Haircare Lifestyle: চুল পড়া একদম বন্ধ! মাত্র ৫ উপাদানে ঘরে তৈরি আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু

Ayurvedic Shampoo Lifestyle: শ্যাম্পু, তা-ও আবার আয়ুর্বেদিক! শুনলেই অনেকেই হয়তো অবাক হয়ে যাবেন। কিন্তু, এই আয়ুর্বেদিক গুণসম্পন্ন শ্যাম্পুই আপনাকে দিতে পারে স্বস্তি। একদিকে দাম বেশি না হওয়ায়, আপনার বেশি খরচ হবে না। অন্যদিকে এই শ্যাম্পুই আপনার চুলের শক্তি এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করবে। আয়ুর্বেদিক এই শ্যাম্পু একদম হেয়ার প্যাকের মতই গুরুত্বপূর্ণ। একবার যদি তা ব্যবহার করেন, তবে আর বাজার থেকে রাসায়নিক শ্যাম্পু কিনতে মনই চাইবে না। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে বড় কথা যে- চুল পরিষ্কার করার জন্য আপনি ঘরেই ঔষধি গুণসম্পন্ন এই শ্যাম্পু বানাতে পারবেন। যা চাট্টিখানি কথা নয়। 

সাধারণত বাজারে যেসব শ্যাম্পু আমরা দেখি, সেগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন নানা গণমাধ্যমে দেওয়া হয়। যেখানে দাবি করা হয় যে, এই সব শ্যাম্পু ব্যবহার করলে নাকি খুশকি দূর হয়ে যাবে। চুল হবে মসৃণ, একদম চকচকে। কিন্তু, বাস্তবে তেমনটা হয় না। ব্যবহার করার পর বেশিরভাগ ক্রেতারই তেমনই অভিজ্ঞতা। অনেকের তো আবার অভিযোগ, ওই সব শ্যাম্পু ব্যবহার করে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হয়েছে। 

আরও পড়ুন- ভুবনেশ্বর AIIMS-এ কবে, কখন কোন চিকিৎসক বসেন? কীভাবেই বা এখানে ডাক্তার দেখাবেন?

কী দিয়ে শ্যাম্পু বানাবেন?

• সাবান বাদাম (রিঠা গাছের ফল) - ১০০ গ্রাম
• শিকাকাই- ২০ গ্রাম
• শুকনো আমলকি- ২০ গ্রাম
• জল- ২ কাপ

আরও পড়ুন- মাত্র অল্প কিছু জিনিস, ঘরেই বানিয়ে ফেলুন ফেসিয়ালের পার্লার! রোজগার করুন দু'হাত ভরে

কীভাবে আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু বানাবেন?

• একটি প্যানে দুই কাপ জল নিন এবং ফুটিয়ে নিন। এতে শুকনো আমলকি, রিঠা ফল এবং শিকাকাই রাখুন। যতক্ষণ না জল অর্ধেক হয়ে যায়, ততক্ষণ মিশ্রণটি ফুটাতে থাকুন। 
• এই মিশ্রণটি ঠান্ডা করার জন্য একপাশে রেখে দিন। 
• তারপর রিঠা ফলগুলো ভালো করে ছেঁকে নিন। 
• ছেঁকে নেওয়া মিশ্রণটি একটি পরিষ্কার বোতলে রেখে দিতে পারেন।
• প্রয়োজন অনুযায়ী এই মিশ্রণ চুল ধোয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারেন। 

আরও পড়ুন- ঘি-নারকেল তেল-মাখন খাচ্ছেন? হতে পারে লিভার ড্যামেজ! দেখুন, কী বলছেন চিকিৎসক

ব্যবহারের নিয়ম:

• সপ্তাহে ২ বার, স্ক্যাল্পে ম্যাসাজ করে ৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। 
• কারণ এতে কোনও হার্শ কেমিক্যাল বা সালফেট নেই।
• অতিরিক্ত ব্যবহার করলে কিছু ক্ষেত্রে চুল শুকনো হয়ে যেতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি ড্রাই হেয়ার টাইপের হন।

কেন কার্যকর:

• চুল পড়া কমায়
• ড্যানড্রাফ দূর করে
• চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়
• স্ক্যাল্পের পিএইচ ব্যালেন্স বজায় রাখে

চিকিৎসকদের মতে, চুল বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল কেরাটিন। এটা একটা প্রোটিন। এই প্রোটিন রোমকূপে তৈরি হয়। এই রোমকূপে পুরোনো কোষের জায়গায় জন্ম নেয় নতুন কোষ। এই কোষের রূপান্তরের সময় কিছু চুল পড়ে যেতে পারে। অল্প পরিমাণে চুলের ঝরে যাওয়া কোনও সমস্যার ব্যাপারও না। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে যদি চুল পড়া বেড়ে যায়, তাহলে কিন্তু, বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। একথা বলতেই হবে।    

এই ঘরে তৈরি আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু কতদিন রাখা যায়?

• সাধারণত এটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে ৭–১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। কারণ এতে কোনও কেমিক্যাল প্রিজারভেটিভ নেই।
• যদি কাচের বোতলে রেখে ঠান্ডা ও শুকনো স্থানে রাখেন, তবে ৫ দিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য।
• ব্যবহার করার আগে ঘ্রাণ পরীক্ষা করুন।
• ঝাঁকিয়ে নিন, যদি ফেনা বা গন্ধে পরিবর্তন হয়, তবে ফেলে দিন

আরও পড়ুন- এসি মেসিন নিয়ে বিরাট খবর! কতক্ষণ একটানা চললে নেই কোনও বিপদের সম্ভাবনা?

এটি কী সব ধরনের চুলে ব্যবহারযোগ্য?

• হ্যাঁ, এই ঘরে তৈরি আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু সব ধরনের চুলেই ব্যবহারযোগ্য

• ড্রাই হেয়ার: মেথি ও আমলার কারণে চুলে আর্দ্রতা বজায় রাখে

• অয়েলি স্ক্যাল্প: শিকাকাই ও রিঠা চুল পরিষ্কার করে

• ড্যানড্রাফ প্রোন স্ক্যাল্প: নিম ও মেথি ব্যাকটেরিয়া রোধে সাহায্য করে

• সংবেদনশীল স্ক্যাল্প থাকলে প্রথমবার ব্যবহারের আগে অল্প অংশে (patch test) প্রয়োগ করে দেখতে পারেন

চুলের এই সব সমস্যা মেটানোর জন্য দোকানে অনেক শ্যাম্পু কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু, সেগুলোতে প্রচুর রাসায়নিক পদার্থ থাকে। তাই শ্যাম্পু নির্বাচনের আগে সাবধান হোন। তবে, উপায় কী? কারণ, মাথার ত্বক থেকে মৃত ত্বকের কোষ অপসারণ চুলের স্বাস্থ্যের জন্যই দরকার। সেই কারণেই তো শ্যাম্পু ব্যবহার করা হয়। কিন্তু, সেটা তো ভালো কিছু হওয়া দরকার। উপকার পেতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়াটা তো আর কাজের কথা না। তাই, ঘরেই আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু তৈরি করুন। আর সেটা ব্যবহার করুন। এতে অনেক উপকার পাবেন।