Jibanananda Das Death: কবি জীবনানন্দ দাশের জীবনের গল্প, ৭০ শতাংশ মানুষ যা জানেন না!

Jibanananda Das Death: আজ কবি জীবনানন্দ দাশের ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ‘বাংলার মুখ' দেখা কবির শেষ মুহূর্তের রহস্য, জীবনের নানা দিক, জেনে নিন বিস্তারিত।

Jibanananda Das Death: আজ কবি জীবনানন্দ দাশের ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ‘বাংলার মুখ' দেখা কবির শেষ মুহূর্তের রহস্য, জীবনের নানা দিক, জেনে নিন বিস্তারিত।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Jibanananda Das Death: জীবনানন্দ দাশ।

Jibanananda Das Death: জীবনানন্দ দাশ।

Jibanananda Das Death: ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।’- এই একটি লাইন যেন প্রতিটি বঙ্গবাসীর আত্মপরিচয়ের প্রতিধ্বনি। ছাত্রজীবনে পাঠ্যপুস্তকে পড়া এই পঙ্‌ক্তিগুলি নিছক কবিতা নয়— এ হল বাঙালির হৃদয়ের প্রতিচ্ছবি, যার স্রষ্টা কবি জীবনানন্দ দাশ। আজ তাঁর ৭০তম মৃত্যুবার্ষিকী (২২ অক্টোবর ১৯৫৪)। আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান স্তম্ভ জীবনানন্দ দাশ একদিকে ছিলেন নির্জন ও অন্তর্মুখী, অন্যদিকে তাঁর কবিতা ছিল প্রখর সংবেদনশীলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

Advertisment

জন্ম ও শৈশব

১৮৯৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি, ব্রিটিশ ভারতের বরিশালে জন্ম নেন জীবনানন্দ দাশ। তাঁদের আদিনিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের কুমারভোগ গ্রামে। তাঁর পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন শিক্ষক ও ব্রাহ্ম সমাজের নেতা, আর মা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন কবি— 'আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে…'— এই বিখ্যাত কবিতাটির রচয়িতা তিনিই। ছোটবেলা থেকেই কবিতার পরিবেশে বড় হয়েছেন জীবনানন্দ।

আরও পড়ুন- পঞ্জিকায় ২২ না ২৩ অক্টোবর, ভাইফোঁটা কবে? ফোঁটা দেওয়ার শুভ সময়ই বা কখন?

Advertisment

ব্রজমোহন স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা শেষে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্স ও এম.এ করেন। তাঁর প্রথম কবিতা ‘বর্ষ-আবাহন’ প্রকাশিত হয় ১৯১৯ সালে ব্রাহ্মবাদী পত্রিকায়। এরপর থেকেই সাহিত্যজগতে তাঁর যাত্রা শুরু। ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরা পালক’— যা বাংলা সাহিত্যে এক যুগান্তকারী সৃষ্টি। এই বই প্রকাশের পর তিনি নিজের পদবি 'দাশগুপ্ত' বাদ দিয়ে 'দাশ' হিসেবে পরিচিত হতে শুরু করেন। 

আরও পড়ুন- ভাইফোঁটায় ভাইয়ের পাতে কী দেবেন? দেখুন কলকাতার এই বিশেষ খাবার

কঠিন সময় ও পারিবারিক জীবন

শিক্ষকতা, গৃহশিক্ষক, এমনকি বিমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন জীবনানন্দ। পেশাগত অনিশ্চয়তা, আর্থিক সংকট এবং সমাজের অনাগ্রহ তাঁকে এক গভীর নির্জনতার দিকে ঠেলে দেয়। ১৯৩০ সালে তিনি বিবাহ করেন লাবণ্য গুপ্তকে। তাঁদের দুই সন্তান মঞ্জুশ্রী ও সমরানন্দ। ১৯৫৪ সালের ১৪ অক্টোবর সন্ধ্যায়, বালিগঞ্জে রাস্তা পার হতে গিয়ে ট্রামের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন কবি। তাঁকে ভর্তি করা হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। দীর্ঘ ৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২২ অক্টোবর রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে— গত শতকে কলকাতায় ট্রাম দুর্ঘটনায় একমাত্র মৃত্যুবরণকারী মানুষ ছিলেন জীবনানন্দ দাশই!

আরও পড়ুন- কীভাবে শুরু হয়েছিল নৈহাটির বড়মার পুজো, ইতিহাসটা জানেন?

তাঁর কবিতা 'আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে'— যেন আজও আমাদের হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি হয়তো জানতেন, বাংলার মাটি, নদী, কুয়াশা আর গ্রামীণ জীবন থেকে তাঁর অস্তিত্ব কখনও মুছে যাবে না। জীবনানন্দ দাশ শুধু কবি নন, তিনি এক অনুভূতির নাম। তাঁর কলমে বাংলা প্রকৃতি পেয়েছিল নতুন রূপ— রূপসী বাংলার অনন্ত কাব্যে। 

Death Jibanananda Das