Earth Observation Satellites: ভারতের শ্রীহরিকোটা থেকে আজ পৃথিবী পর্যবেক্ষণে ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে ইসরো (ISRO) এবং নাসা (NASA)-র যৌথভাবে তৈরি উপগ্রহ নিসার (NISAR বা NASA-ISRO Synthetic Aperture Radar)। এই অত্যাধুনিক উপগ্রহটিকে প্রথমবারের মত ভারতের জিএসএলভি (GSLV) রকেট ব্যবহার করে সূর্যের সমকালীন মেরু কক্ষপথে পাঠানো হবে।
কেমন হবে এই উৎক্ষেপণ?
নিসার (NISAR)-এর ওজন প্রায় ২,৩৯২ কেজি। সাধারণত এই ধরনের সূর্য-সমকালীন কক্ষপথে উৎক্ষেপণের জন্য পিএসএলভি (PSLV) রকেট ব্যবহার করা হলেও, নিসার (NISAR)-এর ভার বেশি হওয়ায় এবার জিএসএলভি (GSLV) ব্যবহার করা হচ্ছে। উৎক্ষেপণের ১৯ মিনিট পরেই এটি ৭৪৭ কিলোমিটার উচ্চতায় একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে স্থাপিত হবে।
আরও পড়ুন- ল্যাপটপ কিনবেন? সেরা প্রিমিয়াম মডেলে পান ৪৩% পর্যন্ত ছাড়!
নিসার কীভাবে কাজ করবে?
এই উপগ্রহটির মূল উদ্দেশ্য পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা। এটি দিনে-রাতে, এমনকী মেঘ বা বৃষ্টির মধ্যেও সঠিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। উপগ্রহটির দুটি রাডার থাকবে। এই দুটি রাডার হল নাসা (NASA)-র এল-ব্যান্ড (L-band) এবং ইসরো (ISRO)-র এস-ব্যান্ড (S-band)। যা পৃথিবীর পৃথক বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন- এয়ারটেলের আনলিমিটেড প্রিপেড প্ল্যান, রিচার্জ ছাড়াই সুবিধার লিস্ট শুনলে চোখ কপালে উঠবে!
কী ধরনের তথ্য দেবে নিসার (NISAR)?
প্রতি ১২ দিনে গোটা পৃথিবী স্ক্যান করবে। ১ সেন্টিমিটারের ছোট পরিবর্তনও শনাক্ত করতে পারবে। ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, ভূমিধস, খরা ইত্যাদির ঝুঁকি নির্ধারণে সহায়তা করতে পারবে এই সব তথ্য। বনজ সম্পদ, কৃষি জমি, নদী ও হিমবাহ পর্যবেক্ষণে নিসারের তথ্য কাজে লাগবে। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে দীর্ঘদিন ধরে তথ্য সংগ্রহে নিসারকে কাজে লাগাতে চান বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন- মাত্র ২০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন চাই? দেখে নিন এই ৫টি মডেল
দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতিতে নিসার
নিসার সরাসরি কোনও দুর্যোগের পূর্বাভাস না দিলেও, তার দেওয়া তথ্য ব্যবহার করে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া যাবে। ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা যাবে। পাশাপাশি, সম্পদের সঠিক ব্যবহার করাও সম্ভব হবে। শুধু তাই নয়, ভূমিকম্পের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলির মানচিত্র তৈরিতে, ভূমিধস ও ভূমির আর্দ্রতা পর্যবেক্ষণে, আগ্নেয়গিরির ম্যাগমা চলাচলের পূর্বাভাস পেতে, পারমাফ্রস্ট ও হিমায়িত অঞ্চল পর্যবেক্ষণে এবং কৃষি, বন এবং জলের ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কাজে লাগবে নিসারের দেওয়া তথ্য।
আরও পড়ুন- সারা বছরের রিচার্জ একসঙ্গে! বিরাট প্ল্যান ভোডাফোন আইডিয়ার
উৎক্ষেপণের পর
উৎক্ষেপণের পর ধাপে ধাপে চলবে নিসারের কার্যক্রম। ৮-১০ দিন ধরে উপগ্রহের সম্পূর্ণ মোতায়েন এবং অ্যান্টেনা খোলার ওপর জোর দেওয়া হবে। ৬৫ দিন ধরে চলবে ইঞ্জিনিয়ারিং পর্যায়ের এবং প্রাথমিক ক্রমাঙ্কন তৈরি। ৭০ দিন ধরে চলবে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ। ৯০ দিন ধরে বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ চলবে ধাপে ধাপে।
নিসার প্রকল্পটি ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে প্রথম হার্ডওয়্যার-স্তরের মহাকাশ সহযোগিতা। এটি শুধু একটি বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টাই নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি মাইলফলকও বটে। প্রায় ১০ বছর ধরে প্রস্তুতি নেওয়া এই মিশনটি ভবিষ্যতের বহু প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে বলেই বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।