A teenager shot dead while making reels in Kaliachak: টিকটকের কায়দায় মোবাইলে রিলস্ বানাতে গিয়েই ঘটেছিল বিপত্তি। মৃত অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রকে অভিনয়ের ছলে বন্দুক দেগেছিল তারই এক বন্ধু। আচমকাই বন্দুক থেকে গুলি বেরিয়ে মাথায় লেগে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় ওই ছাত্রের। কালিয়াচকের শ্রীরামপুরে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এমন তথ্যই জানতে পেরেছে পুলিশ। এই ঘটনায় কালিয়াচক থানার পুলিশ মৃত ছাত্রের এক বন্ধুর সাফি আলিকে গ্রেফতার করেছে। যে বন্দুক থেকে গুলি করা হয়েছিল সেটি উন্নত মানের সেভেন এম.এম পিস্তল। আগ্নেয়াস্ত্রটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ধৃত সাফি আলির সঙ্গে করে ওই বন্দুকটি নিয়ে এসেছিল। তার বাড়ি কালিয়াচক থানার গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালাপাহাড় গ্রামে। ওই দুই ছাত্র কালিয়াচকের রমেশ চন্দ্র হাইস্কুলের একই ক্লাসে পাঠরত ছিল। এই ঘটনার আগের দিন ধৃত সাফি আলী মৃত ছাত্র সামিউল ইসলামের বাড়িতেই রাত কাটিয়েছে। পরের দিন দুপুরে এই ঘটনার পর সাফি আলি ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ নিজের বাড়ির ছাদে রহস্যজনক অবস্থায় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সামিউল ইসলামের মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার সময় পরিবারের লোকেরা কেউই বাড়িতে ছিলেন না। সামিউল আংশিক ভারসাম্যহীন থাকলেও বন্ধুবান্ধবদের সাথে তার রিলস্ বানানোর নেশা ছিল প্রবল। বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল নিয়ে রিলস্ করতে দেখা গিয়েছে সামিউলকে। গুলি কাণ্ডের ঘটনার পর বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করেন কালিয়াচক থানার আইসি সুমন রায় চৌধুরী। এরপরই মৃত ছাত্রের বন্ধুর জড়িত থাকার বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে , গুলিবিদ্ধ ছাত্রের দেহ উদ্ধারের পর তদন্ত শুরু করে রাতেই সাফি আলী ও তার এক দাদাকে আটক করা হয়। কিন্তু সাফি আলী নিজেই এই অপরাধে যুক্ত বলে সমস্ত ঘটনার কথা বলে ফেলে। পুলিশ জানতে পেরেছে, বুধবার রাতে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র সামিউল ইসলামের পাড়াতে জলসা ছিল। আর সেই জলসা শুনতে সাফি এসেছিল ওই এলাকায়। রাত হয়ে যাওয়ার কারণে সে সামিউলের বাড়িতে থেকে যায়।
পরের দিন বাড়ির লোকেদের অলক্ষ্যে ছাদের ওপর একটি সেভেন এমএম পিস্তল নিয়েই ওরা রিলস বানাচ্ছিল। তখনই এই বিপত্তি ঘটে। পুলিশি ধৃত সাফি আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর জানতে পেরেছে, ওই দিন দুপুরে বন্দুকটি প্রথমে সামিউল নিয়ে অনেকবার ট্রিগার চিপেছিল। কিন্তু গুলি বেরাইনি। এরপর ওই বন্দুকটি খারাপ বলে সাফিকে দিয়ে যাই সামিউল। সেই সময় সামিউলের দিকে তাক করে টিগার টিপতেই আচমকা গুলি বেরিয়ে যায়।
এদিকে কালিয়াচকে গুলিবিদ্ধ ছাত্রের দেহ উদ্ধারের পর শাসকবিরোধী রাজনৈতিক দোষারোপের পালা শুরু হয়েছে। বিজেপির জেলার সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুরি বলেন , শাসকদলের মদতে অল্প বয়সীদের হাতে বেআইনিভাবে আগ্নেয়াস্ত্র চলে যাচ্ছে। সন্ত্রাস ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এই ছাত্র খুনের ঘটনায় সকলের টনক নড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, যে ঘটনাটি ঘটেছে তা নিন্দনীয়। কিন্তু অপরাধীদের এই রাজ্যের পুলিশি গ্রেফতার করেছে। অথচ বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনো অপরাধ ঘটলে পুলিশকে কড়া হাতে দমন করতে দেখা যায় না। এটাই হচ্ছে এরাজ্যের সাথে বিজেপি রাজ্যের পার্থক্য।
আরও পড়ুন- Memari News: আর এক শেখ শাহজাহান! লোক ঠকানোর মারাত্মক এই কায়দা দেখে হতভম্ব দুঁদে গোয়েন্দারাও
কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে মৃত ছাত্রের বাবা রাজিবুল ইসলাম কালিয়াচক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাশাপাশি এই ঘটনায় ধৃতের কাছ থেকে সেভেম এম এম স্বয়ংক্রিয় বন্দুক একটি অ্যান্ড্রয়েড সেট মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ওই ছাত্রদেরকে তার বাড়ি থেকে ধরার সময় রক্তের দাগ লাগা একটি গোলাপি রঙের বিছনার চাদর উদ্ধার করেছে পুলিশ।