Sahil Harijan Interview: বাংলা হচ্ছে ফুটবলের মক্কা। এই বাংলার কাদা মাঠ থেকেই অতীতে কতই না তারকা ফুটবলার উঠে এসেছেন। মুখ উজ্জ্বল করেছেন ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football)। এবার সেই তারকাখচিত তালিকায় বোধহয় আরও একটি নাম যুক্ত হতে চলেছে। নাম সাহিল হরিজন। চলতি কলকাতা ফুটবল লিগে (CFL 2025-26) যথেষ্ট নজরকাড়া পারফরম্য়ান্স করছেন। বিশেষ করে গত ম্য়াচে মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের (Mohammedan Sporting Club) বিরুদ্ধে যে গোলটি সাহিল করেছেন, তা দেখার পর বাংলা ফুটবলমহলে সাহিলকে নিয়ে রীতিমতো আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এই যাত্রাপথটা অতটাও সহজ ছিল না। পরিবারের থেকে দুরে থেকে তিলে তিলে নিজেকে গড়ে তুলেছেন বাংলার এই ফুটবলার। সেই অজানা গল্পই এবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে শেয়ার করলেন ইউনাইটেড স্পোর্টস (United Sports) দলের এই তরুণ তুর্কি।
একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়, চলতি কলকাতা ফুটবল লিগে 'সুপারস্টার' তকমা পেয়েছেন সাহিল হরিজন। শুধুমাত্র মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবই নয়, ইতিপূর্বে গত ২৮ জুন এরিয়ানের বিরুদ্ধেও তিনি একটি বিশ্বমানের গোল করেছিলেন। আর সেকারণেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন তিনি।
Sunil Chhetri: বুড়ো হাড়ে ফের ভেলকি, সুনীল ম্য়াজিকে আবারও মোহিত গোটা দেশ
তবে সাহিল স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে এই প্রশংসার জোয়ারে একেবারেই ভাসতে চান না। আপাতত ভাল পারফরম্য়ান্সই তাঁর লক্ষ্য। খানিক আমতা আমতা করেই বললেন, 'ওগুলো নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। ভাল খেলেছি, গোল করেছি। আর সেকারণেই সবাই বাহবা দিচ্ছে। আগামী ম্য়াচগুলোতেও যাতে আরও ভাল করে গোল করতে পারি, সেদিকেই আপাতত নজর দিচ্ছি।'
/filters:format(webp)/indian-express-bangla/media/media_files/2025/07/11/sahil-harijan-insert-2025-07-11-14-58-20.jpg)
বাবা অজয় হরিজন পেশায় অ্যাম্বুল্যান্স চালক। নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে ফুটবল খেলা যেখানে নেহাতই বিলাসিতা, সেখানে অজয়বাবুই ফুটবল খেলার জন্য সাহিলকে ছোটবেলা থেকে উৎসাহ দিতেন। অসীম বিশ্বাসকে 'আইডল' করে ৯০ মিনিটে লড়াইয়ে নাম লেখান এই তরুণ ফুটবলার।
Indian Football FIFA Ranking: বাড়ল অপমানের জ্বালা, ফিফা ব়্যাঙ্কিংয়ে আরও অধঃপতন ভারতের
গত মরশুমেও ব্যাকভলিতে করেছিলেন দুরন্ত গোল
ট্রায়াল দিতে এসেছিলেন ইউনাইটেড যুব দলের হয়ে। সেখানেই নবাব ভট্টাচার্যের চোখে পড়ে যান তিনি। এই কলকাতা ফুটবল লিগেই ব্যাকভলিতে পাঠচক্রের বিরুদ্ধে একটি নজরকাড়া গোল করেছিলেন তিনি। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলার এই ফুটবলারকে। ইউনাইটেড দলের হয়ে দ্বিতীয় ডিভিশনের আই-লিগে তিনি ১১ গোল করেছিলেন। যুগ্মভাবে অর্জন করেছিলেন সর্বাধিক গোলদাতার খেতাব।
Mehtab Hossain Exclusive: রাজনীতি ঢুকেই অন্ধকারে ভারতীয় ফুটবল? ফিফা ব়্যাঙ্কিং নিয়ে বিস্ফোরক মেহতাব
চোটের কারণে ৬ মাস ছিলেন মাঠের বাইরে
কিন্তু, আচমকাই থমকে গেল ভাগ্যের চাকা। গোড়ালিতে লাগল মারাত্মক চোট। সেই চোটের কারণে প্রায় ৬ মাস মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। কিন্তু, এবারের কলকাতা ফুটবল লিগে ফের একবার নিজের জাত চেনাতে শুরু করেছেন সাহিল। বাংলা ফুটবলমহল আপাতত তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। কিন্তু, তাঁর স্বপ্ন কী? ফোনের ওপার থেকে বললেন, 'এই মরশুমে গোল করলেও বেশ কয়েকটা ভুলভ্রান্তি করেছি। পরের ম্য়াচে যাতে সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি আর না হয়, সেদিকেই আমি নজর রাখব।'
/filters:format(webp)/indian-express-bangla/media/media_files/2025/07/11/sahil-harijan-insert-1-2025-07-11-14-58-43.jpg)
দেশের হয়ে খেলাই আসল লক্ষ্য
সঙ্গে আরও যোগ করলেন, 'আমাদের বাঙালি ফুটবলারদের কাছে একটাই লক্ষ্য থাকে। বড় দলগুলোর বিরুদ্ধে ভাল পারফরম্য়ান্স করা। তিন প্রধানের (মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান) বিরুদ্ধে খেলার অর্থই হল, আমাদের বাঙালি ফুটবলারদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার দিন। আশা করি, সেটা আমি প্রমাণ করতে পেরেছি। সেদিন অত বৃষ্টির মধ্যেও আমার বাবা-মা মাঠে উপস্থিত ছিলেন। এটা আমার কাছে একটা অন্যতম বড় পাওনা। এই গোলটাই বাবা-মা'কে দেওয়া আমার সেরা উপহার। আগামীদিনে দেশের হয়েই খেলতে চাই।'