/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/16/ronald-ross-2025-09-16-04-17-35.jpg)
Ronald Ross: রোনাল্ড রস।
Nobel Prize Ronald Ross: ১৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২। দিনটি ইতিহাসে অমর হয়ে আছে চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক মহীরুহের প্রয়াণদিন হিসেবে। এই দিনে যুক্তরাজ্যের পুটনি হিথে মৃত্যুবরণ করেন স্যার রোনাল্ড রস, যিনি ম্যালেরিয়ার সংক্রমণের রহস্য উদঘাটন করে বিশ্বকে চমকে দিয়েছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
রোনাল্ড রস ১৮৫৭ সালের ১৩ মে ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর আধিকারিক। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ ছিল। পরবর্তীতে তিনি লন্ডনে চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন এবং ধীরে গবেষণার জগতে প্রবেশ করেন।
আরও পড়ুন- প্রায় ৯০ শতাংশ ভক্ত বিশ্বকর্মার জন্মবৃত্তান্ত জানেন না, দেবশিল্পীর সঙ্গে রান্নাপূজার সম্পর্ক কী?
১৯ শতকের শেষদিকে ম্যালেরিয়া ছিল বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর মহামারী। অনেক বিজ্ঞানীই চেষ্টা করছিলেন রোগটির কারণ ও সংক্রমণ বোঝার। অবশেষে ১৮৯৭ সালে রোনাল্ড রস প্রমাণ করেন যে অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়ার পরজীবী মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এই আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন যুগের সূচনা করে এবং বিশ্বজুড়ে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের পথ উন্মুক্ত হয়।
আরও পড়ুন- বিশ্বকর্মার সঙ্গে তাঁর ছেলেরাও পুজো পেতেন কলকাতায়, ছিলেন রামায়ণেও!
১৯০২ সালে রোনাল্ড রস চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পান। এরপর তিনি আরও বহু সম্মাননা পান—১৯১১ সালে নাইট উপাধি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিক সমাজে সম্মানসূচক সদস্যপদ, এমনকি বেলজিয়ামের 'অর্ডার অফ লিওপোল্ড II' সম্মানও পান।
আরও পড়ুন- বাঙালি আর অবাঙালি বিশ্বকর্মার চেহারা একদম আলাদা, জানেন কেন?
শেষ বয়সে ব্যক্তিগত জীবন
রোনাল্ড রস জীবনে বহু আনন্দ-বেদনার মধ্য দিয়ে গেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তাঁর বড় ছেলে মারা যান, পরে বড় মেয়েকেও হারান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তাঁর জীবন আরও একাকী হয়ে ওঠে। যদিও তিনি বিপুল সম্মান পেয়েছেন, তবু জীবনের শেষভাগে মনে করতেন তাঁর কাজের যথেষ্ট আর্থিক মূল্যায়ন হয়নি। রস শুধুমাত্র বিজ্ঞানী নন, তিনি ছিলেন এক বহুমুখী প্রতিভা। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, সংগীত—প্রায় সবক্ষেত্রেই তিনি কাজ করেছেন। তাঁর লেখা 'দ্য চাইল্ড অফ ওশান', 'দ্য প্রিভেনশন অফ ম্যালেরিয়া' এবং আত্মজীবনী 'দ্য মেমোয়ার্স' এখনও গবেষক ও সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ দলিল।
আরও পড়ুন- বিশ্বকর্মার সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ হয়েছিল বেহুলার? জানুন সে কাহিনি
১৯২৭ সালে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। ১৯৩১ সালে তাঁর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর রস আরও ভেঙে পড়েন। অবশেষে ১৯৩২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর, লন্ডনের রস ইনস্টিটিউটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁকে পুটনি ভেল কবরস্থানে স্ত্রীর পাশে সমাহিত করা হয়। রোনাল্ড রসের আবিষ্কার ভবিষ্যতের বিজ্ঞানীদের জন্য গবেষণার নতুন পথ খুলে দিয়েছে। আজও ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাঁর নাম অমর হয়ে আছে।
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)
Follow Us