Bangla Pokkho rally: বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের উপর লাগাতার আক্রমণ, বিশেষ করে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দিয়ে হেনস্থা, গ্রেফতার এবং নিপীড়নের প্রতিবাদে আগামী ৯ আগস্ট (শনিবার) এক বিরাট মিছিলের ডাক দিয়েছে। মিছিলটি বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কলেজ স্ট্রিট থেকে শুরু হয়ে শ্যামবাজার পর্যন্ত হবে।
বাংলা পক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই মিছিলের অন্যতম উদ্দেশ্য পশ্চিমবঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে ভূমিপুত্র সংরক্ষণ চালু করার দাবিকে আরও জোরালোভাবে সরকাররের কাছে উপস্থাপন করা। পাশাপাশি ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্থা ইস্যুতে প্রতিবাদ আন্দোলনকে আরও জোরদার করা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের পরিযায়ী শ্রমিক অসিত সরকার, হিন্দি বলতে না পারার কারণে মহারাষ্ট্রে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে গ্রেফতার হয়ে চার মাস ধরে জেলবন্দী, সেই ঘটনায় বাঙালি সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাবাই সর্দার, যিনি কট্টর RSS কর্মী হয়েও, বিজেপি সরকারের পুলিশের হাতে হেনস্থা হয়েছেন তাকে বাংলাদেশি বলে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে— এ ঘটনা বিজেপির দ্বিচারিতার বর্বোরোচিত উদাহরণ বলেই দাবি করেছেন সংগঠনের তরফে।
এই রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে বাংলার জাতিগত-ভাষাগত পরিচয়ের সুরক্ষা প্রশ্নে আবারও সরব বাংলা পক্ষ। ৯ আগস্টের মিছিল হবে সেই প্রতিবাদের প্রতীক। এবিষয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গর্গ চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, " বহুদিন থেকেই বাংলা ভাষা ও বাঙালি সমাজকে রক্ষা করার কাজ বাংলা পক্ষ করে চলেছে। তবে বর্তমানে বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের প্রতি যে হেনস্থা চলছে তা স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে বিরল। আমরা মালদার চাঁচল থেকে শুরু করে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ে যে সকল পরিযায়ীদের অত্যাচারের মুখে পড়তে হয়েছে তা এক কথায় বেনজির। বাড়ির লোকেরা জানতে পারছেন না তাদের ছেলে, বাবা বা স্বামী কোথায়? এমনকি তাদের বৈধ নথিটুকু আনার সুযোগটুকু দেওয়া হচ্ছে না। যেখানেই এমন অত্যাচার দেখবো বাংলা পক্ষ গর্জে উঠবে। এবিষয়ে বাংলার সবকটি রাজনৈতিক দলকে বাঙালি ঐক্য রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে। বাংলা বললেই যদি বাংলাদেশি হয়! তাহলে একই ভাবেই হিন্দি বললে কি তাহলে পাকিস্তানি? পাকিস্তানের অনেক লোক তো হিন্দি বলে"৷
এদিকে ভিন রাজ্যে বাঙালি হেনস্থা নিয়ে সোচ্চার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষা আন্দোলন সমাবেশ থেকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "যদি বাংলার মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে আমি সারা পৃথিবীর সামনে বিজেপিকে মুখোশ খুলে দেব"। তিনি অভিযোগ করেন, "বাংলার অধিকার ও ভাষাকে বিজেপি আক্রমণ করছে, এবং কমিশন (ECI) বিজেপির হাতের পুতুল হয়ে উঠেছে"। যদিও এপ্রসঙ্গে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ পাল্টা অভিযোগ তুলে বলেন, “বাংলাদেশি, রোহিঙ্গা, মৃত ও ডুপ্লিকেট ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে কমিশন, এতে সমস্যা কোথায়? মুখ্যমন্ত্রী তো সংবিধানকে আক্রমণ করছেন।”এদিকে, ভোটের আগে ইসি চারজন সরকারি আধিকারিককে ভোটার তালিকায় জালিয়াতির অভিযোগে সাসপেন্ড করেছে, যা নিয়েও সরব হয়েছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “ভোট এখনও ঘোষণা হয়নি, তাহলে FIR দায়ের করার নির্দেশ কিসের ভিত্তিতে?”