Indian Spice Factory Japan: একটুকরো কলকাতা এখন জাপানের ফুকুওকায়! মাটির থালায় পাবেন করলা ভাজা থেকে পুঁইশাক, সবই

Indian Spice Factory Japan: সাত সাগরের পাড়ে জাপানের ফুকুওকায় কলকাতার গন্ধ। বাঙালি খাবার থেকে রাধাকৃষ্ণ, তবলা, সেতার আর আথিতেয়তার বাঙালিয়ানা! সৌজন্যে জাপানি দম্পতি।

Indian Spice Factory Japan: সাত সাগরের পাড়ে জাপানের ফুকুওকায় কলকাতার গন্ধ। বাঙালি খাবার থেকে রাধাকৃষ্ণ, তবলা, সেতার আর আথিতেয়তার বাঙালিয়ানা! সৌজন্যে জাপানি দম্পতি।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Indian Spice Factory Japan

Indian Spice Factory Japan: জাপানে কলকাতার মত রেস্তোরাঁ।

Indian Spice Factory Japan: সাত সমুদ্রের পাড়ে জাপানে গিয়ে কলকাতাকে মিস করছেন? অচেনা পরিবেশ, অন্যধারার মানুষজন, কেমন যেন অন্য গ্রহে চলে আসার মত বলে মনে হচ্ছে? তাহলে চলে আসুন জাপানেরই ফুকুওকার কাসুগায়, 'ইন্ডিয়ান স্পাইস ফ্যাক্টরি'-তে। চমকে উঠবেন! ভাবছেন, কেন বলছি একথা? আসলে এখানে থাকেন সান দম্পতি- সাচিকো আর নাকায়ামা। 

Advertisment

জন্ম-কর্ম জাপানে। কিন্তু, তারপরও তাঁদের স্বদেশের সঙ্গে প্রায় মিল না থাকা কলকাতাকে ভালোবেসে ফেলেছেন জাপানের এই দম্পতি। এবাড়ির গিন্নি সাচিকোর পোশাকের সঙ্গে আর পাঁচ জন জাপানি মহিলার পোশাকের কোনও মিলই খুঁজে পাবেন না। কারণ, সাচিকো প্রতিদিন শাড়ি পড়েন। একেবারে বাংলার মহিলাদের মত কোমরে আঁচল গুঁজে। 

আরও পড়ুন- মাত্র একচামচ নারকেল তেল আর বিটরুটেই বানান প্রাকৃতিক লিপ বাম, ঠোঁট হবে গোলাপি এবং কোমল

Advertisment

তাঁদের বাড়ি কাম রেস্তোরাঁয় ঢুকতে গেলেই হাত জোড় করে বাঙালি কায়দায় নমস্কারের মাধ্যমে স্বাগত জানাবেন সাচিকো আর নাকায়ামা। গৃহকর্তা কোজি নাকায়ামা তো পরিষ্কার বাংলায় আপনাকে জানিয়ে দেবেন, 'নমস্কার! আমার নাম কোজি নাকায়ামা। আমি একজন জাপানি শেফ (রাঁধুনি)।' এতেই চমকে উঠবেন না। কারণ, আপনার চমকের আরও বাকি আছে। এই দম্পতির কলকাতা এতই পছন্দের যে তাঁরা বাড়ির অতিথিদের মাটির থালা আর তার ওপর কলাপাতা রেখে খাবার পরিবেশন করেন। 

আরও পড়ুন- মানসিক চাপ কি বয়স বাড়ার সঙ্গে বাড়ে? কী বলছেন চিকিৎসকরা

ইন্ডিয়ান স্পাইস ফ্যাক্টরি

বাড়ির বাইরে ভারতের পতাকা দিয়ে সাজানো। ঘরে আছে রাধাকৃষ্ণের মূর্তি। এই দম্পতির ভারতীয় সংস্কৃতি এতটাই ভালো লেগে গিয়েছে যে তাঁরা তবলা আর সেতার বাজানোও শিখে নিয়েছেন। মুরক্কু বানানো এখন তাঁদের কাছে হাতের পাঁচ। শুধু তাই? যে সবজিগুলো জাপানে পাওয়া যায় না, সেগুলোর বীজ আমদানি করে জাপানের মাটিতে সেসব ফসল ফলাচ্ছেন কোজিরা। আর, অতিথিরা এলে তাঁদের সেই সব সবজি রেঁধে পরিবেশন করছেন।

এই রেস্তোরাঁয় খেতে বসলে পাতে পাবেন গোবিন্দভোগ চালের ভাত, করলা ভাজা, পুঁইশাক, পুদিনার আচার, আলুভাজা, মুগের ডাল, পাতিলেবু, বেগুন ভাজা। মায় ফিরনি পর্যন্ত মিলবে এখানে। থালাতে সাজিয়ে দেবেন একেবারে বাঙালি খাবার পরিবেশনের কায়দায়। ভাতের চারপাশে খাবার সাজিয়ে দেওয়ার যেমনটা রীতি বাঙালি সংস্কৃতিতে আছে, তেমনভাবেই সাজিয়ে দেবেন কোজি। আর, মাছ এবং ঝোল দেবেন বাটিতে। যেমনভাবে কলকাতায় খেয়ে থাকেন। 

আরও পড়ুন- আজ শুরু ঝুলনযাত্রা, এই উৎসবের পিছনে আছে এক বিরাট কাহিনি

তাঁদের ঘরের তাকে সাজানো আছে মাটির হাঁড়ি থেকে মাটির কাপ। যেগুলো একেবারে কলকাতায় যেমন পাওয়া যায়, অবিকল তেমনটাই দেখতে। কোজি জানিয়েছেন, ওসব কলকাতা থেকেই নিয়ে এসেছেন। ওই ধরনের কোনও একটা কাপেই আপনাকে কেটলি থেকে চা ঢেলে খেতে দেবেন এই দম্পতি। কলকাতার কোনও রাস্তার পাশের দোকানের মতই থালার ওপর কাপে দুধ-চা বা লেবু-চা কাপে ঢেলে যেভাবে খেতে দেওয়া হয়, সেভাবেই। এসব দেখে আপনি উৎফুল্ল হলে, কোজি তো মজা করে বলেই বসবেন, 'ওয়েলকাম! টু কলকাতা।' যা দেখে আপনার মনেই হবে না যে আপনি তিলোত্তমা মহানগরী থেকে সাগরপারের কোনও দেশে চলে এসেছেন। 

আরও পড়ুন- এভাবে তৈরি করুন পটলের তরকারি, বাড়ির লোকজন খেয়ে হাত চাটবে!

এত কলকাতা প্রীতি কেন? সেটাও স্পষ্ট করেছেন কোজি। তিনি বলেন, 'আমি কলকাতায় পাঁচ বছর ছিলাম। কলকাতা, দিল্লি এবং চেন্নাইয়ে জাপানি রেস্তোরাঁ চালাতাম।' আর, তাতেই এত ভালোবাসা জন্মে গেছে যে বাংলার সংস্কৃতিকেই তুলে এনেছেন তাঁর দেশ, জাপানের বুকে।   

Japan spice Indian Factory