/indian-express-bangla/media/media_files/QAMJvy0si0aLSh4FYq1L.jpeg)
Mahalaya: মহালয়া তিথিতে তর্পণ করার প্রথা প্রচলিত।
Mahalaya 2025: মহালয়া—এই শব্দটি উচ্চারণ করলেই বাঙালির মনে বাজতে শুরু করে এক বিশেষ সুর। যার শুরু হয় ভোর ৪টে ১০-এ, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠের মধ্যে দিয়ে। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের শেষ দিনটি মহালয়া নামে পরিচিত। এই দিনেই শেষ হয় পিতৃপক্ষ এবং সূচনা হয় দেবীপক্ষের। ফলে মহালয়া এক বিশেষ সন্ধিক্ষণ, যা হিন্দু সংস্কৃতিতে গভীর তাৎপর্য বহন করে।
মহালয়ার মাহাত্ম্য
'মহালয়া' শব্দটির অর্থ নিয়েও নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। কেউ বলেন, এটি 'মহান আলয়' অর্থাৎ দেবীর আশ্রয়। আবার অনেকে বলেন, এটি পিতৃলোকের মহান আবাস। যেহেতু মহালয়া পিতৃপক্ষের সমাপ্তি এবং দেবীপক্ষের সূচনালগ্ন, তাই এই দিনটি দ্বিমুখী তাৎপর্যে ভরপুর। শাস্ত্রমতে, পিতৃপক্ষজুড়ে পিতৃপুরুষেরা পৃথিবীর নিকটবর্তী হন। তাঁদের উদ্দেশ্যে তর্পণ বা জলদানের মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। তর্পণের মন্ত্রে বলা হয়েছে— দেবতা, ঋষি, পিতৃপুরুষ এবং সকল জীব যেন আমাদের প্রদত্ত জল আর অন্নে তৃপ্ত হন। এর মাধ্যমে কেবল পূর্বপুরুষ নয়, সমগ্র বিশ্বজনীন একাত্মতার কথাই তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন- কবে মহালয়া? জানুন এই তিথিতে কী করবেন, তর্পণের সঠিক সময় কখন?
এবং
আরও পড়ুন- মহালয়া থেকে লক্ষ্মী, পুজোপর্বে যাবতীয় তিথি রাখুন আপনার নখদর্পণে!
শুভ না অশুভ?
মহালয়া শুভ না অশুভ তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই মতভেদ রয়েছে। একদল মনে করেন, এটি শুভ নয় কারণ এই দিনে মূলত পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয়, যা শোকস্মৃতির সঙ্গে জড়িত। অপরপক্ষে অনেকে বলেন, হিন্দু শাস্ত্রে যে কোনও শুভ কাজের সূচনাতেই পূর্বপুরুষকে স্মরণ করা হয়। তাই এই দিনকে অশুভ বলা যায় না। আসলে, মহালয়ার আসল তাৎপর্য মিলনের মধ্যে। মানুষ এবং পূর্বপুরুষ, মানুষ ও দেবশক্তি—সব কিছুর মধ্যে এক গভীর সংযোগের বার্তা দেয় এই তিথিটি।
আরও পড়ুন- ৫১ সতীপীঠ! যেখানে দেবীর দেহাংশ পড়েছিল, এখন কী নাম সেসব মহাপীঠের?
এবং
আরও পড়ুন- জাগ্রত 'বড় কালী' পুজো, ভিড় করেন অসংখ্য ভক্ত, দেবীর কাহিনি শুনলে গায়ে কাঁটা দেবে!
মহিষাসুরমর্দিনী ও মহালয়া
যেটা বাঙালিকে ভোরবেলা রেডিওতে 'মহিষাসুরমর্দিনী' মনে করিয়ে দেয়। বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ, সঙ্গে বাণীকুমারের লেখা ও সঙ্গীতায়োজন—এই অনুষ্ঠান ছাড়া মহালয়া কল্পনাই করা যায় না। ১৯৩২ সাল থেকে এই সম্প্রচার শুরু হয় এবং ১৯৬৬ সালের সংস্করণটি আজও বাজানো হয়। মহালয়ার ভোরবেলা এই অনুষ্ঠান না শুনলে বাঙালির মনে দেবীপক্ষের সূচনা যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায়। বাঙালির কাছে মহালয়ার তাৎপর্য হল পিতৃপক্ষের অবসান, মানে পিতৃপুরুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা। দেবীপক্ষের সূচনা মানে শারদোৎসবের আগমনী সুর। রেডিওয় 'মহিষাসুরমর্দিনী' মানে আবেগ, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অনন্য মেলবন্ধন। সুতরাং, মহালয়া কেবল একটি তিথি নয়, এটি বাঙালির আবেগের দিন। শোক ও আনন্দ, স্মরণ এবং উৎসব—এই দুইয়ের মিলনই মহালয়াকে গরিমা দিয়েছে।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us