Snake Eating Birds: পাখি মানেই কি শুধুই মিষ্টি ডাক, রঙিন পালক আর আকাশে ওড়া? না! কিছু পাখি আছে যারা সরাসরি সাপের মুখোমুখি হয়—তাও শুধু আত্মরক্ষার জন্য নয়, বরং খাওয়ার জন্য! ভয়ঙ্কর বিষধর সাপও এদের কাছ থেকে রেহাই পায় না। আজ আমরা এমনই ৭টি অদ্ভুত ও সাহসী পাখির পরিচয় দেব, যারা সত্যিকারের ‘স্নেক কিলার’।
১. Secretary Bird (সেক্রেটারি বার্ড) – আফ্রিকার সাপ-ঘাতক
এই লম্বা পা-ওয়ালা, বক ও বাজের মিশ্র রূপের পাখি আফ্রিকার সাভানায় রাজত্ব করে। সাপ মারার জন্য এদের কিক এতটাই শক্তিশালী যে তা এদের শরীরের ওজনের পাঁচ গুণ। কোবরা থেকে শুরু করে ভাইপার, সবই এদের খাবার। মাটিতে হাঁটতে হাঁটতে এরা সাপ দেখে, লাফিয়ে উঠে এমনভাবে লাথি মারে যে সাপটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই শেষ।
২. Red-tailed Hawk (লাল-লেজ বাজ) – আমেরিকার আকাশ-শিকারি
উত্তর আমেরিকায় দেখা মেলে এই বাজের, যারা অত্যন্ত তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন ও চটপটে শিকারি। সাপের মাথার দিকটা লক্ষ্য করে এরা দ্রুত আক্রমণ করে, যাতে সাপ কামড়াতে না পারে।এদের মগজ ঠান্ডা, কিন্তু পায়ের চাপ ভয়ানক।
৩. Brown Snake Eagle (বাদামী স্নেক ঈগল)
এই ঈগলের পা মোটা স্কেল-কাভারড, যেন সাপের কামড় প্রতিরোধ করার জন্য প্রকৃতির তৈরি এক ধরনের বর্ম। আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে একে সাপ বিশেষজ্ঞ পাখি হিসেবে গণ্য করা হয়। এরা সাপের মাথা কামড়ে ধরে এবং খোলা আকাশে ওড়ার সময়ও সাপ তুলে নিয়ে যায়।
৪. Crested Caracara (ক্রেস্টেড কারাকারা) –
দক্ষিণ আমেরিকা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাংশে দেখা যায়। এই পাখি অনেকটা শকুনের মত। সাপ দেখতে পেলে দুর্দান্ত শিকার করে। সাপের গলায় কামড় দিয়ে সাপকে নিস্তেজ করে এবং তারপর সহজে গিলে নেয়।
৫. Great Horned Owl (গ্রেট হর্নড পেঁচা) – নীরব ঘাতক
রাতের অন্ধকারে যখন সবাই ঘুমোয়, তখন এরা শিকারে নামে। এই পেঁচা এমনভাবে সাপকে ধরতে জানে যে সে বুঝতেই পারে না কোথা থেকে আক্রমণ হচ্ছে। শক্তিশালী পাঞ্জা আর পুরু পালক এদের সাপের কামড় থেকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুন- বয়স ৬০ পেরিয়েছে, ঘুম আসছে না? আয়ুর্বেদিক টিপসেই প্রাণভরে ঘুমোন
৬. Roadrunner (রোডরানার) – কার্টুনের পাখি, বাস্তবে সাপখাদক
আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং মেক্সিকোতে দেখা যায়। এই পাখি তার দ্রুত দৌড়ের জন্য বিখ্যাত, কিন্তু সাপ ধরে পাথরে আছড়ে মেরে খাওয়া এর আসল গুণ। এরা কখনও জোড়ায় শিকার করে — যাকে বলা যায় 'টিমওয়ার্ক স্নেক হান্টার'।
আরও পড়ুন- অ্যালো ভেরা জেল নয় তেল, মাখলেই রোদে পোড়া দাগ, ব্রণ ও র্যাশ হবে উধাও, শিখে নিন ঘরেই বানানোর সহজ পদ্ধতি
৭. Serpent Eagle (সার্পেন্ট ঈগল) – নামেই সব স্পষ্ট
ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বনাঞ্চলে পাওয়া যায়। এরা সাপ খাওয়াকেই খাদ্যচক্রের মূল হিসেবে ধরে নিয়েছে। এদের শিকার পদ্ধতি, হাওয়ায় উড়ে গিয়ে হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়া। এই ঈগল সাহসী, দৃষ্টিশক্তি তিক্ষ্ণ এবং সাপের বিষকে ভয় পায় না।
আরও পড়ুন- এটি হলুদ গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে সপ্তাহে একবার লাগান, আপনার ত্বক হবে উজ্জ্বল, পরামর্শ চিকিৎসকের
প্রকৃতির স্নেক কিলারদের গুরুত্ব
এই পাখিগুলি শুধু সাহসী নয়, বরং ইকোসিস্টেম রক্ষায় একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সাপের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে এরা ফসলের সুরক্ষা, মানুষের নিরাপত্তা এবং জীববৈচিত্র্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই সব পাখিদের পাশাপাশি, কখনও কখনও, কাকের মতো দলগত পাখিরাও বিষাক্ত সাপের ওপর হামলা করে, গ্যাং অ্যাটাক চালিয়ে নিঃশেষ করে ফেলে।
আরও পড়ুন- আর্থ্রাইটিস থেকে স্ট্রোক, নিরাময় হবে সহজে! বাড়িতেই বানান আয়ুর্বেদিক তেল
যেখানে মানুষ সাপ দেখলেই দূরে সরে যায়, এই পাখিরা এগিয়ে আসে শিকারের জন্য। তারা সত্যিই প্রকৃতির দুর্ধর্ষ যোদ্ধা