Canine was beaten to death by villagers in East Burdwan: পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের জঙ্গলে এখনও ঘাপটি মেরে রয়েছে বাঘিনী জিনাত। সে কার্যত ল্যাজে খেলাচ্ছে বনকর্মীদের। পুরুলিয়ায় রয়্যাল আতঙ্কের মাঝেই এবার বুনো 'দেশি নেকড়ে' অর্থাৎ 'হেরোল' হানায় তীব্র আতঙ্ক পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদে। ইতিমধ্যেই একের পর মানুষকে কামড়ে জখম করেছে এই 'দেশি নেকড়ে'। বুদবুদের দেবশালার গোবিন্দপুর গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে কার্যত ঘরবন্দি ছিলেন। সেই আতঙ্ক থেকে নিস্কৃতি পেতে হেরোলটিকেই প্রাণে মেরে ফেলে গ্রামবাসীরা। এদিকে পিটিয়ে হেরোল হত্যার ঘটনার খবর পেয়ে পূর্ব বর্ধমান রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হেরোলটির মৃতদেহ
উদ্ধার করে।
জেলার বিভাগীয় বনাধিকারিক সঞ্চিতা শর্মা জানিয়েছেন, মৃত হেরোলটিকে বর্ধমানের রমনা বাগানের বনদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে হেরোলটির মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে। হেরোলটির হিংস্র হয়ে ওঠার পিছনে 'র্যবিশ' বা ডিস্টেম্পারের মত রোগ কারণ কিনা তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, "মানুষের সঙ্গে ব্যন্য প্রাণীদের সংঘাত কমাতে বনাঞ্চলে পেট্রলিং করা হবে। বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হবে।"
গোবিন্দপুর এলাকার বাসিন্দাদের কথা অনুযায়ী,হেরোলের কামড়ে এলাকার প্রায় ১৫ জন জখম হয়েছে। তাই হেরোলটির উপর এলাকার বাসিন্দাদের রোষ আছড়ে পড়ে। গ্রামবাসীদের কথায় এও জানা যায়, ইদানিং হেরোল মাঝে মধ্যেই এলাকার লোকালয়ে হানা দিচ্ছে। শিকার করছে ভেড়া, ছাগল। সেই সঙ্গে এলাকার মানুষজনকেও কামড়ে জখম করছে। এসবের জন্যই মাংশাসী হেরোলের সঙ্গে মানুষের সংঘাত বাড়ছে। তারই চূড়ান্ত রূপ এদিন প্রকাশ পেয়েছে।
অন্যদিকে, প্রাণী বিশারদদের কথায় জানা গিয়েছে, 'হেরোল' আসলে হল ’ইণ্ডিয়ান গ্রে উলফ’ অর্থাৎ বুনো 'দেশি নেকড়ে'। ভারতীয় উপমহাদেশেই এদের দেখা মেলে। এটিকে বাঘ বলা হলেও এরা আসলে 'ক্যানাইন' প্রজাতির প্রাণী। গত কয়েক বছরে এদের সংখ্যা বেড়েছে। দেবশালার কাছে
কাঁকসা ও আউশগ্রামের জঙ্গলমহলে শিয়ালের পাশাপাশি হায়নাও আছে। হায়নাকে আধবাঘা আর নেকড়েকে হেরোল বলা হয়। একটি রিসার্চে উঠে এসেছে, এদের সংখ্যা কম করে পঞ্চাশ থেকে দেড়শোর কাছাকাছি হতে পারে। একসময় জঙ্গল অনেকটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। পরে বনসৃজন প্রকল্পের দৌলতে গাছপালা বাড়লে হেরোল অনুকূল পরিবেশ পায়। কিন্তু বর্তমানে বনাঞ্চলের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় খাদ্যের টান পড়তেই হেরোল লোকালয়ে ঢুকছে।
আরও পড়ুন- West Bengal Weather: খেলা ঘুরবে খুব শিগগির! তীব্র শীতে কাঁপবে বাংলা, তাপমাত্রা নামবে ১০ ডিগ্রির নিচে
বর্ধমান অ্যানিমাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সদস্য অর্ণব দাস জানান, হেরোল পরিবেশে এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। এই হেরোলটি র্যাবিশ আক্রান্ত ছিল কিনা, তা হয়তো নিশ্চয়ই দেখা হবে। হেরোলটিকে হত্যার জন্য অনুতাপ প্রকাশ করে তিনি বলেন, "এই প্রাণীদের নিয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সংঘাতের পরিবেশ কমাতে হবে।"