/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/21/senior-citizens-day-2025-08-21-02-53-29.jpg)
ছবি- স্ক্রিনগ্যাব
Senior Citizens Day: একঠোঙা মুড়ি চানাচুর আর হাতে ২০০ টাকা ধরিয়ে বৃদ্ধ বাবা মাকে বারুইপুর স্টেশনের ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ফেলে দিয়ে গিয়েছিল গুণধর ছেলে। বাবার মৃত্যু হয় সেখানেই। শেষকৃত্য করেছে রেল এবং রাজ্য পুলিশ। উপরে সেই বৃদ্ধ দম্পতির ছবি। ছবিটি স্বাধীনতা দিবস, ১৫ আগস্ট সন্ধের। এই প্রবীণ মানুষটি তারপর মারা যান।
বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসের গুরুত্ব
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এই খবর দেখে শিউড়ে উঠেছিলেন অনেকেই। যা তাঁদের বুঝিয়ে দিয়েছে বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবসের গুরুত্ব আজ ঠিক কতটা। প্রতি বছর ২১শে আগস্ট বিশ্বব্যাপী পালিত হয় বিশ্ব প্রবীণ নাগরিক দিবস (World Senior Citizens Day)। এই দিনটির উদ্দেশ্য হল, প্রবীণ নাগরিকদের অবদানকে স্বীকৃতি জানানো এবং তাঁদের জীবনের নানা সমস্যার প্রতি সমাজকে সচেতন রাখা।
আরও পড়ুন- আপনার বাড়ি, অফিসে গণেশের কোন মূর্তি পুজো শুভ? গণেশ চতুর্থীতে মাথায় রাখুন এই ৫টি বিষয়
১৯৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগন প্রথমবার এ দিবসটি চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। পরে ১৯৯০ সালে রাষ্ট্রসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে এটিকে আন্তর্জাতিক প্রবীণ নাগরিক দিবসের স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট, বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ৩৪তম প্রবীণ নাগরিক দিবস।
আরও পড়ুন- ঘরেই বানান রেস্তোরাঁর স্বাদের পালং পনির, বাড়ির লোক ধন্যধন্য করবে
ভারতে প্রবীণদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ২০১১ সালের আদমশুমারিতে দেশের প্রবীণ নাগরিক ছিল ১০ কোটি ৩৮ লক্ষ (৮.৬%)। একটি প্রতিবেদন (২০২০) অনুসারে ২০৩১ সালের মধ্যে ভারতে প্রবীণ জনসংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ১৯ কোটি ৩৪ লক্ষ। অর্থাৎ আগামী বছরগুলোতে ভারতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোয় প্রবীণদের ভূমিকা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এই পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিচ্ছে যে স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, সামাজিক স্বীকৃতি এবং পরিবারের ভেতরে প্রবীণদের সম্মান বজায় রাখার মত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা দিনকে দিন বাড়ছে।
আরও পড়ুন- বাথরুমে স্নান করছিলেন যুবক! আচমকা জানালা দিয়ে হানা বাঘের! ভয় ধরানো ভিডিও মুহূর্তে ভাইরাল
ভারতে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য নানা সরকারি প্রকল্প আছে। কিন্তু, সেগুলো যথেষ্ট নয়। তার ফলে, প্রবীণদের অনেকেই অবহেলা, একাকীত্ব, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং স্বাস্থ্য সমস্যার সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন। অনেক সময় সন্তানরা তাঁদের অবহেলা করে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ায় তাঁদের মানসিক কষ্ট বাড়ছে। শারীরিক অসুস্থতা ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়া তাঁদের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সমাজে অনেকেই প্রবীণদের বোঝা হিসেবে দেখেন, যা তাঁদের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করছে।
আরও পড়ুন- দেখতে স্বাস্থ্যকর, কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এই খাবারগুলো থেকে দূরে থাকুন
রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রবীণদের সংখ্যা ১৫০ কোটি ছাড়াবে। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ স্বল্পোন্নত দেশে বসবাস করবেন। ফলে প্রবীণদের কল্যাণে শক্তিশালী সামাজিক ও স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি করা অপরিহার্য। প্রবীণরা শুধু পরিবার নয়, গোটা সমাজের অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার। তাদের জীবনের শিক্ষা, মূল্যবোধ এবং দিকনির্দেশনা তরুণ প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। তাই পরিবার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রবীণদের সম্মান জানানো এবং তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।