পুলিশ পিটিয়ে আসামী ছিনতাই, তৃণমূল নেতার 'বাহুবলী অ্যাকশন', হুলস্থূল কাণ্ডে বিরাট গ্রেফতারি

আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আব্দুল লালন বলেন, আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন দলীয় পদে থেকে কেউ প্রশাসনের বিরোধীতা করবে না।

আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আব্দুল লালন বলেন, আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন দলীয় পদে থেকে কেউ প্রশাসনের বিরোধীতা করবে না।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
cats

ধৃত তৃণমূল নেতা

রাজ্যে ফের শাসক নেতার হাতে আক্রান্ত পুলিশ। এবার ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম। তবে অবশ্য শেষ রক্ষ হয় নি। পুলিশ পিটিয়ে আসামী ছিনতাইয়ের অভিযোগে আউশগ্রাম থানার পুলিশ অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গোলাম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে।ধৃত আউশগ্রাম ২ নম্বর  ব্লকের অমরপুর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি গোলাম মোল্লার বাড়ি স্থানীয় বেলেমাঠ গ্রামে। এই ঘটনা আউশগ্রামের  রাজনৈতিক মহলে বেশ হুলস্থুল ফেলে দিয়েছে।ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা তীর্যক কটাক্ষে বিঁধেছে শাসক দলকে। 

Advertisment

আরও পড়ুন- দুপুর গড়াতেই কলকাতায় শুরু তুমুল বৃষ্টিপাত, ফের নিম্নচাপের ভয়াল প্রভাব বাংলায়? ব্রেকিং আপডেট আবহাওয়া দফতরের

এদিকে দলের মুখ পোড়ানোর মতো এমন ঘটনা ঘটানো তৃণমূল নেতা গোলাম মোল্লার পাশে দাঁড়ান  নি আউশগ্রাম ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি আব্দুল লালন। এ নিয়ে তিনি বৃহস্পতিবার বলেন, “আমাদের দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেকেন্ড ইন কমাণ্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়ে দিয়েছেন দলীয় পদে থেকে কেউ প্রশাসনের বিরোধীতা করবে না। কারণ প্রশাসন আমাদেরই। তার পরেও যদি কেউ প্রশাসনের কাজে বাধা দিতে যায় বা প্রশাসনের গায়ে হাত তোলে তবে তো প্রশাসন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেই।এমনকি এমন ঘটনায় জড়িত দলের কারুর বিরুদ্ধে কোনও সিদ্ধান্ত নিতেও  দল পিছপা হবে না।"অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন,“আইন আইনের পথে চলবে।আমাদের দলে একটা শৃঙ্খলা আছে।এবার দলও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।"

Advertisment

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,“অমরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান এবাদত শেখ বেলেমাঠ গ্রামেরই বাসিন্দা।গত ২৭ সেপ্টেম্বর এবাদত শেখকে ব্যাপক মারধর করে গোলাম মোল্লার কয়েকজন অনুগামী। জানা গিয়েছে!দুর্গা পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় ওদিন এবাদত শেখ তাঁর মেয়েকে হোষ্টেল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন ।অভিযোগ,ওই সময়ে স্থানীয়  বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যাণ্ডের কাছে এবাদত পৌঁছাতেই তাকে বেলেমাঠ গ্রামেরই চারজন ঘিরে ধরে ব্যাপক মারধর করে। মারধোরে এবাদত জখম  হন। তাকে হাসতালে ভর্তি করা হয়।মারধোরের ঘটনায় জড়িত  জাকির শেখ, আমানত শেখ, জীবন মোল্লা এবং নাসির শেখের নামে আউশগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এবাদত শেখের স্ত্রী মোমেনা বেগম।

আরও পড়ুন-তালিবান সম্পর্কে দিল্লিতে বড় সিদ্ধান্ত, কাবুলে এবার বিরাট পদক্ষেপ ভারতের

কিন্তু অভিযুক্তরা কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় কয়েক দিন এবাদত শেখ জেলার পুলিশ সুপারের কাছে নালিশ জানান। এর পরেই পুলিশ নড়ে চড়ে বসে। পুলিশ অভিযুক্তদের পাকড়াও করতে যায়। অভিযোগ,পুলিশ এক অভিযুক্ত আমানত শেখ কে আটক করতেই গোলাম মোল্লার নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিরা লাঠি-রড হাতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়ে। এতে তিনজন পুলিশ কর্মী আহত হন। বিশৃঙ্খলার সুযোগে অভিযুক্ত আমানত সেখকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় গোলাম মোল্লার  লোকজন।

জখম পুলিশ কর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বননবগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘটনার পরই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়ের করে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। সেই মামলার তদন্তে নেমে  বৃহস্পতিবার পুলিশ তৃণমূলের অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি গোলাম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ গোলাম মোল্লার বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান,আসামীকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেওয়া,পুলিশকে মারধোর, প্রভৃতি ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে,হিংসাত্মক কার্যকলাকে সিদ্ধ হস্ত গোলাম মোল্লা। ইতিপূর্বে ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় সিপিএম তৃণমূল সংঘর্ষে এক সিপিএম কর্মী খুন হন।ওই খুনের ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছিলেন গোলাম মোল্লা। বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত আছেন। 

জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলোন,“গোলাম মোল্লার মতো নেতারই তৃণমূলের সম্পদ। তাই তিনি পুলিশকে আক্রমণ করার স্পর্ধা দেখাতে পেরেছেন। এইসব কাজ তৃণমূলের কাছে দুষ্টমি হিসাবেই বিবেচিত হয়।সেই কারনে তৃণমূলের রাজত্বে মাঝেমধ্যেই পুলিশকে এমন দুষ্টুর দুষ্টুমির শিকার হতো হচ্ছে। কয়েকদিন আগে জেলার জামালপুর থানার চক্ষণজাদি গ্রামে পুলিশ একই রকম আক্রমনের শিকার হয়েছিল।এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সেখানকার বেরুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের  সভাপতি শেখ শাহাবুদ্দিন ওরফে দানির টিকি পুলিশ এখনো ছুঁতে পারে নি।"

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজো মিটতেই অ্যাকশন মোডে ED! দাপুটে মন্ত্রীর অফিস-সহ কলকাতার দিকে দিকে হানা

police tmc