অনুব্রত মন্ডলের প্রসঙ্গ এলেই 'খোঁচা' দিতে ছাড়ছেন না তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এর আগে বগটুইয়ের ঘটনার সময় অনুব্রত মন্ডলকে 'বড় নেতা' বলে সম্বোধন করেছিলেন কুণাল। এদিন গরুপাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা না দিয়ে এসএসকেএমের উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র স্পষ্ট বলেছেন, অনুব্রত মন্ডলের বিষয়ে মন্তব্য করব না। একইসঙ্গে রীতিমত নিজের ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদারহণ টেনে বিশেষ ইঙ্গিত দেওয়ার চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেননি।
এর আগেও এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মন্ডল। এমনকী আদালতেও জানিয়েছিলেন তাঁর শরীর অসুস্থ। অন্যদিকে সিবিআইয়ের আইনজীবী হাইকোর্টে জানিয়েছেন, সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন অনুব্রত মন্ডল। সিবিআই ডাকলেই শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গতকাল, মঙ্গলবার কলকাতায় এসেছেন অনুব্রত মন্ডল। বুধবার নিজাম প্যালেসে না গিয়ে অনুব্রত কালো কাঁচের কালো গাড়ি নিয়ে সোজা চলে যান এসএসকেএমে। ভর্তি হয়ে যান উডবার্ণ ওয়ার্ডে। এই প্রসঙ্গে অনুব্রতর আইনজীবী ও চিকিৎসক দেখছেন বলে জানিয়ে দেন দলের মুখপাত্র কুণাল। বরং প্রসঙ্গ টেনে আনেন নিজের ও অভিষেকের।
শুধু বীরভূম জেলার দলের সভাপতি নন, অনুব্রত মন্ডল তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতিরও সদস্য। অন্যদিকে কুণাল ঘোষ দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র। যখন কেন্দ্রীয় সংস্থা ডেকেছে তখনই নিজে হাজিরা দিয়েছেন, সময়ের পাঁচ মিনিট আগে পৌঁছেছেন বলেও মন্তব্য করেছেন কুণাল। তিনি নিজে কোনও অন্যায় করেননি বলেও দাবি করেছেন কুনাল। রাজনৈতিক মহলের মতে, অনুব্রত প্রসঙ্গে এমন নজির টেনে মন্তব্য কী সততই 'ব্যক্তিগত'। এর আগে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ব্যক্তিগত মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল। ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে মানতে চাননি সাংসদ কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার অনুব্রত প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত মন্তব্য করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরলেন কুণাল। শুধু নিজের উদাহরণ টানেনি, এমনকী তিনি দলের শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায়ের জিজ্ঞাসাবাদে হাজিরার প্রসঙ্গও তুলেছেন।
রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, দলেরই শীর্ষ নেতা অনুব্রত মন্ডল প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য কেন করলেন কুণাল ঘোষ? তৃণমূলের রাজ্য় সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্রের এমন মন্তব্য শুধুই কী দলের নয়া কৌশল? নাকি এর পিছনে দলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণ রয়েছে। বগটুই কাণ্ডে মুখ পুড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের, সেখানেও নাম জড়িয়েছে অনুব্রতর, একইসঙ্গে গরুপাচার কাণ্ডে পরপর পাঁচবার তাঁকে তলব করেছে সিবিআই। কলকাতায় এসেও সিবিআই দফতরে না গিয়ে উডবার্ণ ওয়ার্ডে ভর্তি হন অনুব্রত। অভিজ্ঞ মহলের মতে, তাহলে কী সুকৌশলে দল অনুব্রতর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছে? নাকি দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে বিষয়টা ভাসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
*অনুব্রত মণ্ডল সংক্রান্ত আরও খবর পড়ুন*
(হৃদযন্ত্রে মিলেছে সমস্যা, CBI চাইলে SSKM-এ এসে কথা বলতে পারে, চিঠিতে জানিয়েছেন অনুব্রত)
(‘সন্ত্রাসীদের লিডার দাদা-দিদি করল সেভ’, কেষ্ট SSKM-এ যেতেই গান বাঁধলেন কবিয়াল বিধায়ক)