Lakshmi Puja 2024: এক হাতে শস্য ও অন্য হাতে অর্থ। রয়েছে ত্রিশূল থেকে তরোয়াল, পদ্মফুল থেকে চাঁদির কয়েন, এভাবেই দেবী লক্ষ্মীর ১৮ টি হাতে সাজানো হয় নানা ধন, সম্পদ ও অস্ত্রশস্ত্র। আর তারপরেই আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে ধুমধাম করে পলিত হয় আঠারো হাতের দেবী লক্ষ্মী মাতার পুজো। রাজ্যে একমাত্র আঠারো হাতের দেবী লক্ষ্মী মাতার আরাধনা প্রায় ২৫ বছর ধরেই মালদার আদিবাসী অধ্যুষিত বামনগোলা ব্লকের গাংগুরিয়া সারদা তীর্থ আশ্রম হয়ে আসছে। বুধবার থেকে ওই আশ্রমে শুরু হয়েছে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে উৎসব। আর এই ১৮ হাতের দেবী লক্ষ্মীর পুজো দেখতে গাঙ্গুরিয়া সারদা তীর্থ আশ্রমে দূরদূরান্ত থেকে ভক্তেরা ভিড় করেন।
প্রচলিত আছে, এদিন ১৮ হাতের এই দেবী মাতার কাছে ভক্তি ভরে যা মানত করা যায় এবং দেবীকে যে কোনও একটি হাতে যা তুলে দেবেন তার দ্বিগুণ প্রাপ্তি হবে ভক্তদের। সেই প্রত্যাশা নিয়েই অসংখ্য ভক্তরা দূরদূরান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট আশ্রমের কোজাগরী লক্ষ্মীপূজো দেখতে ছুটি আসে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি যতক্ষণ লেগে থাকবে ততক্ষণই চলবে ১৮ হাতের দেবী লক্ষ্মী প্রতিমার পুজো।
সংশ্লিষ্ট আশ্রমের স্বামী আত্মাপ্রেনান্দ মহারাজ জানান, ১৯৯৮ সালে এই আশ্রমটির প্রতিষ্ঠা হয়। তারপর ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি ১৮ হাত বিশিষ্ট মহালক্ষ্মী পুজোর সূচনা করা হয়। তবে দেবী এখানে সকালে এক রূপে, ও রাতে একরূপে পূজিত হয়ে আসছে। এখানে দেবীর এক হাতে থাকে চক্র এবং অন্যান্য হাতে থাকে ত্রিশূল, গদা, তীর-ধনুক, বজ্র্য, কুঠার, পদ্ম, শঙ্খ-সহ অন্যান্য অস্ত্র। অসুরদের বধ করার জন্যই নাকি তাঁর এই রূপ।
আরও পড়ুন- Tarapith: স্বপ্নাদেশে পুজো শুরু করেন বণিক, মা তারার আবির্ভাব দিবসে তারাপীঠে লোকারণ্য
আরও পড়ুন- Lakshmi Puja 2024: অবাক কারণে এবছর লক্ষ্মী পুজো বন্ধ এই গ্রামে, বিশদে জানলে চমকে উঠবেন!
পুজোর আচারেও আছে ভিন্নতা। কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে ১৬ রকম উপাচারের মাধ্যমে পূজিত হন দেবী লক্ষ্মী মাতা। পুজোর দিন সকালে বস্ত্র, আলতা, কাজল, চিরুনি, ধুপচি এবং অন্যান্য জিনিস দিয়ে মাকে পুজো করা হয়। ১০৮টি বেল পাতা অর্পণ করা হয় যজ্ঞে। ভোগে থাকে ৫ রকমের ভাজা, তিন রকমের তরকারি, ডাল এবং মিষ্টি। রাতে এখানে চিত্রপটে মহালক্ষ্মীকে পুজো করা হয়।
গাংগুরিয়া সারদা তীর্থ আশ্রমের আত্মাপ্রেনান্দ মহারাজ আরও বলেন, "এই পুজো দেখার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তদের ঢল নামে। এই পূর্ণিমার তিথিতে দেবীর সকালে মহালক্ষ্মী রূপে পূজিত হয়েছে। রাতে কোজাগরের লক্ষ্মী রূপে তিনি পূজিত হন। এই পুজো গোটা পশ্চিমবাংলার মধ্যে একমাত্র মালদার বামনগোলা ব্লকের গাংগুরিয়া আশ্রমে ১৮ হাতের মহালক্ষ্মীর পুজো হয়ে থাকে।" আশ্রমের আরও অনেকের বক্তব্য, দেবী এখানে লক্ষ্মী, মা দুর্গা, চণ্ডী রুপী সহ বিভিন্ন ভাবে পূজিত হয়ে থাকেন। তাই কাল্পনিক চিন্তাধারায় দেবীকে এখানে ১৮ হাত বিশিষ্ট হিসাবে পুজা করা হয়।