Afghanistan Earthquake: শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পৃথিবী, মৃত একাধিক, শতাধিক আহত, তুমুল চাঞ্চল্যে হুলস্থূল

Afghanistan Earthquake: ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (NCS) জানিয়েছে, রবিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিট ৫২ সেকেন্ডে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর একই অঞ্চলে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে

Afghanistan Earthquake: ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (NCS) জানিয়েছে, রবিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিট ৫২ সেকেন্ডে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর একই অঞ্চলে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে

author-image
Sayan Sarkar
New Update
আফগানিস্তান ভূমিকম্প, মাজার-ই-শরিফ, হিন্দুকুশ অঞ্চল, ভূমিকম্প আতঙ্ক, USGS রিপোর্ট, Afghanistan earthquake, Mazar-e-Sharif tremor, Hindukush fault, Kabul earthquake, NCS report

আফগানিস্তানে পরপর দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে

Afghanistan Earthquake: রবিবার গভীর রাতে আফগানিস্তানে পরপর দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, প্রথম ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৩.৯, আর দ্বিতীয়টি আরও শক্তিশালী — রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬.৩। পাঁচ  ঘণ্টার ব্যবধানে হওয়া এই দুই ভূমিকম্পে রাতের অন্ধকারে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন আতঙ্কিত মানুষজন। USGS-এর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে  হিন্দুকুশ পর্বতমালার মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছাকাছি মাটির প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল। রাজধানী কাবুলেও প্রবল কম্পন অনুভূত হয়।

Advertisment

ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (NCS) জানিয়েছে, রবিবার (২ নভেম্বর, ২০২৫) রাত ৮টা ৪০ মিনিট ৫২ সেকেন্ডে প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর একই অঞ্চলে দ্বিতীয় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার কেন্দ্রস্থল ছিল ভূগর্ভে ২৩ কিলোমিটার গভীরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পের পর বহু মানুষ আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। এএফপি-এর তরফে এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, “রাতের নিস্তব্ধতায় শহরের বহু মানুষ আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে ছুটে আসেন। কেউ খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়।” প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরি নম্বর জারি করা হয়। শেষ পাওয়া খবর অনুসারে প্রবল কম্পনে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা দেড়শো'র বেশি সাধারণ মানুষ। 

আরও পড়ুন- 'স্বামী, ভাই, শ্বশুরকে দিয়ে পঞ্চায়েতের কাজ চালানো যাবে না"', ক্ষুব্ধ তৃণমূল সাংসদ

Advertisment

সোমবার ভোররাতে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের মাজার-ই-শরীফে তীব্র কম্পন। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS)-এর তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল মাটি থেকে প্রায় ২৮ কিলোমিটার গভীরে। প্রায় ৫ লক্ষাধিক জনবসতিপূর্ণ এই ব্যস্ত শহর ও আশপাশের এলাকায় তীব্র কম্পন অনুভূত হয় বলেই খবর।  স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, প্রবল ক্কম্পনে এখনও পর্যন্ত অন্তত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১৫০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সামাঙ্গান প্রদেশের স্বাস্থ্য দফতরের মুখপাত্র সামিম জোয়ানদা জানিয়েছেন, “এদিনের ভূমিকম্পে ১৫০ জন আহত ও ৭ জন নিহত হয়েছেন। আহত সকলকেই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।”

আরও পড়ুন- 'ইতিহাস গড়ল দেশ, স্যালুট', আইসিসি মহিলা ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের জয়ে আপ্লুত মোদী

USGS-এর তরফে ইতিমধ্যে জারি করা হয়েছে “অরেঞ্জ অ্যালার্ট”।  সংস্থার মতে, ভূমিকম্পের তীব্রতা এবং অঞ্চলের পরিকাঠামোর বিবেচনায়, এই কম্পনে আরও প্রাণহানি এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ভূমিকম্পের প্রভাব আফগানিস্তানের সীমানা ছাড়িয়ে তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান পর্যন্ত পৌঁছেছে। আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “রবিবার রাত ১টা নাগাদ দেশের বেশ কয়েকটি প্রদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।”

আরও পড়ুন- নভেম্বরেও নেই শীতের দেখা! দক্ষিণবঙ্গে ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এদিনের ভূমিকম্প ছিল তাঁদের জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা। এক প্রাক্তন শিক্ষিকা রাহিমা বলেন, “আমি জীবনে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প কখনও অনুভব করিনি। আমার সন্তানরা চিৎকার করতে করতে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে।” তাঁর কংক্রিটের বাড়িটি টিকে গেলেও, শহরের প্রান্তের কাঁচা মাটির একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

উত্তর আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে উদ্ধার ও ত্রাণকাজ শুরু হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। উল্লেখ্য, চলতি বছরের আগস্ট মাসেও আফগানিস্তানে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে এক হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল বলে আফগান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছিল।

২০২১ সালে তালিবান পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে দেশে একাধিক বড় ভূমিকম্প আঘাত হানে। ২০২৩ সালে পশ্চিমাঞ্চলের হেরাত প্রদেশে এক বিধ্বংসী ভূমিকম্পে ১,৫০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয় এবং প্রায় ৬৩,০০০টি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। একই বছরের ৩১ আগস্ট পূর্ব আফগানিস্তানে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পে ২,২০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে — যা সাম্প্রতিক আফগান ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ বিপর্যয় ছিল।

আরও পড়ুন-জঙ্গলরাজ বনাম সুশাসন, বিহার নির্বাচনে খেলা ঘোরানোর বড় বাজি প্রধানমন্ত্রী মোদীর

আফগানিস্তানে ভূমিকম্প নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চলে ইউরেশীয় ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল হওয়ায় প্রায়ই এখানে ভূমিকম্প হয়। কয়েক দশকের যুদ্ধ, দারিদ্র্য, খরা এবং প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ইরান থেকে আফগান নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর চাপের ফলে দেশটি এমনিতেই এক গভীর মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। তার ওপর এই ধারাবাহিক ভূমিকম্প আরও বাড়িয়ে তুলছে মানুষের দুর্ভোগ।

earthquake Afganistan