Drinks For Health Benefits: বর্তমানে পানীয় শুধু সকালে ঘুম ভাঙানোর জন্য নয়, বরং দীর্ঘায়ু ও হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে বলে জানাচ্ছে একটি নতুন গবেষণা। যুক্তরাষ্ট্রের টাফটস ইউনিভার্সিটির (Tufts University) এক গবেষণায় এনিয়ে বিস্তারিত জানা গিয়েছে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় জানা গিয়েছে, যাঁরা দিনে ১ থেকে ৩ কাপ চিনি বা ক্রিম ছাড়া ব্ল্যাক কফি খান, তাঁদের মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় ১৪ শতাংশ কমে যায়।
আরও পড়ুন- চোখে জ্বালা, কাশি, মাথাব্যথা? এসিই কি আপনার স্বাস্থ্যকে সংকটে ফেলছে?
গবেষণার মূল তথ্য:
১৯৯৯ সাল থেকে শুরু করে বহু মানুষের ওপর পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দিনে ১ কাপ কফি খেলে মৃত্যুর ঝুঁকি কমে ১৬%, আর ২-৩ কাপ কফি খেলে কমে ১৭%। তবে এই উপকারিতাটি শুধু তখনই কার্যকর, যখন কফিতে অতিরিক্ত চিনি বা স্যাচুরেটেড ফ্যাট (cream) যোগ করা হয় না।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৩ কাপের বেশি কফি খেলেও আলাদা কোনও উপকারিতা পাওয়া যায় না। বরং হার্টের রোগে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন- এই পাখিকে ছুঁলেই অবশ হয়ে যেতে পারে শরীর, জেনে নিন ভয়ানক বিষধর হুডেড পিটোহুই সম্পর্কে
কেন এই গবেষণা গুরুত্বপূর্ণ?
ক্যাফেইনের উপকারিতা অনেক। যেমন সচেতনতা বাড়ানো, ক্ষুধা কমানো, কাজের ফোকাস বাড়ানো ইত্যাদি অনেক আগে থেকেই আলোচিত। তবে এই প্রথম এত স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে 'কোন ধরনের কফি', 'কতটা পরিমাণে' খেলে উপকার হয়।
একটি সাধারণ কাপের কফিতে থাকে প্রায় ১০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন। অর্থাৎ দিনে ১-২ কাপ ব্ল্যাক কফি খাওয়াই এক্ষেত্রে ঠিক।
আরও পড়ুন- শুধু মোবাইল নয়, রোজকার এই ৩ জিনিসেও নষ্ট হচ্ছে মস্তিষ্ক, বলছে গবেষণা
কিন্তু সমস্যা কোথায়?
ভারতের প্রখ্যাত ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. ভি মোহনের মতে, কফির উপকারিতা নির্ভর করে একাধিক বিষয়ের ওপর—
-
আপনি কীভাবে কফি খান (দুধ-চিনি সহ না কি ব্ল্যাক?)
-
আপনি দিনে কত কাপ কফি খান
-
আপনি সঙ্গে কী খান বা পান করেন (বিস্কুট, মিষ্টি ইত্যাদি), সেটাও দেখা দরকার
ডা. মোহন বলেন, 'ভারতে কফির সঙ্গে সাধারণত দুধ ও চিনি মেশানো হয়, যা উপকারিতাকে নষ্ট করে দেয়।'
আরও পড়ুন- উল্টোরথ পর্যন্ত রথযাত্রার আনন্দ! প্রিয়জনকে পাঠান এই শুভেচ্ছাবার্তা, মন ভরে উঠবে খুশিতে
ডায়াবেটিস থাকলে কী করবেন?
ডা. মোহনের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দিনে ১-২ কাপ ব্ল্যাক কফি নিরাপদ। কিন্তু, যদি আপনি দিনে ৫-৬ কাপ কফি খান এবং কম ঘুমোন, তবে বিপদ। এই অবস্থায় শরীরে অ্যাড্রিনালিন এবং কর্টিসল হরমোন বেড়ে যায়, যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা আরও বাড়ে। এতে করে ঘুম কম হয়, চাপ বাড়ে এবং আবার বেশি কফি খেতে হয় — এই দুষ্টচক্রে ঢুকে পড়ে শরীর।
সঠিক কফি খাওয়ার পদ্ধতি কী?
-
দিনে ২ কাপের বেশি নয়
-
দুপুর ২টার পরে কফি নয়
-
চিনি, ক্রিম বা ফ্লেভারিং বাদ দিন
-
ঘুম ঠিক রাখুন এবং জল বেশি খান
-
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করান
সেই কারণে যদি আপনি দীর্ঘায়ু চান, তাহলে কফির কাপে পরিবর্তন আনুন — চিনি নয়, শুধুই black coffee। তবে মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন, না হলে উপকারের বদলে ক্ষতিই হবে।