financial crime:গ্রেফতার বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্ট, আর্থিক অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ ওড়ালেন চেয়ারম্যান

cheque fraud: যদিও বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অনিয়মে তাদের অ্যাকাউন্ট্যান্টের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

cheque fraud: যদিও বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অনিয়মে তাদের অ্যাকাউন্ট্যান্টের জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Burdwan Municipal Corporation, Samir Mukhopadhyay, Maharashtra Police, cheque fraud, 48 lakh scam, municipal accountant arrest, bank cheque forgery, financial crime, cross-state investigation, Burdwan Municipality corruption,বর্ধমান পুরসভা টাকা আত্মসাৎ  ,সমীর মুখোপাধ্যায় গ্রেপ্তার,  মহারাষ্ট্র পুলিশ বর্ধমান,  নকল চেক প্রতারণা  ,টাকা লোপাট বর্ধমান পুরসভা  ,অ্যাকাউন্ট্যান্ট গ্রেপ্তার বর্ধমান  ,বর্ধমান সিজেএম আদালত,  ট্রানজিট রিমান্ড সমীর মুখোপাধ্যায়,  হিঙ্গনঘাট থানার মামলা,  ব্যাংক প্রতারণা বর্ধমান

Burdwan Municipality: বর্ধমান পুরসভা।

নতুন মোড় নিল বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট থেকে কোটির বেশি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়া কাণ্ড। বর্ধমান পুরসভার চেক ব্যবহার করে ৪৮ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মহারাষ্ট্র পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হলেন পুরসভারই আ্যাকাউন্ট্যান্ট। ধৃতের নাম সমীর মুখোপাধ্যায়। বর্ধমান থানার সাহায্য নিয়ে মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা সোমবার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করে। মঙ্গলবার ধৃতকে পেশ করা হয় বর্ধমান সিজেএম আদালতে। ষদিও পুরসভার দাবি, এই অনিয়মের সঙ্গে তিনি জড়িত নয়। 

Advertisment

তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে মহারাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান আর্থিক অপরাধ দমন শাখার তদন্তকারী অফিসার। সেই আবেদন মঞ্জুর করেছেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম পাসান লামা শেরপা। এরই পাশাপাশি ধৃতকে হিঙ্গনঘাটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে পেশ করে আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট পাঠানোর জন্যেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। বর্ধমান পুরসভা কর্তৃপক্ষ অবশ্য এই ঘটনায় তাদের অ্যাকাউন্ট্যান্টের জড়িত থাকার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে। 

বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার মঙ্গলবার আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, “ব্যাঙ্কের গাফিলতিতেই টাকা উঠে গিয়েছিল। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা বর্ধমান থানাকে জানাই। তারই মধ্যে মহারাষ্ট্র পুলিশ তদন্ত শুরু করে দেয়। অ্যাকাউন্ট্যান্ট মহারাষ্ট্রে গিয়ে কিভাবে নকল চেক তৈরি করে টাকা তোলা হয়েছিল তার প্রমাণ দিয়ে আসেন। অ্যাকাউন্ট্যান্টের বিরুদ্ধে মামলা করা ঠিক নয়।"

Advertisment

আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates: ত্রিপুরায় তৃণমূল কার্যালয়ে দুষ্কৃতী তাণ্ডব! মমতার নির্দেশে আগরতলায় কুণাল, সায়নীরা

মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা সূত্রে জানা গিয়েছে, “২০২৪ সালের ৬ অগাস্ট পুরসভার চেক ব্যবহার করে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮ লক্ষ ২১ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। তারপর সেই বছরেরই ৪ সেপ্টেম্বর একটি চেকে ৯৫ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা তোলা হয়। এর দু’দিন পরে ৯৭ লক্ষ ৫২ হাজার টাকার একটি চেক ব্যাঙ্কে জমা পড়ে। ব্যাঙ্ক থেকে পুরসভার কাছে চেক জমা পড়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। পুরসভার দাবি, ’যেসব নম্বরের চেক ব্যবহার করে টাকা তোলা হয়েছে বা তোলার জন্য জমা পড়েছে সেই সবক’টি চেক’ই পুরসভার হেফাজতে রয়েছে। পুরসভা ব্যাঙ্কের কাছে টাকা ফেরতের জন্য চিঠি দেয়। ব্যাঙ্ক পুরসভাকে টাকা ফিরিয়ে দেয়। তবে, ব্যাঙ্কের তরফে মনীশ উত্তম জিগরল অভিযোগ দায়ের করেন হিঙ্গনঘাট থানায়। 

আরও পড়ুন-Bangladeshi Arrested:ভারতীয়কে বাবা বানিয়ে আধার-ভোটার কার্ড তৈরি, অতর্কিতে হানায় গ্রেফতার বাংলাদেশি-সহ ২

সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জাল নথিপত্র তৈরি করে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের ধারায় কেস রুজু করে হিঙ্গনঘাট থানা। তদন্তে নেমে ওই থানার পুলিশ বিনোদ নামদেব রাও মাতে, তুষার মূর্তিধর হারনে, ভূষণ মাহেন্দ্র পান্দ্রে এবং অনুপ অজিত কুমার কোঠারিকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় অভিযুক্ত শ্রাবন আন্না এখনও ধরা পড়েনি। এই গ্রেপ্তারির পরেই একটি মোবাইল নম্বরের হদিশ পায় তদন্তকারী সংস্থা। সেই নম্বরটি বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্টের বলে তদন্তকারীরা জানতে পারে। তার পরেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মহারাষ্ট্রের আর্থিক অপরাধ দমন শাখা বর্ধমান পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্টকে ডেকে পাঠায়। এর আগে কয়েকবার সেখানে গিয়ে তদন্তকারীদের মুখোমুখিও হয়েছেন পুরসভার অ্যাকাউন্ট্যান্ট সহ একাধিক পুরকর্মী। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জবাবও দিয়েছেন। অভিযুক্ত তদন্তকারী সংস্থার কাছে দাবি করেছে, কেউ তার সিম কার্ড জালিয়াতি করে ব্যবহার করেছে। সিম হ্যাক হয়েছে বলে বর্ধমান সাইবার ক্রাইম থানায় তিনি অভিযোগ করেছেন বলেও দাবি করেছেন।

যদিও তদন্তকারী সংস্থার দাবি, “ঘটনার সময় মোবাইলটি অভিযুক্ত অ্যাকাউন্ট্যান্টের কাছেই ছিল এবং সে-ই মোবাইলটি ব্যবহার করেছে। ২০২৪ সালের ৮ নভেম্বর ৫০ টাকা জমা দিয়ে সে মোবাইল সংস্থার অফিসে একটি অভিযোগ জমা করে। তাতে জানানো হয়, “তার মোবাইলটি কাজ করছে না। সম্প্রতি গ্রেপ্তারি এড়াতে আগাম জামিনের আবেদন করে অভিযুক্ত অ্যাকাউন্ট্যান্ট। কিন্তু, হিঙ্গনঘাট আদালতের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সেই আবেদন খারিজ করে দেন। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যোগ করা মোবাইলে লেনদেন সংক্রান্ত মেসেজ পাঠানো হত। সেটি অভিযুক্তের। সওয়াল-জবাবের পর অভিযুক্তের জামিন খারিজের নির্দেশ দেন বিচারক। 

আরও পড়ুন- Chingrikhali Fort:ডায়মন্ড হারবারের পুরনো কেল্লা, নদীগর্ভে বিলীন হতে চলা ঐতিহাসিক দুর্গের নেপথ্যে রহস্যে ঘেরা কাহিনী

এদিন আদালত চত্বরে বেশ কয়েকজন পুরসভার আধিকারিক হাজির ছিলেন। তাঁরা কেউই ঘটনায় অ্যাকাউন্ট্যান্টের জড়িত থাকার কথা মানতে চাননি। তাঁদের সাফ কথা, ব্যাঙ্কের ভুলে টাকা উঠেছে। ব্যাঙ্ক তাই টাকা ফেরতও দিয়েছে। এখন মিথ্যা মামলায় অ্যাকাউন্টেন্টকে গ্রেপ্তার করা হল। অ্যাকাউন্ট্য়ান্টকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে শহরবাসীর একাংশ প্রশ্ন তুলেছে।  

Bengali News Today Arrested Scam burdwan