Vitamin B6 Toxicity: ভিটামিন বি৬ একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈব উপাদান যা আমাদের শরীরের পরিপাক, স্নায়ুতন্ত্র এবং রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এটি বেশ কিছু খাবার, যেমন মাছ, মাংস, ফল এবং শাকসবজিতে পাওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতন অনেকেই অতিরিক্ত শক্তি ও মানসিক ফোকাসের জন্য বিভিন্ন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করছেন, যার মধ্যে অন্যতম হল ভিটামিন বি৬। তবে অতিরিক্ত ডোজে এই ভিটামিন শরীরের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
ভিটামিন বি৬ বিষক্রিয়ার আশঙ্কা কোথা থেকে?
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার থেরাপিউটিক গুডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (TGA) এক সতর্কবার্তা জারি করেছে। তারা বলেছে, উচ্চমাত্রায় নিয়মিত ভিটামিন বি৬ গ্রহণ করলে স্নায়ুর ক্ষতির মত গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। এই আশঙ্কাকেই এতদিন উপেক্ষা করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন- প্রতিদিন ঘি দিয়ে কফি ৩ মাস পান করলে শরীরে কী হয়? ওজন কমে নাকি বাড়ে? জানুন বিশেষজ্ঞের মতামত
একজন রোগ বিশেষজ্ঞের মতে, রক্ত পরীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে প্রায় ৪.৫% মানুষের মধ্যে ভিটামিন বি৬ এর মাত্রা ছিল এত বেশি যে স্নায়ুর ক্ষতির ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট।
ভিটামিন বি৬ এর ৩টি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, যার দিকে নজর দরকার:
১. হাত ও পায়ে অসাড়তা বা ঝিঁ ঝিঁ ভাব:
এটি পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির অন্যতম লক্ষণ। স্নায়ুর ক্ষতির ফলে হাত-পায়ে অবশ ভাব অনুভূত হতে পারে বা নড়াচড়ায় অসুবিধা হতে পারে।
আরও পড়ুন- আপনার কি রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়? সপ্তাহে ৩ দিন খান এই ৩টি সবজি, পরামর্শ চিকিৎসকের
২. দুর্বলতা ও ভারসাম্যহীনতা:
পেশী দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, যার ফলে হাঁটাচলায় বা দৈনন্দিন কাজে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে ওঠে।
আরও পড়ুন- চুলের বৃদ্ধির জন্য নারকেল তেলের সঙ্গে মেশান এই ৫ ঘরোয়া উপাদান, ফল মিলবে দ্রুত!
৩. অম্বল ও বমি বমি ভাব:
বিষক্রিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে অনেক সময় বমি বমি ভাব, অম্বল কিংবা হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত ভিটামিন বি৬ কীভাবে বিষক্রিয়া সৃষ্টি করে?
বেশিরভাগ সাপ্লিমেন্টে ৫০ মিলিগ্রাম থেকে ২০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ডোজ থাকে, যেখানে দৈনিক প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজন মাত্র ১.৩-১.৭ মিলিগ্রাম। ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ডোজ নিলে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন বাধ্যতামূলক।
আরও পড়ুন- চুলের বৃদ্ধির জন্য নারকেল তেলের সঙ্গে মেশান এই ৫ ঘরোয়া উপাদান, ফল মিলবে দ্রুত!
উচ্চমাত্রায় ভিটামিন বি৬ শরীরে জমা হয়ে গিয়ে স্নায়ুগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে স্নায়ু দীর্ঘ সময়ের জন্য বিপর্যয়ের মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন- সামুদ্রিক শৈবাল ও অ্যালোভেরা জেলের এই ফেস প্যাক লাগান, পার্লার ছাড়াই মিলবে উজ্জ্বলতা
সাবধানতার জন্য কী করণীয়?
-
যদি আপনি ছয় মাসের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন ৫০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ডোজ ভিটামিন বি৬ নেন, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
-
ভিটামিন বি৬ যুক্ত এনার্জি ড্রিংক বা মাল্টিভিটামিন একসঙ্গে না খাওয়াই ভালো।
-
কোন সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন, প্রতিদিন কত মিলিগ্রাম খাচ্ছেন— তার হিসাব রাখুন।
ভিটামিন বি৬ শরীরের জন্য দরকারি হলেও ‘অতিরিক্ত ভালো জিনিসও অনেক সময় খারাপ হতে পারে’। তাই, নিয়মিত সাপ্লিমেন্ট নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং উপসর্গগুলি সতর্কতার সঙ্গে খতিয়ে দেখুন। আপনার স্বাস্থ্য নিরাপদ রাখার জন্য সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।