CID questions ex‑vice chancellor embezzlement case:বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা উধাও হয়ে যাওয়া কাণ্ডের তদন্তে প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ নিমাই চন্দ্র সাহাকে তলব করেছিল CID। সেই তলব মোতাবেক আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে বর্ধমানের সিআইডি দফতরে পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য। সিআইডি অফিসারদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই তিনি বেরিয়ে গিয়েছেন।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা ২০২৩ সালের মার্চ - এপ্রিল মাস নাগাদ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ফিক্সড ডিপোজিট প্রি ম্যাচিউরিটি করিয়ে অচেনা ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করার অভিযোগ ওঠে। এমন ঘটনায় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তাদের যোগসাজশ থাকার অভিযোগ নিয়ে তখন বিস্তর জলঘোলাও হয়। তা নিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হলেও বর্ধমান থানায় FIR দায়ের করা হয় প্রায় এক বছর বাদে। এফআইআর দায়েরে এত দেরি নিয়েই ওঠে প্রশ্ন। সেই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারি রেজিস্ট্রার দেবমাল্য ঘোষ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার দু'বছর পরেও উধাও হয়ে যাওয়া প্রায় দু'কোটি টাকার সন্ধান এখনও মেলেনি।
এই পরিস্থিতিতে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে কোটি কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে ‘ক্যাগ’-কে রিপোর্ট পেশ করার জন্যে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। ED-ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতি নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে। এরই পাশাপাশি হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকেও তদন্তের রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে বলেছে।
আরও পড়ুন- illegal arms: বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে বারবার নাম জড়াচ্ছে রাজ্যের এই জেলার
জানা গিয়েছে, ৩০ জুন আদালত একসঙ্গে সব রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে। তার আগে সিআইডি ও পুলিশ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা গায়েব হয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্তে নেমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ’ক্লু’ পায়। তদন্তকারী পুলিশ ও সিআইডি কর্তারা জানতে পারেন, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কলকাতার বিজয়গড়ের ঠিকাদার সুব্রত দাস-সহ একাধিকজনের অ্যাকাউন্টে গিয়েছিল। পুলিশ ও সিআইডি ওই ঠিকাদারকে গ্রেফতার করে। পরে বর্ধমান ও খণ্ডঘোষের দু’জন এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মীকে পুলিশ ধরে। তবে সিআইডি এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বলে যাঁকে মনে করছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের সেই কর্মী ভক্ত মণ্ডল এখনও অধরা রয়েছেন।
আরও পড়ুন- West Bengal News Live Updates: নদীর ওপর ভেঙে পড়ল আস্ত ব্রিজ, বিরাট বিপর্যয়! হু হু করে ঢুকছে জল
এদিকে এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আভ্যন্তরীণ তদন্তেও বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে। তা খতিয়ে দেখার জন্যে হাইকোর্ট সিআইডিকে নির্দেশ দেয়। তার ভিত্তিতেই সিআইডি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহাকে বর্ধমানে তাদের দফতরে তলব করেছিল। নিমাই চন্দ্র সাহার আইনজীবী প্রদীপ্ত সিদ্ধান্ত বলেন, "বেশ কিছু তথ্য জানতে চান সিআইডির তদন্তকারী আধিকারিকরা। তবে জিজ্ঞাসাবাদের সময় কোনও ভিডিও রেকর্ডিং করা হয়নি। নিমাই সাহা তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। আগামী দিনেও তিনি এটাই করবেন।"
আরও পড়ুন- Pune Road Accident: বিরাট পথদুর্ঘটনা, রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে একের পর এক দেহ, ডুকরে ওঠা কান্না, আর্তনাদ, শোকপ্রকাশ মোদীর
ওই আইনজীবীর কথায় আরও জানা গিয়েছে, সম্ভবত আবার আগামী ৩০ জুন সিআইডি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য নিমাই চন্দ্র সাহাকে ফের তলব করতে পারে। সিআইডির রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৬টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। ৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা এখন জামিনে মুক্ত। দু'জন আগাম জামিন নিয়েছেন। একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিক্সড ডিপোজিট ভেঙে নয়ছয় হয়েছে বলে সিআইডির দাবি।