Potato Price Hike: বাংলাদেশ ইস্যু (Bangladesh) নিয়ে যখন রাজনৈতিক চাপান-উতোর তুঙ্গে এই দেশে ঠিক তখন খোলাবাজারে চলছে আলুর অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। রাজ্য সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকছে না আলুর দরে। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন খুচরো বাজারে জ্যোতি আলু কেজি প্রতি ৪০ টাকা ও চন্দ্রমুখী কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা দরে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডলের বক্তব্য, "রাজ্য প্রশাসনের নজর দেওয়া দরকার।" রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে এই খবর শুনে বলেন, "খোঁজখবর নিচ্ছি।"
সারাবছর আলুর দর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নানা কর্মসূচি চলেছে, কিন্তু সাধারণ ক্রেতাদরে মূল্য বেশি দিয়েই আলু কিনতে হয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। আলু ভিন রাজ্যে রপ্তানি হবে কি হবে না তা নিয়ে বছরে বেশ কয়েকবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। প্রশাসন ও আলু ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃত্ব বৈঠক করে প্রথামাফিক, কিন্তু বাজারে আলু কিনতে গেলেই মাথায় হাত পড়ে ক্রেতাদের। নতুন আলু ওঠার সময় হয়ে এল, পুরনো আলু অঙ্কুর বেরিয়ে যাচ্ছে, তা সত্বেও আলুর দর জ্যোতি ৪০ টাকা, চন্দ্রমুখী ৪৫ টাকা!, সারাবছর গড়ে ৩৪-৩৫ টাকা কেজির নীচে কখনও আলুর দর কমেনি। যদিও রাজ্য সরকার নাকি সচেষ্ট আলুর দর নিয়ন্ত্রণে।
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি জগবন্ধু মণ্ডল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "আমরা ২ দিন ধর্মঘট ডেকেছিলাম। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে ধর্মঘট তুলে নিয়েছি। কিন্তু তা বলে খোলাবাজারে আলুর দর এতটা হওয়ার কথাই নয়। আমরা স্টোর গেটে ২৫-২৮ টাকায় বিক্রি করছি। সেই আলু কি করে ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করে। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিভিন্ন রাজ্যে আমরা আলু রপ্তানি করি। সেই রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা অসুবিধায় পড়েছি। কথা দিয়ে সেখানকার ব্যবসায়ীদের কাছে কথা রাখতে পারছি না। পেঁয়াজ, মাছ, ডিম আনছি, আমরা পাঠাব না তাদেরটা নেব। এটা কিরকম কথা! ওরা আমাদের ওপর নির্ভর করে আছে। রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকা আটকে যাবে।"
আরও পড়ুন- Mahua Moitra: মহুয়ায় চটে লাল তাঁরই এলাকার তৃণমূল বিধায়করা, মমতাকে চিঠি বিক্ষুব্ধদের
দেশে আলু উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে বাংলা। তার মধ্যে হুগলি ও বর্ধমানে ব্যাপক পরিমানে আলু উৎপাদন হয়। এবছর কত পরিমাণ আলু রাখা হয়েছিল, এখন কত পরিমাণ আলু রয়েছে হিমঘরে? জগবন্ধু মণ্ডল বলেন, "প্রায় ১২ কোটি ৫৫ লক্ষ প্যাকেট আলু কোল্ড স্টোরেজ সংরক্ষিত করা হয়েছিল। প্রতি প্যাকেটে আলু থাকে ৫০ কেজি। এখন হিমঘরে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ মেট্রিক টন রয়েছে। যা দিয়ে ডিসেম্বর মাস অনায়াসে চলে যাবে। তার ওপর নতুন আলু ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে বাজারে চলে আসবে।" তাঁর বক্তব্য, "২০২১ থেকে ২০২৩ অবধি আলুর ব্যবসায়ে সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। এখন সরকার কথা বলছে। সব জিনিস কিনতে পারছে আলু কম দামে খাবে, এটা কেমন কথা! সরকার আমাদের সঙ্গে সহমত হচ্ছে না।" পর্যবেক্ষক মহলের বক্তব্য, টাস্ক ফোর্স, বৈঠকের পর বৈঠক, রপ্তানি বন্ধ, সহমত হওয়া না হওয়া, যাই হোক সাধারণ ক্রেতাদের বেশি দাম দিয়েই আলু কিনতে হচ্ছে।