Solar storm earth: সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, সৌরঝড়ে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে পৃথিবীর প্রযুক্তিনির্ভর সভ্যতা। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ১৪,৩০০ বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হেনেছিল ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌরঝড়।
সৌরঝড় কী এবং কীভাবে কাজ করে?
সৌরঝড় হল সূর্যের পৃষ্ঠ থেকে নির্গত বিশাল শক্তির চার্জিত কণাপ্রবাহ যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে চৌম্বক ক্ষেত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই ঝড়ের ফলে পৃথিবীর চৌম্বক তরঙ্গ নষ্ট হয়ে যোগাযোগ, উপগ্রহ এবং বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় তীব্র ক্ষতি হয়। ফিনল্যান্ডের ওলু বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা জীবাশ্মযুক্ত গাছের বলয়ে কার্বন-১৪ এর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রমাণ পেয়েছেন, খ্রিস্টপূর্ব ১২,৩৫০ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ঘটে গিয়েছিল এক ভয়াবহ সৌরঝড়।
আরও পড়ুন- মেঘলা দিনে ঘরে বসে মন ভালো করা ৭টি কাজ, যা আপনার দিনটাকে রাঙিয়ে তুলবে
অতীতের সৌরঝড় এবং বর্তমান পৃথিবীর ঝুঁকি
ইতিহাসে পাঁচটি বড় সৌরঝড়ের কথা ইতিমধ্যে জানা গিয়েছে। সেগুলো ঘটেছিল ৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে, ৭৭৫ খ্রিস্টাব্দে, ৬৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এবং ৫২৫৯ আর ৭১৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। এর মধ্যে ৭৭৫ সালের ঝড় এতটাই শক্তিশালী ছিল যে প্রাচীন চিনা এবং ইউরোপীয় দলিলে তার প্রমাণ মিলেছে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ১২,৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ঝড়টি ছিল আগেরগুলোর চেয়ে ১৮% বেশি শক্তিশালী।
আরও পড়ুন- উজ্জ্বল ত্বক পেতে এই ৪টি ভুল এড়িয়ে চলুন, নইলে বিপদ আসবেই!
যদি এই ঝড় আবার আসে?
আজকের পৃথিবী পুরোটাই নির্ভর করে ইন্টারনেট, বিদ্যুৎ এবং উপগ্রহ যোগাযোগের ওপর। অতীতের তুলনায় আমরা অনেক বেশি ঝুঁকিতে আছি। ১৮৫৯ সালের ক্যারিংটন ইভেন্টে টেলিগ্রাফ পুড়ে গিয়েছিল, ২০০৩ সালের হ্যালোইন ঝড়ে উপগ্রহ বিঘ্নিত হয়েছে। এমন একটি ঝড় এখন হলে- ইন্টারনেট এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়বে, জিপিএস ও উপগ্রহ নেভিগেশন ধ্বংস হবে, বিদ্যুৎ গ্রিড বন্ধ হয়ে যাবে, ব্যাংকিং, এয়ারলাইন্স এবং হাসপাতাল-সহ জরুরি পরিষেবাগুলো বিপর্যস্ত হবে।
আরও পড়ুন- দুই চামচ রান্নার সামগ্রী দিয়েই চুল করুন কুচকুচে কালো, জেনে নিন সহজ পদ্ধতি!
এবং
আরও পড়ুন- পুরুষদের টাইট বেল্ট পরা বন্ধ করতেই হবে! না হলে ভয়াবহ বিপদ, সাবধানবাণী শোনালেন বিশেষজ্ঞরা
প্রতিকার কী?
ভবিষ্যতের ঝুঁকি ঠেকাতে বিজ্ঞানীরা এখন সক্রিয়ভাবে সৌরঝড় পর্যবেক্ষণ করছেন। উন্নত সতর্কতা ব্যবস্থা, স্যাটেলাইট শিল্ডিং, পাওয়ার গ্রিড রিডিজাইন ইত্যাদি করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে সতর্কতাই একমাত্র উপায়। বিজ্ঞানীরা আমাদের অতীত ঘেঁটে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন। সৌরঝড় আসবে, কিন্তু সচেতনতা থাকলে ধ্বংস কম হবে। সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।