তাঁদের দু’জনের সুসম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। একে অপরের ডাকে সবসময়ই সাড়া দেন। ক’দিন আগে ‘বন্ধু’ কেজরিওয়ালের জয়ে ‘উচ্ছ্বসিত’ ছিলেন মমতা। শুভেচ্ছা বিনিময় তো হয়েইছিল। তারপর আবার দু’জনের দলের ভোটের কাণ্ডারীও এক, প্রশান্ত কিশোর। এমন ‘পরম বন্ধুত্বপূর্ণ’ সম্পর্কের সুতো কি এবার তবে আলগা হচ্ছে? এমন জল্পনাতেই বুঁদ বঙ্গ রাজনীতি। দিল্লি ভোটে কেরামতি দেখানোর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যেই নিজেদের বিস্তার বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল।
জানা যাচ্ছে, দিল্লিতে আম আদমি পার্টির সাফল্য বাংলার ঘরে ঘরে প্রচার করতে এবার উঠেপড়ে লেগেছে কেজরির দল। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত চলবে এই বিশেষ অভিযান। একুশে বাংলার বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোলেও আপাতত আপের নজরে বাংলার পুরভোট। তার আগে বাংলায় দলের সংগঠনের ভীত আরও মজবুত করার কাজই শুরু করে দিয়েছে আপ শিবির।
আরও পড়ুন: শহরে ছয়লাপ শোভনের পোস্টার, ‘খুশিতে ডগমগ’ বৈশাখী!
এ প্রসঙ্গে আম আদমি পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য ইউনিটের সম্পাদক জর্জ গোমস বলেন, ‘‘দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্যের পর সকলেরই প্রত্যাশা রয়েছে, যাতে আমরা ভোটে লড়ি। তবে এখানে (বাংলায়) আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। দলীয় সংগঠন ছাড়া ভোটে লড়তে পারব না। সে কারণে আমরা প্রথমে মানুষের কাছে পৌঁছোতে চাইছি। আমাদের সাফল্য তুলে ধরতে চাইছি। একইসঙ্গে আপ সরকার কেমন সে ব্যাপারেও জনসাধারণকে অবগত করছি’’।
আরও পড়ুন: দাদাকে বার্তা? তৃণমূলে যোগ দিলেন বিরোধী দলনেতার ভাই
এর আগে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জর্জ গোমস বলেছিলেন, “সংগঠন নেই বলে শুধু অজুহাত দিলে চলে না। লোকবল, অর্থবল নেই, এসব বললে হয় না। আমরা মনে করি, পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রতি আমাদেরও দায়বদ্ধতা রয়েছে। দিল্লির ভোটের ফলের পর তা আরও বাড়ল। সেজন্য আমরা কিছু আউটলাইন পরিকল্পনা করেছি। যদিও সেগুলি প্রাথমিক স্তরে আছে। সব ঠিকমতো চললে আমরা ২০২১ বিধানসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যেতে পারব”।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে এখনও তেমনভাবে আপের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুসম্পর্কের কথা সর্বজনবিদিত। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দু’জনের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্টই প্রশান্ত কিশোর। পিকের কৌশলেই দিল্লিতে বাজিমাৎ করেছে কেজরির দল। অন্যদিকে, উনিশের নির্বাচনে ধাক্কা সামলে একুশে ঘুরে দাঁড়াতে পিকেরই হাত ধরেছে মমতা বাহিনী। এমতাবস্থায় বাংলায় ভোটের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে আপ দাঁড়ালে, সেক্ষেত্রে প্রশান্ত কিশোর ভার্সাস প্রশান্ত কিশোর লড়াই হতে পারে, যা উল্লেখযোগ্য বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের। তবে দিল্লিতে আপের ভোটকুশলী পিকে, আর বাংলায় মমতার। সেক্ষেত্রে এমনটা না হওয়ারই সম্ভাবনা। অন্যদিকে, বাংলায় বিরোধী শক্তি হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বিজেপি। বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্রে আপের মতো দল কতটা বিরোধী প্রতিপক্ষ হিসেবে জায়গা করতে পারবে সে ব্যাপারেও সন্দিহান রাজনৈতিক মহলের একাংশ। এমন প্রেক্ষাপটে মমতার রাজ্যে আপের এই নয়া কৌশল নয়া মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন