/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/11/5zguSi2Q8mwfrMOPpyRe.jpg)
ভারতীয় ফুটবলে ব্যর্থতার দায় শুধুই কি মোহনবাগানের?
Mohun Bagan Super Giant: মঙ্গলবার হংকংয়ের (India vs Hong Kong) বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ভারতীয় ফুটবল দল (Indian Football Team)। এই ম্য়াচে টিম ইন্ডিয়া ১-০ গোলে হেরে যায়। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের একাংশ মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট যে দেশের অন্যতম শক্তিশালী ফুটবল ক্লাব, তা একেবারে সন্দেহাতীত। কিন্তু, এই ক্লাবের তিন ফুটবলার (বিশাল কাইথ, আশিক কুরুনিয়ান এবং লিস্টন কোলাসো) এমন তিনটে ভুল করে ফেলেছেন, যা একেবারেই ক্ষমার অযোগ্য।
প্রথমে আশিক কুরুনিয়ানের কথায় আসা যাক। ম্য়াচের প্রথমার্ধে আশিক একেবারে হ্যান্ডশেক দুর থেকে বলটা পেয়েছিলেন। কিন্তু, সেই সুযোগ তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। ম্য়াচের দ্বিতীয়ার্ধেও তাঁর সামনে শাপমোচনের সুযোগ এসেছিল। কিন্তু, আশিকের বাঁ পায়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায়। এই জোড়া সুযোগ তিনি যদি কাজে লাগাতে পারতেন, তাহলে এই ম্য়াচের ফলাফল অবশ্যই আলাদা হতে পারত।
দেখে নিন সেই ভিডিও:
A brilliant pass and an open goal, but Ashique Kuruniyan fails to keep his shot on target 😱
— FanCode (@FanCode) June 10, 2025
India’s best chance till now to break the deadlock!#HGKIND#ACQ2027#BlueTigers#IndianFootball ⚽ pic.twitter.com/cgjK1heco4
আশিকের পর গোল মিস করলেন লিস্টন কোলাসোও!
এবার আসা যাক লিস্টন কোলাসোর কথায়। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট দলের অন্যতম সেরা ফুটবলার হলেন এই লিস্টন কোলাসো। তিনিও হংকংয়ের পেনাল্টি বক্সের মধ্যে বল পেয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁরও বাঁ পায়ের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায়। এই সহজতম সুযোগটা লিস্টন হাতছাড়া করার পরে অনেকেই বলতে শুরু করেছেন যে ভারতীয় ফুটবল দলে টেকনিকের যথেষ্ট সমস্যা রয়েছে। আর তাই গোলের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হলেও, তাঁরা সেটা কাজে লাগাতে পারছেন না।
India vs Hong Kong Fooball Match: ভারতের ফিফা ব়্যাঙ্কিং ১২৭, হংকং কোথায় দাঁড়িয়ে জানেন?
আর শেষবেলায় তো বিশাল কাইথের কথা উল্লেখ করতেই হবে। ম্যাচটা যখন অতিরিক্ত সময়ে পা রেখেই ফেলেছে, তখন বিশালের থেকে আরও খানিকটা সতর্কতা প্রত্যাশা করা হয়েছিল। কিন্তু, সতর্কতা তো 'দুর কী বাত', উল্টে তিনি বিপক্ষ দলের এক ফুটবলারের মুখে সপাট ঘুসি চালিয়ে দিলেন। অনেকেই হয়ত বলবেন, বলটা ক্লিয়ার করতে না পারার জন্যই বিশালকে বাধ্য হয়ে এমন কাজ করতে হয়েছে। সেখানে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে, ভারতীয় ফুটবল দলের ডিফেন্ডাররা তাহলে কী করছিলেন? সেখানে তো আবার ইস্টবেঙ্গলের আনোয়ার আলি উপস্থিত ছিলেন। তবে গোটা ম্য়াচে আনোয়ারের পারফরম্য়ান্স যথেষ্টই নজরকাড়া ছিল।
Indian Football Coach: 'দায়িত্বে আনা হোক সঞ্জয় সেনকে', ভারতীয় ফুটবলের 'ওষুধ' বাতলে দিলেন দীপেন্দু
এই পরিস্থিতিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই একটা প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে। মোহনবাগানের জার্সিতে যেখানে ফুটবলাররা ময়দান কাঁপানো পারফরম্য়ান্স করছেন, টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে সেই খেলাটা কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। উত্তর খুঁজতে হলে চোখ বোলাতে হবে টিম কম্বিনেশনে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে ভারতীয় ফুটবলাররা খেললেও, আধিপত্য কিন্তু সেভাবে দেখতে পাওয়া যায় না। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের গোল মেশিন বলতেই আমাদের মাথায় জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোস কিংবা জেমি ম্য়াকলারেনের কথা মাথায় আসে। সেখানে ২০২৪-২৫ ISL মরশুমে লিস্টন যে একেবারে নজর কাড়তে পারেননি, সেটা আর আলাদা করে বলার দরকার নেই। আর আশিকের কথা? বাগানের সিনিয়র দলে তাঁর অস্তিত্ব একেবারেই মরীচিকার মতো।
Manolo Marquez Resignation: হেরেও লজ্জা নেই! আর কবে পদত্যাগ করবেন ভারতীয় ফুটবল কোচ? প্রশ্ন সমর্থকদের
এখানে আরও একটা বিষয় রয়েছে। সেটা হল মোহনবাগানের ডিফেন্স। বাগানের তেকাঠিতে বিশাল কাইথের সামনে অ্যালবার্টো কিংবা টম অলড্রেডের মতো ফুটবলাররা কার্যত দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। জাতীয় দলের জার্সিতে সেই সাপোর্টটা পাননি কাইথ। সেকারণে তাঁকে হংকংয়ের মতো একটা দুর্বল দলের বিরুদ্ধেও বারংবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে। আর একেবারে শেষবেলায় গোল।
Mohun Bagan Super Giant: মোহনবাগানের হিরো, টিম ইন্ডিয়ায় জিরো! এই ফুটবলারের ভুলেই লজ্জার হার ভারতের
বাংলায় একটি প্রচলিত প্রবাদ রয়েছে। তালি কোনওদিন এক হাতে বাজে না। ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগানের অস্তিত্ব নিয়ে আলোচনা করতে গেলে এই বিষয়টা অবশ্যই সমালোচকদের মাথায় রাখা উচিত বলে আজও অনেকে মনে করেন। তাঁদের কথায়, শুধু শুধু একটা দলকে দোষারোপ করে কোনও লাভ নেই। বরং ভারতীয় ফুটবল দলের সামগ্রিক পরিকাঠামো আরও কীভাবে উন্নত করা যায়, সেটা নিয়েই চিন্তাভাবনা করা উচিত।