Business Ideas: কম পুঁজিতেই বাজিমাত! দিনে-দিনে এ গাঁয়ে বাড়ছে 'রোজগেরে গিন্নি'ও
Business Ideas: বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই সামগ্রীর ব্যবহার। পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে একাজে সামিল হয়ে রোজগারের দিশা খুঁজে পেয়েছেন বাড়ির মহিলারাও।
Women are becoming self reliant by joining the hand fan making business: গরম পড়তেই কদর বেড়েছে হাতপাখার। শীত পাততাড়ি গুটোতেই হঠাৎ করে ব্যস্ততা যেন বেড়ে গিয়েছে অনেক বাড়ির মহিলাদেরই। পাখা তৈরির কাজে রোজগারের মাধ্যমে স্বনির্ভর হচ্ছেন বাংলার বহু গ্রামের মহিলারা। বাঙালির সংস্কৃতির অন্যতম উপকরণ হল এই হাতপাখা। গ্রাম কিংবা শহর, সব জায়গাতেই একেবারে 'সুপারফিট' এই হাত পাখা। গ্রীষ্মের প্রখর তাপ থেকে শরীরকে শীতল রাখতে যুগের পর যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে হাতপাখার। বছরের অন্য সময়ে হাতপাখার ব্যবহার না থাকায় বাজারে তেমন চাহিদা থাকে না। তবে গরম পড়তে না পড়তেই চাহিদার সুনামি তৈরি হয়।
Advertisment
এবারের মতো বিদায় নিয়েছে শীত। বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রা। বেলা বাড়তেই বাইরের তাপমাত্রাও যাচ্ছে বেড়ে। গরমে ঘরে বসে থাকলেও অনেক সময়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাটর জেরে গলদঘর্ম পরিস্থিতি হয়। গরমের সখা হাতপাখা। এর কদর কখনই কমবে না। বাড়িঘর, দোকানপাট, চলতি পথে হাত পাখা চালিয়ে শরীরটাকে শীতল করতে দেখা যায় অনেককেই। বাজারে হাতপাখার চাহিদা এখনই বেড়েছে। গরম বেশি বাড়লে হাত পাখার চাহিদা আরও কয়েকগুণ হবে। তালপাতার পাখা ও বোর্ডের পাখার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রতিটি হাতপাখা খুচরো বাজারে ১০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তবে হাত পাখার সাইজ ও গুণগত মানের উপর নির্ভর করে তার দামের তারতম্য।
বিশেষ করে বাসযাত্রী, হাটবাজারের খুচরো ব্যবসায়ী ও গরিব মানুষের কাছে এই পাখার চাহিদা বেশি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের ডিমারি এলাকার মানুষজন এই হাত পাখা তৈরির পেশার সঙ্গে যুক্ত। এলাকার প্রায় ১০০/১৫০ পরিবার হাতপাখা তৈরির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
এলাকার হাতপাখা প্রস্তুতকারক শুভঙ্কর মণ্ডল বলেন, "দীর্ঘ প্রায় ২৫/৩০ বছর ধরে এই পেশায় থেকে এলাকার মহিলাদের যুক্ত করে হাতপাখা তৈরির কাজ করে চলেছি। গরমের সময় বাজারে চাহিদা বেড়ে যায়। তাই মাস দুয়েক আগে থেকে কাজ শুরু হয়ে যায়। বর্তমান সময়ে তালপাতার পাখার চাহিদা থাকলেও তা পূরণ করা যাচ্ছে না। কারণ তালগাছের সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। ফলে তালপাতা সংগ্রহ করা খুব চাপের হয়ে পড়ছে। তাই এখন বোর্ডের পাখা বেশি তৈরি হচ্ছে। আমাদের কাছে ৩ টাকা থেকে ৩০০ টাকা দামের পাখা তৈরি হচ্ছে। সেগুলি জেলার বিভিন্ন বাজারে চাহিদা মতো ছড়িয়ে পড়ছে।"
এলাকারই গৃহবধূ পুতুল দাসের কথায়, "বাড়িতে বসে না থেকে তালপাতার হাতপাখা তৈরি করছি। অন্য বছরের চেয়ে এ বছর দাম বেশি। এলাকার অনেকেই এ কাজ করে ভালো টাকা আয় করছেন। সংসারের ফাঁকে কাজ করে যে টাকা উপার্জন হয় তাতে সংসার চলে যায় কোনওরকমে।"
পাখা বিক্রেতা সুজয় বেরা বলেন, "গরম পড়তেই হাতপাখার চাহিদা বেড়েছে। যেভাবে লোডশেডিং হচ্ছে গরমের হাত থেকে স্বস্তির জন্য হাতপাখায় ভরসা রাখছেন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন। কম দামে পাওয়া যাচ্ছে বলে এক একজন ৪/৫ টা করে নিয়ে যাচ্ছেন পরিবারের সকল সদস্যের জন্য।"