Advertisment

লাল দুর্গে ধুন্ধুমার, আশার আলো দেখছে CPIM, ফায়দার অঙ্কে চোখ TMC-র

বর্ধমানে দলের বিক্ষোভে ধুন্ধুমার কাণ্ডে অনেকটাই প্রচারে এসেছে সিপিএম।

author-image
Joyprakash Das
New Update
CPM is seeing a glimmer of hope in Burdwan rally, TMC is eyeing gains

দলের সাম্প্রতিক সভা সমাবেশের ভিড় চাঙ্গা করছে লাল-শিবিরকে।

রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সিপিএমের স্থানীয় স্তরের ছোট-বড় নেতা-কর্মী-সমর্থকরা দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। দু'চারজন শীর্ষ নেতাও রয়েছেন তালিকায়। রাজ্যে সিপিএমের রাস্তার পাশে গজিয়ে ওঠা পার্টি অফিসগুলোতে এখন তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা উড়ছে। ২০১১-এর পর থেকেই এই দৃশ্য দেখতে অভ্যস্ত রাজ্যবাসী। এরই মধ্যে গেরুয়া বাহিনী রাজ্যে প্রধান বিরোধী দলে পরিণত। লোকসভা-বিধানসভায় শূন্য সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে ৩১ অগাস্ট পূর্বতন লালদুর্গ বর্ধমানে সিপিএমের বিক্ষোভে ধুন্ধুমার কাণ্ডে অনেকটাই প্রচারে এসেছে। তবে কী বর্ধমান থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে বেড়াচ্ছে সিপিএম? একাধিক প্রশ্নের মাঝেও আশার আলো দেখছে বাম মহল।

Advertisment

'চোর ধরো জেল ভরো', স্লোগানে রাজ্যজুড়ে পথে নেমেছে সিপিএম। ৩১ অগাস্ট বর্ধমানে বিজয়তোরণের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বেধে যায় আন্দোলনকারীদের। পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানো, পুলিশকে মারধর, বিশ্ববাংলা লোগো-সহ নানা স্থানে ভাঙচুর, এমনকী কলা লুঠের ছবিও প্রকাশ্যে আসে। তবে সেদিনের বিক্ষোভে দীর্ঘ দিন পর বর্ধমানে ভিড় ভালো হয়েছিল বলেই প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত।

গত কয়েক বছর একসময়ের লালদুর্গে সিপিএমের তেমন মারকাটারি আন্দোলন নজরে আসেনি। রাজনৈতিক মহলের মতে, সেদিনের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস যে অভিযোগই করুক না কেন সিপিএম ওই লড়াইকেই হাতিয়ার করে দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে তৎপর। আভাস চৌধুরীর মতো দলের শীর্ষ নেতাকেও গ্রেফতার করতে ছাড়েনি পুলিশ।

বর্ধমানে সিপিএমের অগাস্টের শেষ দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি তাদের বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যে লড়াইকে সঙ্গী করে এরাজ্যে সিপিএমের উত্থান হয়েছিল তৃণমূল জমানায় তা প্রায় উধাও হয়ে গিয়েছিল। দিকে দিকে শয়ে শয়ে পার্টি অফিস হাতছাড়া হয়েছে, কর্মী-সমর্থকরা ঘাসফুল শিবিরে গিয়ে ভিড়েছে।

যে সংগঠনের জোরে টানা ৩৪ বছর বাংলায় রাজত্ব করেছিল সিপিএম তার কোমর ভেঙে খান খান হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি সিপিএমের একাধিক ছাত্র-যুব নেতৃত্ব পথে নামায় কিছুটা হলেও লড়াইয়ে ফিরেছে। তবে লড়াইয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখাই এখন প্রধান লক্ষ্য সিপিএমের।

আরও পড়ুন- সানমার্গ মামলা: পুরপ্রধানকে জালে পুরে এবার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে CBI হানা

এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতি, গরুপাচার-কয়লাপাচার কাণ্ডে সিবিআই ও ইডির তৎপরতাকে কাজে লাগাতে চাইছে সিপিএম তথা বামেরা। কিন্তু বর্ধমানের সেদিনের কর্মসূচি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। প্রথমত কলার দোকানে কেন ভিড়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তৃণমূল 'কলাচোর' বলতে শুরু করেছে সিপিএমকে।

কিন্তু সিপিএমের দাবি, ওই ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত আন্দোলনকারীরা কেউ যুক্ত ছিলেন না। দ্বিতীয়ত বর্ধমানের তৃণমূল বিধায়কের উদ্যোগে যেসব কর্মকাণ্ড হয়েছিল সেগুলিতেই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। তা বিধায়কের কার্যালয় হোক বা বিশ্ববাংলা গ্লোব ও টেলিফোন এক্সচেঞ্জের দেওয়ালে ভাঙচুরের ঘটনা। এই সব ঘটনা নিয়েই জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে।

আরও পড়ুন- অতর্কিতে হানায় পালানোর সুযোগই পেল না ‘খুনি’, তপন কান্দু খুনে CBI জালে আরও ১

রাজনৈতিক মহলের মতে, বর্ধমানের আন্দোলন নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ যাই হোক না কেন, পুলিশের লাঠিচার্জ বা কাঁদানের শেল ফাটানো বা পুলিশের সঙ্গে সিপিএমের খণ্ডযুদ্ধে চাঙ্গা হয়েছে বামেরা। তবে এ ঘটনাও ঠিক শাসকদল যত প্রচারই করুক না কেন পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ সরকারের বিপক্ষেই যায়। সুবিধা পায় আন্দোলনকারীরা। এক্ষেত্রে বিজেপি যে ভাবে প্রধান বিরোধী দল রয়েছে, কিছুটা রাজনৈতিক ব্যালান্সের তত্ত্বও খাড়া করছে অভিজ্ঞমহল। এই মহলের অভিমত, তাতে কিন্তু রাজনৈতিক ফায়দা তৃণমূল কংগ্রেসের।

tmc CPIM West Bengal East Burdwan
Advertisment