেমনই লেখেন সমাজের অন্যায়, শোষণ ও মানবিক সম্পর্কের বাস্তব চিত্রও। তাঁর ভাষা সহজ, সংবেদনশীল এবং পাঠকবান্ধব। যা সব বয়সের পাঠককে কাছে টানে। ৮৯ বছর বয়সেও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যজগতে এক অনন্য আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখা আজও নবীন পাঠকের মন ছুঁয়ে যায়। তাঁর জন্মদিনে পাঠক সমাজের একটাই প্রার্থনা — তিনি আরও বহুদিন সুস্থ থাকুন এবং আমাদের নতুন গল্পের জগতে নিয়ে যান।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
 Follow Us