Toxic Bird: বিষধর পাখি! ছুঁলেই অবশ গোটা শরীর, জানেন কী এর নাম, আপনার বাড়ির কাছে নেই তো?

Toxic Bird: এই রহস্যময় পাখির গায়ে রয়েছে ভয়ানক বিষ। তাই এই পাখিকে ছুঁলেই শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। জেনে নিন, কীভাবে এই পাখি শরীরে বিষ ধারণ করে।

Toxic Bird: এই রহস্যময় পাখির গায়ে রয়েছে ভয়ানক বিষ। তাই এই পাখিকে ছুঁলেই শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে। জেনে নিন, কীভাবে এই পাখি শরীরে বিষ ধারণ করে।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Toxic Bird

Toxic Bird: বিষাক্ত পাখি।

Toxic Birds of New Guinea: প্রাণীজগতে বিষধর সাপ, ব্যাঙ বা মাকড়সার নাম আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু কখনও কি শুনেছেন এমন একটি পাখির কথা, যাকে ছুঁলেও শরীর অবশ হয়ে যেতে পারে? এমনই এক বিরল পাখির নাম হল- হুডেড পিটোহুই (Hooded Pitohui)।

Advertisment

কোথায় পাওয়া যায় এই পাখি?

হুডেড পিটোহুই মূলত নিউ গিনির ঘন জঙ্গলে বাস করে। এরা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে শুরু করে পাহাড়ি ঢাল পর্যন্ত বিভিন্ন উচ্চতায় বসবাস করতে পারে। দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করে, এবং অনেক সময় অন্যান্য প্রজাতির পাখির সঙ্গেও মিশে খাদ্য সংগ্রহ করে। তবে তাদের বেশি ঘোরাফেরা দেখা যায় নিউ গিনির রেইনফরেস্টেই। 

আরও পড়ুন- শুধু মোবাইল নয়, রোজকার এই ৩ জিনিসেও নষ্ট হচ্ছে মস্তিষ্ক, বলছে গবেষণা

Advertisment

পাখির গায়ে বিষ! কীভাবে?

এই পাখির গায়ের পালক ও ত্বকে থাকে বাত্রাক্সোটক্সিন (Batrachotoxin) নামে এক প্রাণঘাতী রাসায়নিক। এটি এমন একধরনের নিউরোটক্সিন, যা স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। উচ্চমাত্রায় এই বিষ শরীরে প্রবেশ করলে শরীরকে অবশ করে দেয়।  পক্ষাঘাতগ্রস্ত করে। এমনকী মৃত্যুর মুখেও ঠেলে দেয়।

আরও পড়ুন- বৃষ্টি হলেই একটু ভাজাভুজি খাই বলে মনে হয়? কারণটা জানলে তাজ্জব হয়ে যাবেন

তবে আশ্চর্যের বিষয় হল—এই পাখি নিজে এই বিষ তৈরি করে না। গবেষকরা মনে করেন, তারা এমন কিছু বিষাক্ত পোকামাকড়, বিশেষ করে কোরেসিন (Choresine) নামের একধরনের বিটল বা পোকা, খেয়ে এই বিষ সংগ্রহ করে।

স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘রাবিশ বার্ড’ নামে

নিউ গিনির আদিবাসীরা বহু যুগ ধরে জানেন যে, এই পাখিকে খাওয়া যায় না। কারণ, তার মাংস বিষাক্ত। তাই তাঁরা একে বলেন 'রাবিশ বার্ড (Rubbish Bird)'। কেউ যদি ভুল করে এদের ধরেন, তাহলে তাঁর হাতের চামড়ার ক্ষতি হয়ে যেতে পারে, এমনকী হাত অবশও হয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুন- বর্ষাকালে সুস্থ থাকতে খান এই সবজি, কমাবে ৮ ধরনের রোগ, ছুটতে হবে না চিকিৎসকের কাছে

হুডেড পিটোহুই-এর রং কেন এত উজ্জ্বল?

এই পাখিটির শরীর কমলা ও কালো রঙে মাখানো। বিজ্ঞানীরা বলেন, এটি অ্যাপোসেমাটিজ়ম (Aposematism) নামে এক প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। প্রাণীজগতে অনেক প্রাণী উজ্জ্বল রঙের মাধ্যমে শত্রুকে সতর্ক করে বোঝাতে চায় যে, 'আমাকে খেও না, আমি বিষাক্ত।' পিটোহুই ঠিক তেমনই।

আরও পড়ুন- চিনে মিলল ২০টি নতুন ভাইরাস, ২টি নিপা-হেন্দ্রার মতই! করোনার পর ফের অতিমারির আশঙ্কা?

শুধু তাই নয়

কিছু নিরীহ পাখিও নকল করে হুডেড পিটোহুই-এর মত রং ধারণ করেছে, যাতে শিকারিরা ভেবে নেয় তারাও বিষাক্ত এবং তাদেরকে আক্রমণ না করে। এই কায়দাকে বলে বেটসিয়ান মিমিক্রি (Batesian mimicry)। যা প্রকৃতির চোখ ধাঁধানো প্রতিরক্ষা কৌশল।

Toxic Bird 1
New Guinea's Toxic Bird: নিউ গিনির বিষাক্ত পাখি।

এই পাখির বিষ কতটা ভয়ানক?

  • মাত্র ২ মাইক্রোগ্রাম বাত্রাক্সোটক্সিন একটি ছোট প্রাণীর মৃত্যু ঘটাতে পারে

  • এই বিষ স্নায়ুকে অবশ করে দেয়, ফলে হৃৎস্পন্দন এবং শ্বাস-প্রশ্বাস থেমে যেতে পারে

  • মানব শরীরে সরাসরি প্রবেশ না করলেও, এই বিষ স্পর্শ করলে ত্বকে ঝাঁঝালো অনুভূতি ও অসাড়তা আসতে পারে

গবেষণায় কী পাওয়া গেছে?

হার্ভার্ড এবং স্মিথসোনিয়ান (Harvard & Smithsonian)-এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পিটোহুই ও দক্ষিণ আমেরিকার বিষাক্ত ডার্ট ফ্রগ বা ব্যাঙ উভয়েই একই উৎস থেকে বিষ সংগ্রহ করে। সেটা হল ডায়েট বা খাদ্য। এদের দেহে কোনও সময় এই বিষ ইনজেক্ট করলে দেখা গেছে, চরম নিউরোটক্সিক প্রতিক্রিয়া হয়।

প্রকৃতি আমাদের একের পর এক চমক দিয়েছে। পাখিও বিষধর হতে পারে, তা হয়তো আমরা ভাবিনি। হুডেড পিটোহুই আমাদের সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে। তার উজ্জ্বল রং, বিষাক্ত পালক, এবং প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা কৌশল নিখুঁত। যাঁরা পাখি বা প্রাণী গবেষক, তাঁদের কাছে হুডেড পিটোহুই নিঃসন্দেহে গবেষণাযোগ্য এবং বিস্ময়কর এক প্রজাতি।

toxic Birds New Guinea