Rare Animals: ভারত কেবলমাত্র সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের দেশ নয়, এটি বন্যপ্রাণীর ক্ষেত্রেও একটি সম্পদভাণ্ডার। হিমালয় থেকে আন্দামান, পশ্চিমঘাট থেকে থার মরুভূমি — ভারতের বিস্তৃত ও বৈচিত্র্যময় ভূপ্রকৃতি এমন বহু প্রজাতির আশ্রয়স্থল যা বিশ্বের আর কোথাও দেখা যায় না।
১. মালাবার সিভেট (Malabar Civet)
বিশ্বের সবচেয়ে বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। নিশাচর এই প্রাণীটি কেরালা ও কর্ণাটকের পশ্চিমঘাটে পাওয়া যায়। একে দেখতে পাওয়া খুবই দুর্লভ।
আরও পড়ুন- বৃষ্টিতে কাপড় শুকোচ্ছে না? এই ৫ ঘরোয়া টিপসেই ভেজা জামাকাপড় হবে একদম শুকনো!
২. বেগুনি ব্যাঙ (Purple Frog)
বর্ষাকালে মাত্র কয়েক দিনের জন্য মাটির নীচ থেকে বেরিয়ে আসে। প্রায় ১৩০ মিলিয়ন বছরের বিবর্তনের ইতিহাস বহন করে এই ব্যাঙ। এটি পশ্চিমঘাটে পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন- বৃষ্টিতে বাইরে জল জমেছে, ঘরে কেঁচো-শামুক ঢুকছে? সহজে করুন সমাধান!
৩. সিংহ-লেজওয়ালা ম্যাকাক (Lion-tailed Macaque)
একটি অনন্য বানর প্রজাতি যেটি তার সিংহের মত লেজ এবং রুপোলি কেশরের জন্য বিখ্যাত। শুধুমাত্র ঘন বৃষ্টিঅরণ্যেই এরা থাকে।
আরও পড়ুন- চুল পেকে যাচ্ছে? রাসায়নিক ছাড়াই ঘরে তৈরি এই হেয়ার কালার লাগান, রং ফিরবে, ঘন হবে চুলও!
৪. ভারতীয় প্যাঙ্গোলিন (Indian Pangolin)
আঁশে ঢাকা একটি নিশাচর প্রাণী এই প্যাঙ্গোলিন। পিঁপড়ে ও উইপোকা খায়। দুঃখজনকভাবে, এর আঁশের কারণে ব্যাপকভাবে চোরাশিকার হয়।
আরও পড়ুন- বৃষ্টির দিনে গরম মুখরোচক এই ৭টি রান্না ট্রাই করুন, প্রশংসায় ভরাবে পরিবার!
৫. নামদাফা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি (Namdapha Flying Squirrel)
বিশ্বের অন্যতম রহস্যময় প্রাণী। একে কেবলমাত্র অরুণাচলের নামদাফা জাতীয় উদ্যানে পাওয়া যায়। গবেষকদের অনেকের কাছেও এই প্রাণী প্রায় অজানা।
৬. হাঙ্গুল বা কাশ্মীর স্ট্যাগ (Hangul / Kashmir Stag)
ভারতের একমাত্র স্থানীয় লাল হরিণ। শুধুমাত্র কাশ্মীরের দাচিগাম জাতীয় উদ্যান (Dachigam National Park)-এ দেখা যায়। একে রক্ষা করতে বড় আকারের সংরক্ষণ প্রকল্প চলছে।
৭. নিকোবর মেগাপোড (Nicobar Megapode)
একটি মাটির ঢিবি তৈরির মাধ্যমে ডিম ফুটিয়ে ছানার জন্ম দেয় এই প্রাণী। এই অনন্য পাখিটি কেবলমাত্র নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যায়।
৮. হিমালয় নেকড়ে (Himalayan Wolf)
গ্রে উলফের একটি স্বতন্ত্র উপ-প্রজাতি এই হিমালয়ান নেকড়ে। উচ্চভূমির ঠান্ডা ও শুকনো পরিবেশে পালিত হয়। জিনগতভাবে এটি অন্য নেকড়েদের থেকে আলাদা।
৯. আন্দামানের সাদা মাথাওয়ালা স্টারলিং (Andaman White-headed Starling)
এটি আন্দামান দ্বীপের স্থানীয় এবং সীমিত পরিসরে পাওয়া যায়। এর উজ্জ্বল সাদা মাথা এবং কণ্ঠস্বরের জন্য একে খুব সহজেই চেনা যায়।
১০. পিগমি হগ (Pygmy Hog)
পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট বন্য শূকর। আগে বিলুপ্ত বলে মনে করা হত, কিন্তু এখন আসামের মানস ন্যাশনাল পার্ক (Manas National Park)-এ ফের দেখা যাচ্ছে।
এই সব প্রাণীগুলোর সংরক্ষণ কেন জরুরি?
এই প্রাণীগুলির বেশিরভাগই বিপন্ন বা অত্যন্ত বিপন্ন তালিকায় রয়েছে। এদের আবাসস্থল ধ্বংস, জলবায়ু পরিবর্তন, চোরাশিকার — সবকিছুই এদের অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলছে।
কোথায় দেখা যায়?
-
ঘাট অঞ্চলে — বেগুনি ব্যাঙ, মালাবার সিভেট
-
উত্তর-পূর্ব ভারত — পিগমি হগ, উড়ন্ত কাঠবিড়ালি
-
কাশ্মীর ও হিমালয় অঞ্চল — হিমালয় নেকড়ে, হাঙ্গুল
-
দ্বীপপুঞ্জ — নিকোবর মেগাপোড, সাদা মাথাওয়ালা স্টারলিং
এই প্রাণীগুলি শুধু ভারতের বন্যপ্রাণের গর্বই নয়, আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্যেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমাদের দায়িত্ব এই প্রজাতিগুলিকে সংরক্ষণ করা এবং প্রাকৃতিক পরিবেশে তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করা। আপনি যদি প্রকৃতি বা বন্যপ্রাণ-প্রেমী হন, তবে ভারতীয় জাতীয় উদ্যানগুলিতে ভ্রমণ করে এই বিরল জীবনের সাক্ষী হতে পারেন।