ভারতকে রোমাঞ্চকর জয় উপহার দিলেন কিং কোহলি। দিওয়ালির আগেই গোটা দেশকে আলোর রোশনাইয়ে মুড়ে দিয়েছেন সম্রাট। একসময় ভারত পরপর উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। ৩১ রান স্কোরবোর্ডে তোলার ফাঁকেই ভারত দুই ওপেনার রোহিত, কেএল রাহুলকে হারিয়ে ফেলে। তারপরে সূর্যকুমার যাদব ১৫ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
অক্ষর প্যাটেলকে চারে নামানোর সিদ্ধান্তও কাজে আসেনি। ৩ বলে মাত্র ২ রান করে আউট হয়ে যান স্পিনার-অলরাউন্ডার। এরপরেই ভারত ম্যাচে ফেরে হার্দিক-কোহলির দুরন্ত পার্টনারশিপে ভর করে। কোহলি আগেই খেলছিলেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন হার্দিক পান্ডিয়া।
আরও পড়ুন: ব্যাপক অন্যায়ের শিকার হলেন কি অক্ষর! ভারতের জয়েও থামছে না বিতর্কের আগুন, দেখুন ভিডিও
দুজনে পঞ্চম উইকেটে ১১৩ রান যোগ করে ভারতকে জয়ের একদম দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন। কোহলি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ৫৩ বলে ৮২ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস উপহার দিয়ে যান। হার্দিক সেভাবে বিগ হিট করতে না পারলেও কোহলিকে সঙ্গ দেওয়ার কাজ করে যান। ৩৭ বলে ৪০ রান করে তিনি ভারতের জয়ের অন্যতম কারিগর। হার্দিক ২০তম ওভারের প্ৰথম বলেই আউট হয়ে যান।
শেষ ওভারে মহম্মদ নওয়াজের স্পিন ছাড়া আর কোনও অপশন ছিল না ক্যাপ্টেন বাবরের হাতে। শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৬ রান। নওয়াজের প্ৰথম বলেই সজোরে হাঁকাতে গিয়েছিলেন হার্দিক। তবে টপ এজ লেগে বাবর আজমের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন হার্দিক। ক্যাচ নেওয়ার ফাঁকেই কোহলি হার্দিককে ক্রস করে যান পিচের মধ্যে।
আরও পড়ুন: জোর করে হারিয়ে দেওয়া হল! কোহলিকে ম্যাচের পরেই ‘চিটিংবাজ’ বলল পাকিস্তান, তুঙ্গে বিতর্ক
স্ট্রাইকিং এন্ডে পৌঁছে যাওয়া সত্ত্বেও দ্বিতীয় বল কোহলি ফেস করতে পারেননি। নবাগত দীনেশ কার্তিক মুখোমুখি হন নওয়াজের। আসলে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে ক্রিকেটীয় নন-স্ট্রাইকিং এন্ড সংক্রান্ত নিয়মে বদল আনা হয়েছে। অতীতের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার সময় যদি নন স্ট্রাইকার তাঁকে পেরিয়ে যান, তাহলে নতুন বল সেই নন-স্ট্রাইকারই ফেস করবেন। নবাগত ব্যাটসম্যান নন। এই নিয়মই বদলে ফেলা হয়েছে।
আইসিসির নয়া নিয়মে বলা হয়েছে, নন স্ট্রাইকার ব্যাটসম্যানকে ক্রস করে গেলেও নতুন ব্যাটসম্যানকে পরের বল ফেস করতে হবে।
আরও পড়ুন: শাস্তি এড়াতে দুর্ধর্ষ প্ল্যানিং ভারতের! পাক ম্যাচে চমকে দেওয়া স্ট্র্যাটেজি নিয়ে হাজির রোহিতরা
পুরোনো নিয়ম বলবৎ থাকলে জয়ের জন্য ভারতকে হয়ত শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত না। কোহলি হয়ত আগেই ফিনিশ করে দিতেন। দীনেশ কার্তিক ক্রিজে নেমেই সিঙ্গল নিয়ে কোহলিকে স্ট্রাইকিং এন্ডে পাঠান। তৃতীয় বলে কোহলি দু-রানের বেশি নিতে পারেননি।
আরও পড়ুন: নিশ্চিত ক্যাচ থেকে বঞ্চিত ভারত! পাক ম্যাচে তুমুল গালির বন্যা রোহিত-হার্দিকদের, রইল ভিডিও
শেষ তিন বলে ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৪ রান। সেই সময় নওয়াজের লোভনীয় ফুলটস বল কোহলি স্কোয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দেন। এশিয়া কাপে সুপার-৪ ম্যাচে পাকিস্তানের হিরোর হাতেই শেষ ওভার বল তুলে দেন ক্যাপ্টেন বাবর আজম। নওয়াজের চতুর্থ বল ছক্কা হাঁকিয়ে উচ্চতার জন্যই কোহলি আম্পায়ারের কাছে নো বলের আবেদন করেন। কোহলির আবেদনে সাড়া দিয়ে আম্পায়ারও নো বলের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: পাক ম্যাচের শুরুতেই কেঁদে ফেললেন রোহিত, মেলবোর্নে হাজির বিরল দৃশ্য, দেখুন ভিডিও
নো বলের পরেও নাটকের শেষ নয়। ফ্রি হিটে কোহলি বোল্ড হয়ে যান। তবে বোল্ড হলেও দৌড়ে তিন রান নিতে সমস্যা হয়নি কোহলির। পঞ্চম বলে স্ট্যাম্পড হয়ে যান দীনেশ কার্তিক। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল দু-রান। অশ্বিন ছিলেন স্ট্রাইকিং এন্ডে। ওয়াইড করে নওয়াজ ড্র নিশ্চিত করেন। শেষ বলে অশ্বিনের জয়সূচক রান নিতে সমস্যা হয়নি।