করোনা মোকাবিলায় বাংলার চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ফের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিল কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ দল। প্রথম চিঠির পর দ্বিতীয় চিঠিতেও রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহার কাছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র চিকিৎসা ব্যবস্থা সংক্রান্ত একাধিক তথ্য জানতে চেয়েছেন। এর আগের চিঠিতে করোনায় বাংলায় মৃত্যু নিশ্চিত করতে কেন সময় লাগছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়ার পাশাপাশি ডেথ অডিট কমিটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কেন্দ্রীয় দল।
চিঠিতে কী লিখেছে কেন্দ্রীয় দল?
কেন্দ্রীয় দলের তরফে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ''সিএনসিআই ও বাঙুর হাসপাতালে আইসোলেশনে ভর্তি অনেক রোগীর পরীক্ষার ফল জানতে ৫ দিন বা তারও বেশি সময় লাগছে। বিশেষত, সিএনসিআই-তে গত ১৬ তারিখ থেকে করোনা পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা করছেন ৪ রোগী, ১৭ তারিখ থেকে পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা করছেন ২ জন রোগী, ১৮ তারিখ থেকে পরীক্ষার ফলের জন্য অপেক্ষা করছেন ৩ জন রোগী। কেন পরীক্ষার ফল জানতে এতটা সময় লাগছে তা স্পষ্ট নয়''।
আরও পড়ুন: বাংলায় করোনায় মৃত বেড়ে ১৮, আক্রান্ত ৩৮৫, জানালেন মুখ্য়সচিব
বাঙুর হাসপাতালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না বলেও চিঠিতে দাবি করেছে কেন্দ্রীয় দল। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাঙুরে মাত্র ১২টি ভেন্টিলেটর বেড রয়েছে, অথচ রোগীর সংখ্যা ৩৫৪।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ''সোশাল মিডিয়ায় দেখা গিয়েছে যে হাসপাতালের ওয়ার্ডে বেডে মৃতদেহ ফেলে রাখা হচ্ছে। এটা হতে পারে কারণ আমরা দেখেছি, ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করতে কমপক্ষে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে''।
মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠিতে কেন্দ্রীয় দলের প্রধান উল্লেখ করেছেন, করোনায় স্বাস্থ্যকর্মীদের মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, এ ধরনের মৃত্যুতে কেন্দ্র ৫০ লক্ষ টাকা করে দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী আপনি ‘পাহাড় প্রমাণ ব্যর্থতা’ ঢাকতেই ‘স্ট্রিট ফাইটার’ অবতার ধারণ করেছেন: রাজ্যপাল ধনকড়
কেন্দ্রীয় দলের প্রশ্নমালা প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ''কেন্দ্রীয় দলের প্রশ্নের উত্তর দেবে স্বাস্থ্যবিভাগ। প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংক্রান্ত প্রশ্ন থাকলে আমরা জবাব দেব, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে স্বাস্থ্য দফতর জবাব দেবে''। তিনি আরও বলেন, ''আমরা কেন্দ্রীয় দলকে সবরকম সহযোগিতা করছি''।
করোনায় বাংলায় মৃতদের কীভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, তা নিয়ে যে কমিটি গড়া হয়েছে, সেই কমিটির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে কেন্দ্রীয় দলের চিঠিতে। কীসের ভিত্তিতে ডাক্তারদের নিয়ে এই কমিটি গড়া হয়েছে, সে ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে। এ প্রসঙ্গে এদিন রাজ্যে করোনায় মৃতের পরিসংখ্যান তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, ''ডেথ অডিট কমিটি জানিয়েছে, ৫৭ জনের মৃত্যু খতিয়ে দেখেছে তারা। ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুর তাৎক্ষণিক কারণ অন্য রোগ। ডক্টরস ফোরামের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে''।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন