Advertisment

রিওয়াইন্ড: ৩৬ বছর আগের সেই মহা বিশ্বকাপ

সময়ের সিঁড়ি বেয়ে যদি ঠিক ৩৬ বছর পিছিয়ে যাওয়া যায়, তাহলে চোখের সামনে ভেসে উঠবে লর্ডসের ব্যালকনিতে কপিল দেবের মুখ। আজকের দিনেই ১৯৮৩ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ভারত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
The only team to successfully defend less than 241 to win a Men's Cricket World Cup final were India in #CWC83

লর্ডসে কি কপিল হতে পারবেন কেন? ইতিহাসের হাতছানি নিউজিল্য়ান্ডের সামনে

আর কয়েক ঘণ্টা পরেই চলতি বিশ্বকাপের অন্যতম প্রতীক্ষিত ম্যাচ দেখতে চলেছে বাইশ গজ। লর্ডসে মুখোমুখি ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর ইংলিশ-অজি দ্বৈরথের জন্যই মুখিয়ে আছেন ক্রিকেট ভক্তরা। এ যেন পঞ্চাশ ওভারের অ্যাশেজ!

Advertisment

ক্রিকেটের কুলীন স্টেডিয়াম বললেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে লর্ডসের ব্যালকনি। যেখানে দাঁড়িয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় নিজের জার্সি খুলে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের মুহূর্তটাকে অবিস্মরণীয় ভাবে সেলিব্রেট করেছিলেন। বঙ্গজ ঔদ্ধত্যে সেদিন মহাশত্রু ইংল্যান্ডকে বধ করেছিল সৌরভের টিম ইন্ডিয়া।

আরও পড়ুন: পাণ্ডিয়াই কপিলের তুরুপের তাস

কিন্তু তারও অনেক আগে এই ব্যালকনিকে বিখ্যাত করেছিলেন আরেক ভারতীয়। তাঁর নাম কপিল দেব। আজ থেকে ঠিক ৩৬ বছর আগে। খেয়াল করে দেখুন, আজ ২৫ জুন। আর ঠিক এই দিনেই ১৯৮৩ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছিল ভারত। লর্ডসের বুকে ক্লাইভ লয়েডের 'ইনভিন্সিবল' ওয়েস্ট  ইন্ডিজকে হারিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিলেন কপিল অ্যান্ড কোং।

ভারতের অতি বড় সমর্থকও কল্পনা করতে পারেন নি যে, ভারত বিশ্বকাপ হাতে তুলবে। সেসময়ে বিশ্বকাপের নাম ছিল প্রুডেনশিয়াল কাপ। কারণ টুর্নামেন্টের প্রধান স্পনসর ছিল প্রুডেনশিয়াল অ্যাসিওরেন্স কোম্পানি।

আরও পড়ুন: ধোনিকেই ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা সেবকের তকমা কপিলের

১৯৭৫-এর পর ১৯৭৯ সালেও বিশ্বের সেরা দলের মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছিল ক্যারিবিয়ানরা। দ্বীপপুঞ্জের দেশ বিশ্বজয়ের হ্যাটট্রিকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েছিল ১৯৮৩ সালে। আর লয়েড বাহিনীর সেই স্বপ্নই ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিলেন হরিয়ানা হারিকেন। শুরু হয়েছিল ব্যাট-বলের বিশ্বে ভারতের নতুন করে পথ চলা।

সেদিন টস জিতে লয়েড ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কপিলদের। ৬০ ওভারের ম্যাচে মাত্র ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল ভারত। ওপেন করতে নেমে সুনীল গাভাস্কর অ্যান্ডি রবার্টসের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরে যান মাত্র ২ রানে। তাঁর ওপেনিং পার্টনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের ব্যাট থেকে এসেছিল ৫৭ বলে ৩৮ রান। তিনিই ছিলেন ভারতের ও ফাইনালের সর্বোচ্চ স্কোরার। ভারতীয়দের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান পান মোহিন্দর অমরনাথ (২৬)।

অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, ম্যালকম মার্শাল ও মাইকেল হোল্ডিংয়ের বিশ্বত্রাস বোলিং আক্রমণের কাছে ভারতকে আত্মসমর্পণ করতেই হয়েছিল। কিন্তু ভারত যে পাল্টা দেবে, তা ভাবতেও পারেন নি লয়েড অ্যান্ড কোং। মদনলাল এবং অমরনাথের আপাত নির্বিষ বোলিংই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে ক্যারিবিয়ানদের হাফ ডজন ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছিল। বলবিন্দর সান্ধুও তুলে নিয়েছিলেন দুই উইকেট। ৫২ ওভারেই শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রবল পরাক্রমশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ভারত ৪৩ রানে জিতে জগতসভায় শ্রেষ্ঠর আসন ছিনিয়ে নিয়েছিল।

1983 world cup win indian team ৮৩-র বিশ্বকাপ জয়ী কপিল অ্যান্ড কোং

আরও পড়ুন: ধোনি-কোহলির জন্য়ই ভারতকে সেমিফাইনালে দেখছেন কপিল

৮৩ বিশ্বকাপের বিশেষ কিছু ট্রিভিয়া

এটাই ছিল শেষ প্রুডেনশিয়াল কাপ, তারপর আর প্রুডেনশিয়াল অ্যাসিওরেন্স স্পনসর করে নি।

এবারই প্রথম ম্যাচের সংখ্যা বাড়িয়ে ১৫ থেকে ২৭ করা হয়েছিল।

এই সংস্করণেই প্রথমবার অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দেশ ন্যূনতম একটি করে ম্যাচ জিতেছিল।

এবারই প্রথম লিগে একটি ম্যাচ হারা দেশই বিশ্বকাপ জিতেছিল।

প্রথমবার সাতটি টেস্ট খেলিয়ে দেশ অংশ নিয়েছিল।

মোহিন্দর অমরনাথই প্রথম ক্রিকেটার যিনি সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ম্যাচের সেরা হন।

বব উইলিস শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দুরন্ত অধিনায়কত্বের জন্য হেডিংলিতে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হন।

মার্টিন স্নেডেন ১২ ওভার বল করে রেকর্ড ১০৫ রান দিয়েছিলেন।

৮৩ বিশ্বকাপের বিশেষ কিছু পরিসংখ্য়ান

সর্বোচ্চ রান: ডেভিড গাওয়ার, ইংল্যান্ড (৩৮৪), ভিভ রিচার্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজ (৩৬৭), গ্রেম ফাওলার, ইংল্যান্ড (৩৬০)

সর্বোচ্চ উইকেট: রজার বিনি, ভারত (১৮), আশান্থা ডি'মেল, শ্রীলঙ্কা (১৭), মদনলাল শর্মা, ভারত (১৭)

সর্বোচ্চ দলগত স্কোর: শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পাঁচ উইকেটে ৩৩৮

১৯৮৩ সালে কপিল  যা করেছিলেন, তার ঠিক ২৮ বছর পর মহেন্দ্র সিং ধোনি সেটাই করে দেখান। ২০১৯ সালে বিরাট কোহলি কি পারবেন দেশকে বিশ্বকাপ জেতাতে? উত্তরের অপেক্ষায় ১৩৩ কোটির দেশ।

BCCI India Cricket World Cup
Advertisment