/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/24/australia-cricket-team-2025-08-24-14-46-59.jpg)
অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অনন্য রেকর্ড
Australia Cricket Team: অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল আরও একবার প্রমাণ করে দিল, তাদের হালকাভাবে নিলেই পস্তাতে হবে। তিন ম্য়াচের ওয়ানডে সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ২ ম্য়াচ জেতার পর আত্মহারা হয়ে পড়েছিল। সিরিজের শেষ ম্য়াচটা জিতে অস্ট্রেলিয়াকে তাদেরই ঘরের মাঠে ক্লিন সুইপ করতে নেমেছিল প্রোটিয়া ব্রিগেড। কিন্তু প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া এমন কাণ্ড ঘটাল, যা কেউ দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি। প্রথম দুটো ম্য়াচে অস্ট্রেলিয়া কোনওক্রমে ১৯৮ এবং ১৯৩ রানে পা রেখেছিল। আর সেইসঙ্গে দুটো ম্য়াচেই তারা হেরে যায়। তবে তৃতীয় ম্য়াচে অজি ব্যাটাররা এমন তাণ্ডবলীলা চালালেন, গোটা দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দল কার্যত খড়কুটোর মতো উড়ে গেল।
অস্ট্রেলিয়ার মকায়ে অবস্থিত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অ্য়ারেনায় এই সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডে ম্য়াচটি আয়োজন করা হয়। এই ম্য়াচে অস্ট্রেলিয়া প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৪৩১ রান করে। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এটাই অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক স্কোর। এই ম্য়াচে মোট ৩ অজি ব্যাটার শতরান করেছেন। তাও একেবারে ঝড়ের গতিতে। অর্থাৎ, গোটা ৫০ ওভার ধরেই অজি ব্যাটাররা দক্ষিণ আফ্রিকাকে কার্যত কচুকাটা করেছে।
শুরুটা জম্পেশ করেছে অস্ট্রেলিয়া, গড়ে ওঠে ২৫০ রানের পার্টনারশিপ
সবার আগে শতরান হাঁকান দলের ওপেনার ট্রাভিস হেড। তাঁর সতীর্থ মিচেল মার্শও সেঞ্চুরি করেন। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে পিছিয়ে ছিলেন না ক্যামেরন গ্রিনও। তিনিও এই ম্য়াচে তিন অঙ্কের রান স্পর্শ করেন। সঙ্গে বুঝিয়ে দেন, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল যে কোনও সময় ফর্মে কামব্যাক করতে পারে। সিরিজের প্রথম দুটো ম্য়াচে অস্ট্রেলিয়া টার্গেট তাড়া করতে নেমে ২০০ রানের চৌকাঠও স্পর্শ করতে পারেনি। সেকারণে দুটো ম্য়াচেই তারা হেরে যায়। কিন্তু, তৃতীয় ওয়ানডে ম্য়াচে তারা ৪৩১ রান খাড়া করে। ওপেনার ট্রাভিস হেড এবং মিচেল মার্শের মধ্যে প্রথম উইকেটে ২৫০ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ওঠে।
শুধুমাত্র বাউন্ডারি থেকেই আসে ২৫২ রান
দক্ষিণ আফ্রিকা বোলারদের হাল যে কতটা করুণ হয়েছিল, সেটা একটা ছোট পরিসংখ্যান দিলেই স্পষ্ট বুঝতে পারা যাবে। একেবারে প্রথম ওভার থেকেই ক্যাঙারু ব্রিগেড ব্যাটিং ধামাকা শুরু করে দেয়। একেবারে শেষ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত এই ধামাকা চলতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার গোটা ইনিংস জুড়ে চার-ছক্কার বন্যা দেখতে পাওয়া যায়। এই ম্য়াচে অজি ব্যাটাররা মোট ৫৪ বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। এরমধ্যে ৩৬ চার এবং ১৮ ছক্কা রয়েছে। অর্থাৎ, শুধুমাত্র বাউন্ডারি থেকেই অস্ট্রেলিয়ার খাতায় ২৫৩ রান যুক্ত হয়েছে।
India vs Australia: বছরের শেষে অস্ট্রেলিয়া সফর, সাদা বলের সিরিজ খেলতে যাচ্ছেন গিলরা
অস্ট্রেলিয়ার ৩ ব্যাটার করেছেন শতরান
১. ট্রাভিস হেড - বাঁ হাতি এই ওপেনার ঝড়ের গতিতে রান করেন। মাত্র ৮০ বলে হাঁকালেন দুর্ধর্ষ শতরান। ১০৩ বলে তিনি ১৪২ রানের ইনিংস খেলে শেষপর্যন্ত আউট হন তিনি। তাঁর এই ইনিংসে ১৭ চার এবং ৬ ছক্কা রয়েছে। স্ট্রাইক রেট ১৩৭.৮৬।
২. মিচেল মার্শ - দলের অধিনায়ক মিচেল মার্শও তুফানি মেজাজে ব্যাটিং করলেন। তিনি ১০৬ বলে ১০০ রান করেছেন। এরমধ্যে ৬ চার এবং ৫ ছক্কা রয়েছে। মাঠের চারদিকে শট খেলেন মার্শ। মোটের উপর, প্রোটিয়া বোলারদের ঘুম কেড়ে নেন তিনি।
India vs Australia: বিশ্বকাপের বদলা! ২৩-এর জবাব ২৫-এ, সুদে-আসলে তুলতে মরিয়া টিম-রোহিত
৩. ক্যামেরন গ্রিন - এরপর তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন ক্যামেরন গ্রিন। হেড এবং মার্শের দেখানো রাস্তায় তিনিও হাঁটতে শুরু করেন। তাঁর ব্যাট থেকে চার-ছক্কার বন্যা দেখতে পাওয়া যায়। মাত্র ৪৭ বলে শতরান হাঁকালেন গ্রিন। অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে ইতিহাসে এটাই দ্বিতীয় দ্রুততম শতরান। শেষপর্যন্ত ৫৫ বলে তিনি ৬ চার এবং ৮ ছক্কার দৌলতে ১১৮ রান করলেন।
হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন অ্যালেক্স ক্যারিও
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চার নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন দলের উইকেটকিপার-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি। তিনি ৩৭ বলে ৫০ রান করে অপরাজিত থাকেন। ক্যারির ব্যাট থেকে ৭ বাউন্ডারি বেরিয়ে এসেছে।
উইকেটের জন্য হা-পিত্যেশ করলেন প্রোটিয়া বোলাররা
দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা এই ম্য়াচে উইকেটের জন্য হা-পিত্যেশ করতে থাকেন। তাঁরা মাত্র ২ উইকেট শিকার করতে পেরেছেন। ট্রাভিস হেডকে আউট করেন কেশব মহারাজ। অন্যদিকে, মিচেল মার্শকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখার সেনুরন মুথুস্বামী। বাকি আর কোনও বোলার উইকেট শিকার করতে পারেননি। তার উপরে অজি ব্যাটাররা মেরে-মেরে ছাল চামড়া তুলে দিয়েছে। সবথেকে বেশি রান দিলেন বিয়ান মুল্ডার। ৭ ওভারে তিনি মোট ৯৩ রান খরচ করলেন। ইকোনমি রেট ১৩.৩০। তাঁকেই টার্গেট করেছিল ক্যাঙারু ব্যাটাররা। চার-ছক্কার বন্যা দেখা গেল। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন কোয়েনা মফাকা। তিনি ৬ ওভারে ৭৩ রান খরচ করেছেন।