Legendary Singer: কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী! এক কানে শুনতে পেতেন না, জিতেছিলেন মন!

Bengali Playback Singer: ছোটবেলায় ডান কানে শুনতে না পেলেও অদম্য জেদ আর প্রতিভায় জয় করেছিলেন সংগীতের দুনিয়া। জন্মদিনে জানুন তাঁর জীবনের লড়াই আর সাফল্যের গল্প।

Bengali Playback Singer: ছোটবেলায় ডান কানে শুনতে না পেলেও অদম্য জেদ আর প্রতিভায় জয় করেছিলেন সংগীতের দুনিয়া। জন্মদিনে জানুন তাঁর জীবনের লড়াই আর সাফল্যের গল্প।

author-image
IE Bangla Lifestyle Desk
New Update
Indian Music

Indian Music: ভারতীয় সংগীতের কদর বিশ্বজুড়ে।

Legendary Singer Sandhya Mukhopadhyay: বাংলা গানের ইতিহাসে তিনি এক অমলিন নাম। জন্ম ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর, কলকাতার ঢাকুরিয়ার ব্যানার্জি পাড়ায়। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন গানের ভীষণ অনুরাগী। সুর কানে এলেই গলা মেলাতেন। তবে জীবনের পথে শৈশব ও কৈশোরে তাঁকে লড়তে হয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ও রোগভোগের সঙ্গে। 

Advertisment

বাঙালির প্রাণের শিল্পী 

তিনি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। একবার অল্প বয়সে দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান। ডাক্তাররা তখন প্রায় বাঁচানোর আশা হারিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের জোরে ও চিকিৎসার ফলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। আবার ১৭ বছর বয়সে এক বিরল ধরনের মাম্পসে আক্রান্ত হন সন্ধ্যা। এই রোগ সারলেও তার প্রভাব চিরস্থায়ী ক্ষতি করে দেয়। তাঁর ডান কান সম্পূর্ণ বিকল হয়ে যায়। আর কোনওদিনই তিনি সেই কানে শুনতে পাননি।

একজন গায়িকার কাছে শ্রবণশক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay) নিজের অদম্য ইচ্ছাশক্তি, প্রতিভা এবং সাধনায় এক কানে শুনেও কয়েক হাজার গান গেয়ে ইতিহাস তৈরি করেছেন। মা-বাবার উৎসাহ এবং দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় সঙ্গীতচর্চার শুরু। প্রথম গুরু ছিলেন যামিনী গঙ্গোপাধ্যায়। পরে প্রশিক্ষণ নেন সন্তোষকুমার বসু, এটি কানন, চিন্ময় লাহিড়ির কাছে।

Advertisment

মাত্র ১৪ বছর বয়সে, ১৯৪৫ সালে তাঁর প্রথম বেসিক রেকর্ড প্রকাশ পায়। ১৯৪৬ সালে সংগীতে পরীক্ষা দিয়ে তিনি প্রথম হন, আর পান 'গীতশ্রী' উপাধি। পরীক্ষকদের মধ্যে ছিলেন কিংবদন্তি উস্তাদ আলাউদ্দিন খান। সেই থেকে তিনি হয়ে গেলেন 'গীতশ্রী' সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ১৯৫০ সালে তিনি পাড়ি জমান মুম্বইয়ে। শচীন দেব বর্মণ, অনিল বিশ্বাস, মদন মোহন—অনেক খ্যাতনামা সুরকারের সুরে গান করেন। ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লেব্যাক করার পরেও তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন, কারণ তাঁর টান ছিল বাংলা গানের প্রতি।

আরও পড়ুন- রাহুর অশুভ প্রভাব কাটাতে দুর্গার এই রূপের জুড়িমেলা ভার! কীভাবে করবেন আরাধনা?

কলকাতায় ফিরে এসে বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দেন। রবীন চট্টোপাধ্যায়, নচিকেতা ঘোষ, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরী—অসংখ্য সুরকারের সঙ্গে কাজ করেছেন। তবে ইতিহাস তৈরি হয় হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর জুটি গড়ে ওঠায়। উত্তম-সুচিত্রা এবং হেমন্ত-সন্ধ্যা জুটি হয়ে ওঠে বাঙালির আবেগের প্রতীক।

আরও পড়ুন- পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসুন ঝান্ডি, মোহময়ী দৃশ্য আর কাঞ্চনজঙ্ঘা মন ভরাবেই

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের সময় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় সমর দাসের সঙ্গে কলকাতায় গড়ে তুলেছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। গান দিয়েই শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। জাতীয় পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণ-সহ বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তবে জীবনের শেষ দিকে প্রস্তাবিত 'পদ্মশ্রী' সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

আরও পড়ুন- পুজোর মধ্যেই বাংলার ছেলের এশিয়া জয়, জোড়া সোনা জিতে দেশের গৌরব অঙ্কিত 

চিরস্মরণীয় গান

তাঁর গাওয়া অজস্র গানের মধ্যে কয়েকটি আজও শ্রোতার হৃদয়ে গেঁথে আছে—

  • এই পথ যদি না শেষ হয়

  • তুমি না হয় রহিতে কাছে

  • গানে মোর কোন ইন্দ্রধনু

  • আমি স্বপ্নে তোমায় দেখেছি

Sandhya Mukherjee
Sandhya Mukherjee: সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন- দুর্গাপূজায় থিমের ছড়াছড়ি, প্রতিমা তৈরি হচ্ছে নানা জিনিস দিয়ে, শাস্ত্রে কী বলা আছে? 

ডান কানে কখনও শুনতে না পেলেও, শুধু বাম কানে শুনে আর মনের জোরে তিনি জয় করেছেন সুরের দুনিয়া। আজকের দিনে নবীন প্রতিভাদের জন্য তাঁর জীবন এক অনুপ্রেরণা।

Sandhya Mukhopadhyay singer