Mann Ki Baat: 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' থেকে শুরু করে 'গেমিং-অ্যানিমেশন', 'মন কি বাত' অনুষ্ঠানে এই 'বড়' কথাগুলি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
মন কি বাত অনুষ্ঠানে ১১৫ তম পর্বে 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। আরও বলেন, 'অ্যানিমেশন' জগতে নতুন 'বিপ্লব' আনতে চলেছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার মন কি বাত অনুষ্ঠানের ১১৫ তম পর্বে দেশের জনগণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন। এসময় তিনি 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' নিয়ে তাঁর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অ্যানিমেশনের জগতে মেড ইন ইন্ডিয়া, মেড বাই ইন্ডিয়ার' কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও স্বামী বিবেকানন্দ, সর্দার প্যাটেল এবং বিরসা মুন্ডাকে তাদের আসন্ন জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী আসন্ন দীপাবলী উপলক্ষ্যে দেশবাসীর প্রতি বিশেষ আবেদনও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'এই উৎসবের মরসুমে আসুন আমরা সবাই মিলে 'আত্মনির্ভর ভারতের' অভিযানকে আরও জোরদার করি। আমরা আমাদের কেনাকাটা করি 'ভোকাল ফর লোকালের' মন্ত্রে।
আজকের 'মন কি বাতে'র গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট -
'ডিজিটাল অ্যারেস্ট'-এর ক্রমবর্ধমান ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি এই ধরণের ঘটনা এড়াতে দেশবাসীর সাথে 'স্টপ, থিঙ্ক অ্যান্ড টেক অ্যাকশন'-এর মন্ত্র শেয়ার করেছেন এবং এই সম্পর্কে সর্বাধিক সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' সম্পর্কিত একটি ভিডিওও শেয়ার করেছেন এবং বলেছেন যে কোনও প্রশাসনিক সংস্থা কাউকে হুমকি দেয় না, ভিডিও কলে কোনরকমের ব্যক্তিগত তথ্য জিজ্ঞাসাবাদও করে না বা অর্থ দাবি করে না।
ইন্টারনেটের দ্রুত ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের মধ্যে, 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' প্রতারণার একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে উঠছে। এতে একজন ব্যক্তিকে অনলাইন মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হয় যে তাকে সরকারি সংস্থার হাতে গ্রেফতারির ভয় দেখিয়ে 'জরিমানা'র দাবি জানানো হয়। এ ধরনের ঘটনায় অনেকেই ভয় পেয়ে প্রতারণার শিকার হন। প্রধানমন্ত্রী 'মন কি বাত'-এর দর্শকদের কাছে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে এই ধরনের প্রতারক চক্র কাজ করে এবং কীভাবে তারা একটি 'বিপজ্জনক খেলা' খেলে।
তিনি বলেন, 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট'-এর শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে সর্বস্তরের এবং সব বয়সের মানুষ রয়েছে এবং ভয়ের কারণে তারা তাদের পরিশ্রমের লাখ লাখ টাকা হারাচ্ছেন। পাশাপাশি তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, 'এমন ফোন পেলে ভয় পাবেন না। আপনার জানা উচিত যে কোনও তদন্তকারী সংস্থা কখনও ফোন কল বা ভিডিও কলে এইভাবে কাউকে কখনও জিজ্ঞাসাবাদ করে না।' মোদী বলেন, 'এ ধরনের ক্ষেত্রে আতঙ্কিত হবেন না। শান্ত থাকুন। তাড়াহুড়ো করে কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কাউকে দেবেন না। যদি সম্ভব হয়, স্ক্রিনশট নিন এবং রেকর্ডিং করুন।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'কোন সরকারী সংস্থা ফোনে এমন হুমকি দেয় না, তদন্ত করে না বা ভিডিও কলের মাধ্যমে এমন অর্থ দাবি করে না।
প্রধানমন্ত্রী এই ধরনের ক্ষেত্রে জাতীয় সাইবার হেল্পলাইন ১৯৩০ ডায়াল করার এবং পুলিশকে গোটা টনা জানানোর পাশাপাশি cybercrime.gov.in-এ রিপোর্ট করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, 'প্রমাণগুলো নিরাপদে রাখুন। এই তিনটি ধাপ আপনার ডিজিটাল নিরাপত্তার মানদণ্ড হয়ে উঠবে'। মোদী এদিন বলেন, 'আমি আবারও বলব ডিজিটাল অ্যারেস্ট বলে কিছু নেই। এটা স্রেফ প্রতারণা, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে একটা প্রতারণা। যারা এসব করছে তারা সমাজের শত্রু'।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, যে 'দেশে সৃজনশীলতা এক নতুন শক্তি নিয়ে এগিয়ে চলছে। অ্যানিমেশনের জগতে 'মেড ইন ইন্ডিয়া' এবং 'মেড বাই ইন্ডিয়ানস' রা আধিপত্য বিস্তার করছে'। তিনি আরও বলেন, যে 'ভারত অ্যানিমেশনের জগতে একটি নতুন বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। যেখানে গেমিং স্পেসও এখানে প্রসারিত হচ্ছে এবং বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে'। এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে অ্যানিমেশনের জগতে ভারতকে একটি বৈশ্বিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করার আহ্বান জানান।
ছোটা ভীম, কৃষ্ণ, হনুমান এবং মোটু-পাতলুর মতো অ্যানিমেশন চরিত্রগুলির জনপ্রিয়তার কথা উল্লেখ করে মোদী বলেছিলেন যে তারা কেবল ভারতে নয়, অন্যান্য দেশেও শিশুদের আকর্ষণ করে এবং সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এসবের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আজ অ্যানিমেশন সেক্টর একটি শিল্পে রূপ নিয়েছে যা অন্যান্য শিল্পকে শক্তি দিচ্ছে।' পাশাপাশি মোদী বলেন, ভারতীয়রা আজ ফিটনেস সম্পর্কে আরও সচেতন হচ্ছে। ফিট ইন্ডিয়ার এই চেতনা এখন একটি বড় প্রচারে পরিণত হচ্ছে। আমার এটা দেখেও ভালো লাগছে যে আমাদের স্কুলগুলি এখন বাচ্চাদের ফিটনেসের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে'।