Birbhum News: ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ, বীরভূমের গ্রামে চ্ছিন্নভিন্ন দেহ, বীভৎস পরিস্থিতিতে হাহাকার

territorial clash:এলাকা দখলের লড়াইয়ে বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যুর আশঙ্কা। মৃতদের মধ্যে একজন নাবালকও রয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, নকল সোনার কয়েনের বেআইনি ব্যবসার পাশাপাশি এলাকা দখল নিয়ে লাভপুর থানার হাতিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা ছিল। উত্তেজনার মধ্যেই গ্রামছাড়া ছিলেন বেশ কয়েকটি পরিবার। গ্রামছাড়ারা তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি আব্দুল মান্নানের 'লোক' বলে পরিচিত। 

বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার রাত থেকে গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। অভিযোগ, গ্রামছাড়ারা গ্রামে ঢোকার জন্য বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। এদিকে শনিবার সকালে গ্রামের এক প্রান্তে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই বিস্ফোরণের এক নাবালক-সহ কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।

মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় বেশ কয়েকজন এলাকায় নকল সোনার কয়েনের ব্যবসা করে। তাদেরকেই সহযোগিতা করে এলাকারই আরও বেশ কয়েকজন। গ্রামের শেখ মনির ও মোস্তাকিম শেখ এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যেই চলে এই নকল সোনার কয়েনের ব্যবসা। জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই মনির গোষ্ঠীর লোকজন গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল মোস্তাকিম শেখ গোষ্ঠীর লোকেদের। 

আরও পড়ুন- Abhijit Gangopadhyay: ভালো নেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, দিল্লি AIIMS-এ দেখাশোনার দায়িত্বে খোদ কে আছেন জানেন?

তারপরই শুক্রবার রাতে গ্রাম দখল করতে এসে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু করে মোস্তাকিম গোষ্ঠীর লোকজন। রাতভর চলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি। এমনকী গুলির লড়াইও চলে বলে অভিযোগ। রাতে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর ভোর থেকে আবারও শুরু হয় গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজি। অভিযোগ তারপরই সকালে গ্রামের দুই যুবক সাবির সেখ ও আলমগির শেখ সহ আরও বেশ কয়েকজন গ্রামের ধারে বসে ছিলেন।

আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates: দিল্লির AIIMS-এ ভর্তি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, এখন কেমন আছেন সাংসদ? এল বড় খবর!

অভিযোগ, সেই সময়ই মোস্তাকিম শেখ গোষ্ঠীর লোকজনরা এসে তাদের উপর বোমা ছোড়ে। সেই আঘাতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয় বলে দাবি। বাকি বেশ কয়েকজন গুরুতরভাবে জখমও হয়েছেন। সেই সময়ই ঘটনাস্থলে একটি ১০ বছরের নাবালক ছিল। সেও বোমার আঘাতে ঝলসে যায়। এই ঘটনার পরই গ্রামে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে মনির শেখ গোষ্ঠীর লোকেরাও। 

আরও পড়ুন- Abhijit Gangopadhyay: ঠিক কী হয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের? কেন BJP সাংসদকে নিয়ে এত বাড়ছে উদ্বেগ?

অন্যদিকে সূত্রের খবর, শনিবার সকালে এলাকা কিছুটা শান্ত হওয়ার পর দুই গোষ্ঠীর লোকেরাই বোমা মজুত ও বোমা বাধার কাজ শুরু করে। সেই সময়ই বোমার বিস্ফোরণের ফলে পরপর মৃত্যু। তাদের দেহের ছিন্নভিন্ন অবস্থা দেখে এমনটাই মনে করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। এদিন সকাল থেকেই দেহ দীর্ঘক্ষণ গ্রামের মধ্যেই পড়েছিল। অভিযোগ কয়েক ঘন্টা পরে বোলপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রিকি আগরওয়ালের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছোয় গ্রামে। তারপরে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ময়নাতদন্তের জন্য। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি এত বড় ঘটনার পরও পুলিশ মৃতদেহ তুলে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও তদন্ত করেনি।

এমনকী যেখানে এই বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে সেই স্থান পরিদর্শন বা ঘিরেও রাখেনি পুলিশ। স্বাভাবিকভাবেই লাভপুর থানা ও বীরভূম জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন গ্রামেরই একাংশের বাসিন্দা। 
গ্রামের বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, এই দুই গোষ্ঠীই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তার মধ্যে স্থানীয় অঞ্চল তৃণমূল গোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গে বিরোধ লাভপুর ব্লক গোষ্ঠীর। ব্লকের অন্যতম নেতা তথা বীরভূম জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নানের গোষ্ঠী। 

আরও পড়ুন- Sealdah division: শিয়ালদহ ডিভিশনে ফের বাতিল একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন, দুর্ভোগ এড়াতে জানুন বিশদে

অন্যদিকে লাভপুরের বিধায়ক রানা গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ। এই আব্দুল মান্নান গোষ্ঠীর লোকজনই দীর্ঘদিন ধরে এলাকা দখলে রেখেছিল। তার ফলে হাতিয়া গ্রামে এদিনের এই ঘটনায় সরাসরি ভাবে তৃণমূলের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।
 গ্রামের বাসিন্দা রেজিনা বিবি বলেন, "আমরা রানা সিংয়ের লোক। গ্রামেই আব্দুল মান্নান গোষ্ঠীর লোকরা গ্রাম ছাড়া ছিল। তারাই গ্রামে ঢুকে বোমাবাজি করে। তাদের ছোড়া বোমাতেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।" পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।